লিবিয়ায় অপহৃত ২ বাংলাদেশি উদ্ধার

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০১৬, ১১:৫৬ এএম
লিবিয়ায় অপহৃত ২ বাংলাদেশি উদ্ধার

সোনালীনিউজ ডেস্ক

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির উপশহর মিশরাতা থেকে অপহৃত দুই বাংলাদেশি শ্রমিককে উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। স্থানীয় সময় সোমবার তাদের উদ্ধার করা হয়।

এর আগে গত শুক্রবার রাতে মিশরাতা উপশহরের একটি বাজারের পাশ থেকে বাংলাদেশি শ্রমিক আসাদুজ্জামান রাসেল ও রিপনকে ধরে নিয়ে যায় স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। আসাদ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার পড়গাঁও গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে ও রিপনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে।

রিপন জানান, তাদের দুজনসহ ভারত ও শ্রীলঙ্কার মোট সাতজনকে অপহরণ করে মিশরাতা উপশহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়। অপহরণ হওয়ার পর বিষয়টি তাদের সহকর্মী শাহীন, তবারুলসহ কর্মপ্রতিষ্ঠান আল-মদিনা লিমিটেড স্থানীয় পুলিশকে জানায়।

রিপন আরও জানান, অপহরণের পর তাদের কাছ থেকে সন্ত্রাসীরা ১০ হাজার লিবীয় মুদ্রা মুক্তিপণ দাবি করে। পরের দিন পুলিশের তৎপরতার কারণে কারও সঙ্গে তাদের ফোনে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। সোমবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টার দিকে পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের দুজনসহ সাতজনকে উদ্ধার করে মিশরাতার ক্যারাং থানায় নিয়ে যায়। এ সময় অভিযান টের পেয়ে অপহৃতদের ঘরে বন্দি রেখেই  পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে খবর পেয়ে ক্যারায় থানায় গিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসে আল-মদিনা কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, লিবিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের রাস্তাঘাটে চলাচল সীমিত করা এবং রাতে বাইরে বের না হওয়াসহ সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে লিবিয়ার বেনগাজিতে তিনজন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার পর এ সতর্কতা জারি করা হয়। প্রথমে যদিও বাংলাদেশিরা লিবিয়ায় দুপক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে নিহত হয়েছেন বলা হলেও জারি করা সতর্কবার্তায় বোঝা যাচ্ছে অসাবধানতা তাদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ।

লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ফেসবুক পেইজে দেয়া এই সতর্কবার্তায় বেনগাজিতে নিহত বাংলাদেশীদের পরিচয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২৫ মার্চ বেনগাজি শহরের গোয়ারশা এলাকায় চারজন বিদেশি নাগরিক গুলিতে নিহত হন। তাদের মধ্য থেকে তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়া বাংলাদেশিরা হলেন রাজবাড়ীর মোসলেম বেপারি ছেলে আবদুর রহিম, পঞ্চগড়ের মো. সামছুল হকের ছেলে হুমায়ুন কবির ও যশোরের মোহাম্মদ হাসান।

বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, তারা রাতে গোয়ারশা এলাকা থেকে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে যাওয়ার সময় একটি মিলিটারি ক্যাম্প অতিক্রমকালে মিলিটারির সদস্যরা তাদের সন্দেহ করে থামতে বলেন। ওই সময় তারা নির্দেশ অমান্য করে পরিচয় প্রদর্শনের পরিবর্তে ভয় পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে মিলিটারির সদস্যরা তাদের প্রতিপক্ষের সহযোগী মনে করে গুলি চালায়। এতে তারা ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

বাংলাদেশ দূতাবাসের সতর্কবার্তায় বলা হয়, এ প্রেক্ষাপটে রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় কোনো চেকপয়েন্ট বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কোথাও থামতে বললে নিজের পরিচয়, পাসপোর্ট, মেডিকেল ফিটনেস কার্ড ও নিয়োগ কর্তার দেওয়া পরিচয়পত্র (বিতাকা) প্রদর্শন করা এবং কোনো অবস্থাতেই ভয় পেয়ে পালানোর চেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেয়া হল।

উল্লেখ্য, লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধের অস্থিতিশীলতায় স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বহিরাগত শ্রমিকদের প্রায়শই অপহরণ করে ও মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেয়। কিছুদিন আগে আরও ৩ বাংলাদেশি, ২ ভারতীয় এবং ৫ শ্রীলঙ্কান শ্রমিককে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে। পরে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে স্থানীয় দুই হাজার মুদ্রা করে নিয়ে ছেড়ে দেয়। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করলে মারধর ও নির্যাতন করা হয়।

সোনালীনিউজ/আমা

Link copied!