লন্ডনে গুরুত্বপূর্ণ দুই সিদ্ধান্তে একমত খালেদা জিয়া-তারেক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০১৭, ০২:৩৯ পিএম
লন্ডনে গুরুত্বপূর্ণ দুই সিদ্ধান্তে একমত খালেদা জিয়া-তারেক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান

ঢাকা : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর ব্যক্তিগত হলেও তা এখন রাজনৈতিক সফরে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, দলের সর্বোচ্চ শীর্ষ পর্যায়ের দুই নেতার প্রাথমিক বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ দুটি রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিষয় দুটির প্রথমটি নতুন করে সরকারবিরোধী আন্দোলন এবং দ্বিতীয়টি আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ। লন্ডনে দলের দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক সংশ্লিষ্ট একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র গত বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে। ওই সূত্র জানায়, প্রাথমিক বৈঠকে নানা বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হলেও সরকারবিরোধী আন্দোলন ও জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে দুই নেতা একমত হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লন্ডন বিএনপির একজন নেতা জানান, বাংলাদেশে আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এটাই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শেষ লন্ডন সফর। তাই নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয়ে এই সফরেই দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে শুরু করেছেন বিএনপি প্রধান। প্রাথমিক বৈঠকে প্রথমদিনে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও জাতীয় নির্বাচন ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির শূন্য পদ পূরণ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে রদ-বদল ও  গুরুত্বপূর্ণ জেলা কমিটি গঠনের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। লন্ডনে দুই নেতার বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম একজন সদস্য এবং দলের প্রভাবশালী একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও লন্ডন বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৫ জুলাই লন্ডন সফরে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলের পক্ষ থেকে সেখানে তার পায়ের ও চোখের চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই খালেদা জিয়ার পায়ের সমস্যা বেড়েছে। আর এর আগে তিনি লন্ডনে চোখের অপারেশন করিয়েছিলেন। চিকিৎসার পাশাপাশি সেখানে থাকা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন করে খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন বলে জানানো  হয়েছে।

যদিও তার দেশে ফেরার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ  নেতারা। তারা মনে করছেন, দুর্নীতির মামলায় সাজা হওয়ার ভয়ে খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন না। এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খালেদা জিয়া এবার লন্ডনে ৪২ দিন থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশে না ফেরা পর্যন্ত তিনি তারেক রহমানের বাসায়ই থাকবেন। বেগম জিয়া মূলত তার চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন। প্রথমে চিকিৎসা করাবেন। এরপর কিছুদিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিশ্রামে থাকবেন।

অন্যদিকে, খালেদা জিয়া যদি ৪২ দিন সেখানে থাকেন, তাহলে এটিই হবে তার সবচেয়ে দীর্ঘ বিদেশ সফর। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমি জানি না তিনি ঠিক কতোদিন থাকবেন। ৪২ দিন থাকার কোন কথা তিনি আমাদের জানাননি। আর লন্ডনের কে কি জানিয়েছেন তা আমরা জানি না। তিনি বলেন, আর যদি এতোদিনও থাকেন, তবে এটিই তার দীর্ঘদিনের বিদেশ সফর কিনা তার কোন সঠিক রেকর্ড আমাদের জানা নেই।

রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, দলের চেয়ারপারসন কোনো রাজনৈতিক সফরে যাননি। নিছক নিজের চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন। এর মধ্যে অন্য কিছু নেই। সেখানে কতোদিন থাকবেন তা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিক হবে। এ জন্য যতোদিন প্রয়োজন ততোদিন তিনি লন্ডনে অবস্থান করবেন। রিজভী বলেন, বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া এর আগেও বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছেন। সৌদি আরবে ওমরাহ কিংবা চীনে। তখন বড়জোর ১ সপ্তাহ বা ১০ দিনের বেশি ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া সর্বশেষ লন্ডন সফর করেছিলেন। সেবারও তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়ে প্রায় দেড় মাসের মতো সেখানে ছিলেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Link copied!