মেয়র কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিব্রত

ভোটের মাঠে ব্যাকআপ জাপা

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২০, ০২:১৬ পিএম
ভোটের মাঠে ব্যাকআপ জাপা

ঢাকা : আমি বিব্রতকর অবস্থায়। চেয়ারম্যাম কাল (আজ) আসবেন। মঙ্গলবার পার্টির মিটিং। সেখান থেকে  সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নামব। দল থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না। নেতারাও সাথে-পাশে থাকে না। দলকে শুধু দিয়েই গেলাম। ভাই আসলে আমি খুব বিব্রতকর অবস্থায়।

সাফ সাফ এমনটি বলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হাজি সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন। তিনি সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী।

এদিকে পার্টি মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীদের বেশিরভাগ প্রত্যাহার করেছেন। বাকিরা আছেন মেয়র প্রার্থী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলনের মতো পরিস্থিতির মধ্যে। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন এস এম দেলোয়ার হোসেন। তিনি ঢাকা দক্ষিণের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন।
দেলোয়ার হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের পার্টির মনোনয়ন নিয়ে কী বলব। খাতায় নাম লিখে, একটা ফরম দেওয়া হলো। বলা হলো পার্টি থেকে কোনো সহযোগিতা দেওয়া হবে না। নিজের জনবল নিয়ে কেন্দ্রে থাকতে পারলে ভোট করবেন। ওই যে ফরমটা দিল তাতেই শেষ। কোনো সাক্ষাৎকার নাই, কোনো কমিটি নাই। তাহলে ভোটের দিন আমার সঙ্গে থাকবে কে? আর ফলাফলটাইবা কী হবে?

এস এম দেলোয়ার হোসেন আরো জানান, তারপরও মনোনয়ন দাখিল করা হলো। ৩১ ডিসেম্বর মনোনয়ন দাখিলের পরপরই নির্দেশনা ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের।  

৯ জানুয়ারি বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল। বিকাল ৪টায় বলা হলো প্রার্থিতা বহাল রাখতে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ প্রার্থী মাঠ থেকে উঠে গেছেন। যারা মাঠে আছেন তারা জানেন কেন আছেন। মানে নির্বাচনের মাঠে ব্যাকআপ হিসেবে থাকার জন্য থাকা। দুই সিটিতে দুজন প্রার্থী দিয়েছিল জাতীয় পার্টি। কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছিল বেশ কিছু।

তবে সংখ্যায় কত তার কোনো সঠিক হিসাব নেই দলটির কাছে। দলের একাধিক নেতার তথ্যমতে, উত্তরের মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাতিল হয়েছে। দক্ষিণেরটা টিকে গেছে। কাউন্সিলরদের কোনো তালিকা নেই।

এ বিষয়ে পার্টির যুগ্ম মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তথ্যটি আমিও জানি না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম মেম্বার বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে নিষ্কণ্টক করতে জাপার প্রার্থী মিলনকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল।

৯ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগের রাত গত ৮ জানুয়ারি কাজী ফিরোজ রশিদের ধানমন্ডির বাসভবনে বৈঠকে বসেছিলেন জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

ওই বৈঠকে ছিলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপসের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, জাপার মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, কাজী ফিরোজ রশিদ, ওই সিটির দুই প্রার্থী ফজলে নূর তাপস ও সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন। সমঝোতা হয় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের। কিন্তু এই মধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে নির্দেশনা আসে প্রত্যাহার না করে বহাল রাখার।

কেন এমন সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে বৈঠকে জানানো হয়, গত নির্বাচনের মতো এবারো নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে বিএনপি মাঠ থেকে সরে যেতে পারে। বিভিন্ন সংস্থার কাছে এমন তথ্য আছে। সে শঙ্কা থেকেই জাতীয় পার্টিকে ভোটের লড়াইয়ে রাখার কথা জানানো হয়। বিশেষ করে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে।

রোববার (১২ জানুয়ারি) দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী মিলন বলেন, সোমবার পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ঢাকায় আসবেন। পরদিন মিটিং। এরপর প্রচারে নামবেন তিনি।

অপরাপর প্রার্থীরা আগেই মাঠে, আপনি পরে কেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি নির্বাচন করতেই চাইনি। তারপরও একবার প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আবার থাকার সিদ্ধান্ত। আছি কিন্তু দলের তরফ থেকে কোনো সহযোগিতা করা হচ্ছে না। পার্টির নেতারাও সহযোগিতা করছেন না। আমি বিব্রতকর অবস্থায় আছি।

পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি, আবু হোসেন বাবলা এমপিসহ দক্ষিণের নেতারা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ফজলে নূর তাপসের পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করছেন মিলনের সমর্থকরা। মতিঝিলে কাজী ফিরোজ রশিদের কনকর্ড টাওয়ারে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্প করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান মিলনের সমর্থকরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Link copied!