৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ে ছাত্রলীগ নেতা!

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০১৬, ১১:১৫ এএম
৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ে ছাত্রলীগ নেতা!

রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের নেতা রায়হান আহমেদ রিমেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছিনতাইয়ের কথা স্বীকারও করেছে রিমেল।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, একজন ব্যবসায়ীর ৩৪ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনতাই হয়েছে। এ ঘটনায় রায়হান আহমেদ রিমেল নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করা হয়েছে। তবে ছিনতাইয়ের ঘটনায় এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। আর এ কারণে রিমেলকে আদালতে হাজির করা হয়নি।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাত ৮টায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের জনপদ মোড় এলাকায় ফেনী থেকে আসা দুই যুবকের কাছ থেকে ৩৪ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। ওই টাকার মালিক ব্যবসায়ী সাদেক হোসেন সোহেল। তিনি ফেনী থেকে ওই দুই যুবককে দিয়ে ঢাকায় টাকা পাঠিয়েছিলেন। ছিনতাই করা টাকা হুন্ডি ব্যবসার। সে কারণে এ সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

তবে টাকার মালিকের স্বজনরা জানিয়েছে, গত রোববার (১২ জুন) রাত ৮টায় এই টাকা ছিনতাই হয়। ছিনতাইয়ের ঘটনাটি প্রথম জানানো হয় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানা যুবলীগের এক শীর্ষ নেতার কাছে। তার কাছে বলা হয় যে, যাত্রাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মোফাসসির ও আরও ২/৩ জন ছাত্রলীগ নেতা দুই যুবকের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে কুমিল্লার ওই যুবলীগ নেতা যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় কয়েক দফা বৈঠকও হয়। এরপর মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে যাত্রাবাড়ী থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের নেতা রায়হান আহমেদ রিমেল ও যাত্রাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকতে আটক করে পুলিশ। 

এদিকে ছাত্রলীগ নেতাদের এই টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে ডিএমপির এক কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার শীর্ষ নেতারা যাত্রাবাড়ী থানায় উপস্থিত হয়ে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তারা থানা থেকে যাত্রাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মোফাসসির রহমান ও সাধারণ সম্পাদককে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে সমর্থ হন।

তবে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ দাবি করেন, যাত্রাবাড়ীর ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতা নেই। এমনকি পুলিশের হাতে আটক রিমেল ছাত্রলীগের কোনো নেতা বা কর্মী নয়।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার সৈয়দ নূরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের কাছে রিমেল টাকা ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছেন। তবে এ ছিনতাইয়ের নেতৃত্ব দেয় তার আরও তিন সহকর্মী। ওই তিনজনকেও খোঁজা হচ্ছে। 

ডিসি আরও বলেন, ব্যবসায়িক কারণে ৩৪ লাখ ২০ হাজার এক ব্যক্তির কাছে দেয়ার কথা ছিল। যাদের কাছে টাকা দেয়ার কথা ছিল, তাদেরই একটি গ্রুপ এই টাকা ছিনতাইয়ে ইন্ধন যুগিয়েছে। তবে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী পুলিশকে জানিয়েছেন, তার টাকা উদ্ধার করে দিলে তিনি এ নিয়ে মামলা করবেন না। তাই আমরা আগে টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছি। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Link copied!