পান্থপথে নিহত ‘জঙ্গি’ ৪ দিন আগে চাকরির জন্য ঢাকায় আসে

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০১৭, ১১:৫৭ এএম
পান্থপথে নিহত ‘জঙ্গি’ ৪ দিন আগে চাকরির জন্য ঢাকায় আসে

ফাইল ছবি

ঢাকা: রাজধানীর পান্থপথে হোটেল ওলিও’তে ‘অপারেশন আগস্ট বাইট’- এ নিহত ‘জঙ্গি’ সাইফুল ইসলাম চাকরির জন্য মাত্র ৪ দিন আগে ঢাকা এসেছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।  

সাইফুলের পরিবারের বরাত দিয়ে শেষের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকগুলো এ খবর দিয়েছে, শুক্রবারে ঢাকা আসার জন্য বাড়ি থেকে রওনা দেয় সে।

সাইফুলের বোন সাদিয়া খাতুন জানান, অভাবের সংসারে ভাইসহ দু’বোনের পড়াশোনার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতেন তার বাবা। এ জন্য বেশ কিছুদিন যাবত চাকুরি খুঁজছিলেন তার ভাই। খুলনার নেভি কলোনীর একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করত সাইফুল। গেল শুক্রবার সে বাড়িতে যায়। সেসময় সে জানায়-চাকুরি খোঁজার জন্য সে ঢাকায় যাবে। এই কথা বলে ওইদিনই সে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।

তিনি জানান, তারা জানত না যে তার ভাই জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ বাড়িতে গিয়ে তার পিতাকে আটক করে থানায় নিয়ে গেলে তবেই পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারে যে সাইফুল ঢাকায় নিহত হয়েছে।

রোববারও সাইফুল মোবাইল ফোনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে দাবি করেন সাদিয়া। সোমবার বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল তার।

পরিবার শুক্রবারের কথা বললেও ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিল হোসেন জানান, ৮ দিন আগে চাকরির কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় সে।

এ দিকে পুলিশের দাবি, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শোক মিছিলে হামলার পরিকল্পনা ছিল সাইফুলের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সে পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাঠি গ্রামে সাইফুল ইসলামের বাড়ি। বাবার নাম আবুল খায়ের মোল্লা। তাকে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

সাইফুলের বাবা নোয়াকাটি গ্রামে মাঠের হাট মসজিদের ইমাম। সাইফুলের মা বাক্প্রতিবন্ধী। আবুল খায়েরের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সাইফুল সবার বড়। পাইকগাছার একটি মাদ্রাসা থেকে হাফিজি পাস করেন সাইফুল। ডুমুরিয়ার উলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল (এসএসসি’র সমমান) পাস করার পর খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন। খুলনার বিএল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। পড়াশোনার জন্য খুলনার একটি মেসে থাকতেন।

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল পরীক্ষার সাইফুলের রেজিস্ট্রেশন কার্ডে তার জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৯৬ সালের ১৩ অক্টোবর। সে হিসাবে তার বয়স প্রায় ২১ বছর।

নোয়াকাটি গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়ি এলে মানুষের সঙ্গে খুব কম মিশতেন সাইফুল। কারও সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। ঘরে একাই থাকতেন তিনি। আচরণে বেশ ভদ্র ও নম্র ছিলেন। কিন্তু তিনি ছাত্রশিবির করতেন কি না—এ ব্যাপারে কোনো তথ্য এলাকাবাসীর কাছ নেই।

এর আগে সোমবার দিনগত রাত ৩টার দিকে ‘জঙ্গিদের’ অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর ওই হোটেলটির চার পাশ ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মঙ্গলবার পৌনে ১০টার দিকে হোটেলটিতে ‘অপারেশন আগস্ট বাইট’ পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে তারা জানায়, হোটেলটির ৩০১ নম্বর কক্ষে নিহত ‘জঙ্গি’ আত্মঘাতী হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Link copied!