মরাভোলা নদী এখন মাদক পাচারের নতুন রুট

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৮, ০১:১৯ পিএম
মরাভোলা নদী এখন মাদক পাচারের নতুন রুট

ঢাকা : মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান আঁচ করতে পেরে পাচারকারী চক্র এখন নতুন নতুন রুটের সন্ধানে রয়েছে। সাগরপথকে ব্যবহার করে মাদক পাচারের নতুন ট্রানজিট পয়েন্ট এখন মোংলা থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরের মরাভোলা নদী।

কোস্টগার্ড বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সাগরে মাদক চক্রের চাঁইদের পাকড়াও করার জন্য চট্টগ্রাম জোনের সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ এবং মোংলা জোনের মরাভোলা নদীসহ উপকূলীয় আশপাশের বেশ কিছু এলাকায় বড় আকারের অভিযান চালিয়ে সুফল পাওয়া গেছে। শুধু গত জানুয়ারি মাসে সাগরে ৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার ইয়াবাসহ ১৪৭ কোটি টাকার মদ, গাঁজাসহ বিভিন্ন অবৈধ পণ্য আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকার ইয়াবা রয়েছে। ইয়াবা পাচারের নতুন রুট থেকে এত বিপুল পরিমাণ ইয়াবা আগে কখনো আটক করা সম্ভব হয়নি।

কোস্টগার্ড বাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, অবৈধ পণ্যের আড়ালে ইয়াবা পাচারই ছিল অপরাধীদের মূল লক্ষ্য। সাগরপথে মাদক পাচারের নতুন যে রুট অপরাধীরা ব্যবহার করতে চেয়েছিল, অভিযানের কারণে তারা ব্যর্থ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

কোস্টগার্ড কমান্ডার আবু সাইদ জানান, একসময় টেকনাফের নাফ নদী দিয়ে কোটি কোটি টাকার ভয়ঙ্কর ইয়াবা অনায়াসে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচার হয়ে আসত। মিয়ানমার থেকে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা দিয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ছিল মাদক পাচারকারীদের প্রথম দলটির সীমানা। তারপর মাদকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চালান ছড়িয়ে দেয়া হতো বিভিন্ন জেলায়। কিন্তু নাফ নদী এবং এর আশপাশের এলাকা এখন কড়া নজরদারির মধ্যে থাকার কারণে মাদক চক্রের চাঁইরা তাদের রুট পরিবর্তন করেছে। ফলে বর্তমানে নাফ নদী ব্যবহার করে মাদক পাচারের ঘটনা অনেক কমে এসেছে। আর মাদক কারবারে জড়িত অপরাধীরা তাদের কারবার নিরাপদ রাখতে ব্যবহার করতে শুরু করেছে নতুন নতুন রুট।

অভিযান প্রসঙ্গে কোস্টগার্ড কমান্ডার আরো জানান, রাতের গভীরে অপরাধীরা মাদকের চালান নিয়ে আসে মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরের মরাভোলা নদীর কাছাকাছি কোনো ট্রানজিট পয়েন্টে। সাগরে প্রহরারত কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা গোপনে তাদের অনুসরণ করতে গিয়ে সন্ধান পায় মাদক চক্রের হোতাদের নতুন রুটের। মাদক পাচারকারীরা রাতের বেলায় তাদের শক্তিশালী ইঞ্জিনের নৌকা নিয়ে যাতে পালাতে না পারে সেজন্য কোস্টগার্ড বাহিনী তাদের অভিযানে রাডার প্রযুক্তিসম্পন্ন অতি দ্রুতগতির ডিফেন্ডার বোট ব্যবহার করে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Link copied!