ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মচারীরা, পে-স্কেলের দাবিতে সয়লাব ফেসবুক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩, ০৪:১৮ পিএম
ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মচারীরা, পে-স্কেলের দাবিতে সয়লাব ফেসবুক

ঢাকা: সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন পে-স্কেল বা মহার্ঘ ভাতা প্রদানের কোনও পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নেই বলে গত মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সংসদে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।তার এমন বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা। 

দীর্ঘদিন ধরে নতুন পে-স্কেলের ন্যায্য দাবি জানানোর পর নির্বাচনের বছরে এসে অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে মেনে নিতে পারছেন না সরকারি কর্মচারীরা। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আবারও মাঠে নামতে পারেন তারা। 

আরও পড়ুন<<>>অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে হতাশ সরকারি কর্মচারীরা!

এদিকে সংসদে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরব হয়ে উঠেছেন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা। বিশেষ করে নিন্ম গ্রেডের (১১-২০) সাধারণ কর্মচারীরা তাদের দুঃখ-দুর্দশা এবং বৈষম্যের কথা তুলে ধরছেন যার যার ওয়ালে।

আরও পড়ুন<<>>ভোটের আগে সরব হচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা

নিচে ফেসবুক থেকে নেয়া কিছু পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলো-
জিসান রহমান জনি নামের একজন লিখেছেন, ১ম-২০তম গ্রেড যেন আকাশ পাতাল পার্থক্য, শোসনের চূড়ান্ত পর্যায়।
আগের রাজা জমিদারদের আমলের মতই সব নব্য রূপে চলছে, গণতন্ত্রের মুখোশে নব্য রাজতন্ত্র, পুঁজিবাদতন্ত্র আর শোসনতন্ত্র।

আর কতটা বঞ্চিত হলে অভাবে লজ্জিত হলে আমরা নিজের অধিকার আদায়ে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ করবো?!
কেউ না খেতে পেরে উগরে দিচ্ছে, আর কেউ অর্ধেক মাসেই পকেট ফাকা। 

তার এই পোস্টে মো. রফিকুল ইসলাম নামের একজন মন্তব্য করেছেন-স্বাধীন দেশে আমলারা স্বাধীন, ১১-২০ গ্রেড মানেই তো কামলা, আর সব সময় কামলারা নিসপেষিত হচ্ছে। আমাদের কোন রাজনৈতিক দলগুলোর দেশের কথা ভাবেনা, সবাই নিজেদের কথা চিন্ত করে। তাই তো মেঘা প্রকল্প পাশ করে, আর মেঘা বেগম পড়া তৈরি করে। পে-স্কেল দিলে কি বেহম পাড়ার উন্নয়ন হব? তাই পে-স্কেল নিয়ে অযথা সময় নষ্ট করতে নারাজ।

মেহেদী রেজু নামের একজনের মন্তব্য এমন- চূড়ান্ত আন্দোলনের বিকল্প নেই, আমাদের কেন্দ্রিয় সংগঠনের সংগঠকদের উচিত চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দিয়ে তা পূর্নভাবে বাস্তবায়ন করা।  

লিলি লিলি নামের একজন লিখেছেন- গ্যাসের দাম বাড়াইছেন, বিদ্যুতের দাম বাড়াইছেন, প্রতিবছর পানির দাম বাড়িয়ে তাকসিম খান আমেরিকায় ১৪ বাড়ীর মালিক। তেল, চিনির দাম বাড়িয়ে এস আলম মাসুদ  সিংগাপুরে ৫০ হাজার কোটি  টাকা লুপাট। দ্রব্য মূল্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ, কিন্তু প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতনতো বাড়েনি ১ টাকাও! বলুন কর্মচারী বাঁচবে কিভাবে? মাফিয়া শেয়ার বাজার ধংশের মুলহোতা অর্থ মন্ত্রী লোটাস কামাল নাকি পে/মহর্তাভাতা দেওয়ার টাকা বা সময় তার নাই। লুটপাটের সময় টাকা কোথায় থেকে আসে?

বৈষম্য তুলে ধরে আবদুল্লাহ ফটিক নামের একজন লিখেছেন- সরকারি কর্মচারী একজন এর মূল বেতন ৭৮০০০+  আরেকজনের ৮২৫০+, এটা কি বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ??
বঙ্গবন্ধু বৈষম্য দূর করার পক্ষে ছিলেন, শোষিত দের পক্ষে ছিলেন, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ৪র্থ শ্রেণি (বর্তমান ২০ গ্রেড বা ৮২৫০+ মূল বেতন ওয়ালা) এর পক্ষে আন্দোলন করেছেন, আর আজ চোরেরা সর্বোচ্চ আর সর্বনিম্ন মূল বেতন এর পার্থক্যই ৭০ হাজার বানিয়ে বৈষম্য এর অসাধারণ উদাহরণ তৈরি করে রেখেছে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে! ভাবা যায়? সবকিছুরই হিসাব দিতে হবে একদিন ইনশাআল্লাহ।

রোসেল খবির নামের একজন লিখেছেন-চাইলাম পে-স্কেল, টাইমস্কেল; দিলেন ১২% সুদের বোঝা! ছি ছি ছি.... 
১১-২০ গ্রেডের হতভাগা ৯৫% কর্মচারী কনজুমার লোন নিয়েছে। এই লোন নিয়ে কেউ মেয়ের বিয়ের গহনা কিনেছে, কেউ ছেলে মেয়ের সেশন ফি - সেমিস্টার ফি দিয়েছে, কেউ জটিল রোগের চিকিৎসা করিয়েছে, কেউ ঘরের চালে টিন দিয়েছে, কেউ ২/১ শতক জমি কিনেছে, কেউ মুদি দোকানের দেনা শোধ করেছে।


আর সেই লোনের কিস্তি হিসেবের বেতনের সিংহভাগ কেটে নিয়ে মোচে তা দিয়ে বছর বছর লভ্যাংশের বাড় বাড়তি গুনছে আধুনিক মহাজন। কিস্তি কেটে নেয়ার পর কেউ পাচ্ছে ১২ হাজার কেউ পাচ্ছে ১৫ হাজার! এই টাকায় চাল, ডাল, লবন, তেল ক্রয় করা যায়?নিদারুণ নিগ্রহের শিকার এই হতভাগারা কিভাবে আপনাদের বাড়তি সুদের দায় বহন করবে?

আব্দুল আহাদ নামের একজন লিখেছেন-সরকারী কর্মচারীরা আজ তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে, সকালবেলা বিদ্যুৎ বিল বাড়ে, দুপুরবেলায় তেলের দাম বাড়ে, বিকালবেলায় বাড়ে নিত্য পর্ন্যের দাম, অথচ বেতন বাড়ছেনা, কেহ গরিব মানুষের কথা চিন্তা ও করছেনা, গরিবের পক্ষে কথা বলারমত কেহ নেই, আমাদে পার্থক্য শূধু আমরা কর্মচারী, তাই আমাদের বলার কেহ নেই। কতটা ধোকা খেয়েছি ২০১৫ সালের পেস্কেলে যেমন ৭৮০০০/- ৮২৫০/-।

এধরণের আরও শত শত পোস্টে ভরে আছে সরকারি কর্মচারীদের ফেসবুক পেজ।

সোনালীনিউজ/আইএ

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Link copied!