বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০১৬, ১১:০২ পিএম
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু

নিসা জান্নাত

নতুন বছরের লাল সূর্যটা হেলে পড়েছে পশ্চিমের আকাশে, প্রকৃতিতে তখন সন্ধ্যা। শিল্পকলার আকাশে উড়ছে হাজারো বেলুন। তারই সঙ্গে লাল, নীল, সবুজসহ নানা রঙের ঝলমলে আলোয় রঙিন হচ্ছে আকাশ। আতশবাজির সঙ্গে নন্দনমঞ্চের পানির ফোয়ারাগুলো থেকে ছুটে আসা জলের শব্দ সৃষ্টি করলো অন্যরকম এক দ্যোতনা। আর এসবের মধ্যে ৬৪ জেলার প্রতীকী আলোক প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হলো বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৬-এর।
 
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ উৎসবের উদ্বোধন করলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। 
 
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন একাডেমির সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক সোহরাব উদ্দীন।

১৬ দিনের এ উৎসবে নানা আয়োজনের মধ্য থাকছে- বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিশুদল ও বড়দের পরিবেশনায় সমবেত সঙ্গীত, সমবেত নৃত্য, একক সঙ্গীত, আবৃত্তি, অভিনয় ও জেলার বৈশিষ্টপূর্ণ পরিবেশনা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আমরা সংস্কৃতি চর্চাকে তৃণমূলে নিয়ে যেতে চাই। আবার তৃণমূলের প্রতিভাকে কেন্দ্রে এনে সেটা সারাদেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে চাই। কাজটি অনেক কঠিন, আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতাও আছে। কিন্তু বাংলাদেশের সংস্কৃতিবান্ধব মানুষ পাশে থাকলে এটা অবশ্যই সম্ভব।

তিনি আরো বলেন, ‘সাড়ে সাত কোটি বাঙালি যখন আমরা ছিলাম, তখন সংস্কৃতি চর্চা ছিল আমাদের হাতিয়ার। এখন সুযোগ-সুবিধা অনেক বেড়েছে। কিন্তু সে হিসেবে আমাদের সংস্কৃতি চর্চা বাড়েনি। এটা আমাদের আত্মসমালোচনা।’

সৈয়দ শামসুল হক বলেন, ‘নতুন বছরটি সকলের জন্য কল্যাণের হোক। এখানে এসে পুরোনো একটি বিষয় আবিষ্কার করলাম, আমাদের মুক্তিযুদ্ধজাত বাংলাদেশ সৃজনশীল এবং এটাই সত্য। রাজনীতি ও অর্থনীতি যদি রাষ্ট্রের শরীর হয়, তাহলে সংস্কৃতি তার মুখ। সেই মুখটি আমরা খুঁজে পাই বিশাল বাংলার মাঝে। এ বিশাল বাংলার মাঝে আমাদের শেকড় লুকিয়ে আছে। এর ভেতর থেকে যে রস আছে, তা শহর গ্রহণ করে তাহলে সংস্কৃতির উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।’
 
লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ‘এটি শুধু উৎসব নয়, আন্দোলনও বটে। আমরা ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলে শিল্প-সংস্কৃতির আলো পৌঁছে দিতে চায়।’
 
আয়োজনের শুরুতেই ছিল শতশিল্পীর অংশগ্রহণে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন। অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন অনুষ্ঠানের সভাপতি লিয়াকত আলী লাকী। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে দীপা খন্দকার, এম আর ওয়াসেক ও আইরীন পারভীনের পরিচালনায় এবং বাংলাদেশ ফাইন আর্টসের পরিবেশনায় উদ্বোধনী সমবেত নৃত্য পরিবেশিত হয়। নৃত্যের তালে তালে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশের ষড়ঋতুকে। এরপর ছিল পর্যায়ক্রমে জয়পুরহাট, সিলেট, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ জেলার ঐতিহ্যবাহী পরিবেশনা। আগামীকাল একই মঞ্চে হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, ফরিদপুর ও রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনা থাকছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Link copied!