হুমকির মুখে পড়বে ১৪ কোটি মানুষের জীবন

ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০১৬, ০১:০৪ পিএম
ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

বড় ধরণের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। এই ভূমিকম্প আঘাত হানলে এতে ১৪ কোটি মানুষের জীবন হুমকির মুখে মুখে পড়বে। এমনটাই জানা গেছে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের একদল গবেষকের গবেষণা প্রবন্ধ ‘নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে’ প্রকাশিত হওয়ার পর।

যে ভূগাঠনিক অবস্থানে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে ওই গবেষকরা সতর্ক করছেন। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রয়টার্স লিখেছে, এখনই বাংলাদেশ বড় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠবে এমন কথা বলা না গেলেও দুটি গতিশীল ভূগাঠনিক প্লেট পরস্পরের ওপর চেপে বসতে থাকায় সেখানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের শক্তি জমা হচ্ছে।

ভারতের পূর্ব অংশ ও বাংলাদেশের যে অঞ্চল সম্ভাব্য সেই ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, তার ১০০ কিলোমিটার ব্যাসের মধ্যে প্রায় ১৪ কোটি মানুষের বসবাস। যে ভূগাঠনিক অবস্থানে বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে গবেষকরা সতর্ক করছেন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, এ ভূমিকম্পে বাংলাদেশের চারদিকে ছড়িয়ে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, ভারী শিল্প, বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। 

গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্বাবিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর ব-দ্বীপের ১২ মাইল (১৯ কিলোমিটার) গভীরে থাকা জেলাটিনের মতো (এক ধরনের স্বাদহীন জেলি) কাদামাটি অনেক স্থানের ভবন, সড়ক ও মানুষ গিলে নিতে পারে। অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার রয়টার্সকে বলেন, তেমন মাত্রার ভূমিকম্প সত্যিই হলে তার ক্ষয়ক্ষতি এতটাই ভয়াবহ হতে পারে যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা হয়তো বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে যে ফল্ট লাইনের ভূমিকম্পে সৃষ্ট সুনামিতে ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল, সেই একই ফল্ট লাইনে নতুন এই ভূমিকম্পের আশঙ্কা দেখছেন বিজ্ঞানীরা। ১০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করতে গবেষকেরা কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করেছেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তারা দেখেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের পূর্ব অংশের ভূগাঠনিক প্লেট উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়ে মিয়ানমারের ভূগাঠনিক প্লেটে চাপ সৃষ্টি করছে। অর্থাৎ, বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল এবং পূর্ব ভারতের তলদেশের প্লেটগুলো উত্তরপূর্বে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের দিকে সরে যাচ্ছে।

যার কারণে ভূপৃষ্ঠের নিচে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গবেষণায় বলা হয়, সম্ভাব্য এই ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে ২৪ হাজার বর্গমাইল (৬২ হাজার বর্গকিলোমিটার) এলাকা। গবেষক দলের প্রধান নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ মাইকেল স্টেকলার বলেন, ওই ধরনের ভূমিকম্প কবে ঘটতে পারে, সে পূর্বাভাস আরও গবেষণা না করে দেওয়া সম্ভব নয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম

Link copied!