চাকরিপ্রত্যাশী এনে দেয়াই চাকরি!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০১৯, ০৯:৪৯ পিএম
চাকরিপ্রত্যাশী এনে দেয়াই চাকরি!

ঢাকা: চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে এক্সিলেন্ট ট্রেড মার্কেটিং লিমিটিড নামে একটি কোম্পানির অফিসে অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন- আশরাফুল ইসলাম (২৭), আল আমিন মণ্ডল রতন (৩০), উজ্জল হোসেন (২৩), শিমুল মোল্লা (১৯), জহিরুল ইসলাম ওরফে পাপ্পু মিয়া (২০), আব্দুল মোমিন (২৪), শাহীন আলম (২৪), নুর আলম সিদ্দিকী (২৫), মাজেদুল ইসলাম (২৫), ইমরুল হাসান (২৩), মনিরুজ্জামান (২৪), রিঙ্কু কুমার দাস (৩০) ও অভিজিত পান্ডে (২৪)।

ভুক্তভোগী কয়েকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বারিধারার ভাটারা নতুন বাজার এলাকার প্রাইম অর্কেড বিল্ডিংয়ের পঞ্চম তলা থেকে বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছে কোম্পানির প্যাডে ১১৫টি অঙ্গীকারনামা, কোম্পানির নামে পূরণ করা ৪২টি আবেদনপত্র, এগ্রিমেন্ট ফরম ও পূরণকৃত ৩০টি ট্রেডিং কার্ড পাওয়া যায়।

সিআইডি বলছে, চাকরি প্রত্যাশীদের ফাঁদে ফেলে অফিসে এনে দেয়াই প্রতারকচক্রের একরকম চাকরি। চক্রটি চাকরি দেবার কথা বলে তরুণদের ফাঁদে ফেলে। এরপর মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। চাকরি না দিয়ে এমএলএম পদ্ধতিতে অন্য (ক্লায়েন্ট) চাকরিপ্রত্যাশী এনে দিলে টাকা ফেরতের আশ্বাস মেলে। চাকরির প্রার্থী জোগাড় করার বিনিময়ে সামান্য কমিশন পেত ভুক্তভোগীরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. এনামুল কবির বলেন, এই চক্রের সদস্যরা এমএলএম পদ্ধতির মতোই কাজ করত। চাকরিপ্রার্থী এনে দিলে কমিশন পেত চক্রের সদস্যরা। চাকরি প্রত্যাশীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত তারা।

তিনি বলেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার দায়ে গত অক্টোবরে গাজীপুরে লাইফওয়ে নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ১৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর ভাটারা হতে এই ১৩ প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হলো।

এনামুল কবির বলেন, প্রতারকচক্রের সদস্যরা বেকার ছেলে-মেয়েদের চাকরি দেয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। চাহিদা মতো টাকা নিয়ে পরবর্তীতে নানা টালবাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে এমএলএম পদ্ধতির মতো চাকরিপ্রার্থী যোগার করতে বলে এবং তাদের ফাঁদে ফেলে। চাকরির প্রার্থী জোগাড় করার বিনিময়ে সামান্য কিছু কমিশন পেত ভুক্তভোগীরা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, একজন চাকরিপ্রার্থী এলে তার মাধ্যমে আরেকজন সদস্য সংগ্রহ করা হতো। চাকরিপ্রার্থী আনলে তার কাছ থেকে এককালীন টাকা নিত। এভাবে চক্রটি বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, কারও কাছ থেকে ৩০ হাজার, কারো কাছে ৪৫ হাজার, কারো কাছে ৮০ হাজার আবার কারো কাছ থেকে এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। এভাবে ১৩০ জনের কাছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

তিনি বলেন, এর পেছনে আরও কোনো চক্র জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ১৮ জনের নামে মামলা হলেও বাকিদের গ্রেপ্তাতরের চেষ্টা অব্যাহত। এই চক্রের মূল হোতাকে শনাক্ত করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Link copied!