বিপিএলে তিন ওয়াইড ঘিরে সন্দেহজনক লেনদেন, হচ্ছেটা কী?

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ১২:০৭ পিএম
বিপিএলে তিন ওয়াইড ঘিরে সন্দেহজনক লেনদেন, হচ্ছেটা কী?

ঢাকা: ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে বিপিএল এখন চট্টগ্রামে। মাঠের খেলা জমজমাট হয়েছে, সন্দেহ নেই। টি-টোয়েন্টির প্রাণই হলো রান। এবার বেশির ভাগ ম্যাচেই দুই শর কাছাকাছি রান হচ্ছে, দুই শর বেশি রান উঠেছে আট ইনিংসে। 

বড় লক্ষ্য তাড়া করে জেতার ম্যাচও হচ্ছে। অনেক ম্যাচেই লড়াই হয়েছে শেষ পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত বিপিএল সেঞ্চুরিও দেখে ফেলেছে ৫টি। গ্যালারিতে দর্শক থাকছেন। টিকিট নিয়ে শুরুর দিকে যে বিশৃঙ্খলা ছিল, সেটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

তার মানে কি বিপিএলকে এখন পর্যন্ত সফল বলা যায়? না সেটি বলার উপায় কই। এর চেয়ে বড় ঝামেলা যে অপেক্ষা করছে। বিশেষ করে বিপিএলে সন্দেহজনক লেনদেনের আভাস পাওয়া গেছে। 

গত ৭ জানুয়ারি ঢাকা ক্যাপিটালস বনাম রংপুর রাইডার্সের ম্যাচে আলাউদ্দিন বাবুর করা টানা ৩টি ওয়াইড বলকে ঘিরে বাজির ওয়েবসাইটগুলোতে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে, এমনটাই একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছেন বিখ্যাত অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক জ্যারড কিম্বার। 

১৭ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে কিম্বার লিখেছেন, ঢাকা-রংপুর ম্যাচে ১০ ওভার শেষে রংপুরের রান ৭৯.৫ এর বেশি হবে এর পক্ষে বেটফেয়ার-সহ বিভিন্ন বাজির ওয়েবসাইটে বাজির দর ছিল ১:১০০০, ১:২০০০ এ রকম যা খুবই অস্বাভাবিক। আলাউদ্দিন বাবু যখন ১০ ওভার করার জন্য বল হাতে নেন তখন রংপুরের রান ছিল ২ উইকেটে ৬২। 

৯ বলের ওভারে আলাউদ্দিন বাবু দিয়েছেন ১৩ রান, যার একটি পিচের এত বাইরে পড়েছে যে ওয়াইড হয়ে বল বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে ৪ হয়েছে। শেষ একটি বৈধ ডেলিভারি করতে আলাউদ্দিন বাবু খরচ করেছেন ৯ রান। কিম্বারের কাছে ইংল্যান্ডের বাজির ওয়েবসাইটের কর্তাব্যক্তিরা বলেছেন যে এই সময় অস্বাভাবিক হারে লেনদেন হয়েছে বিভিন্ন বাজির ওয়েবসাইটে।

বাংলাদেশের আইনে বাজি ধরা অবৈধ হলেও অনেক দেশেই তা বৈধ। বেটফেয়ার-এর মতো প্রতিষ্ঠান ২০০০ সাল থেকে ব্যবসা করে আসছে যুক্তরাজ্যে, অস্ট্রেলিয়া-সহ অনেক দেশে। এই সব বাজির ওয়েবসাইটে নানান খেলার ফলের ওপর মানুষ বাজি ধরে, জয়ী হলে পুরস্কার পায়। 

বিপিএলের ম্যাচকে ঘিরে বহির্বিশ্বে আগ্রহ কম হলেও ৭ জানুয়ারির ম্যাচকে ঘিরে বেশ কিছু অস্বাভাবিক অঙ্কের লেনদের কথা জ্যারডকে জানিয়েছেন ‘ডেসিম্যাল ডাটা সার্ভিস’ নামে খেলার জগতের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের হেড অব ক্রিকেট রব ব্যারন, ‘বিপিএলকে ঘিরে আমরা সবসময়ই একটু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করি কারণ বিশ্বের প্রধান টি-২০ লিগগুলোর মধ্যে এই লিগের বাজারটাই সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত আচরণ করে। কখনো মনে হয় এই খেলার প্রতি বাজি ধরার লোকদের কোনো আগ্রহই নেই। যেমন প্রথম ওভারেই কোনো দল বিনা উইকেটে ১৫ করে ফেলল, এরপরই দেখা যায় বোলাররা খুব ভালো করেছে আর বোলিং দলের জেতার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে। বাজার আমাদের সেটাই বলে বোলাররা ভালো শুরু পেয়েছে’ বলেছেন বাজির ওয়েবসাইটকে হারজিতের দর ঠিক করে দেওয়া এই পরিসংখ্যানবিদ।
 
তার ব্যাখ্যা হচ্ছে, ‘যখন কোনো বাজির দর অস্বাভাবিক বেশি মনে হয়, তখন বাজি ধরা মানুষরা মনে করেন দুপক্ষের মধ্যে সেই দলটাই জিতবে যাদের জেতার কথা। এভাবে বাজার আরও সঙ্কুচিত হয়। হয়তো এর পেছনে কিছু নেই তবে ক্রিকেটে আজকাল এমন অনেক কিছুই ঘটছে।’

অনেক পেশাদার বাজিকর এবং প্রতিষ্ঠানই বিপিএলের ম্যাচে বাজি ধরেন না। তাদের কাছে বিপিএল ত্রুটিপূর্ণ। এখানকার বাজার খুবই ভঙ্গুর এবং একপেশে। এখানে স্বাভাবিক ক্রিকেটের ধারাটা প্রতিফলিত হয় না। এই খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকেই জানিয়েছেন যে বিপিএলকে ঘিরে যে অস্বাভাবিকতা দেখা যায় বাজির দুনিয়ায়, সেটা আর দেখা যায় শুধু টি-১০ লিগগুলোতে। বিপিএলের এই অস্বাভাবিক চরিত্রের কারণেই পেশাদাররা বিপিএলমুখী হন না, এমনটাই লিখেছেন জ্যারড।

এআর

Link copied!