বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের অভিজ্ঞ পেসার জাহানারা আলম সম্প্রতি জাতীয় দলে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার অভিযোগ প্রকাশ করে আলোচনায় আসেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি আরও গুরুতর অভিযোগ, যার মধ্যে যৌন হয়রানির বিষয়ও রয়েছে, উত্থাপন করেছেন। অভিযোগে তিনি সাবেক নির্বাচক, সাবেক ইনচার্জ, ম্যানেজারসহ কয়েকজন ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টির সংবেদনশীলতা বিবেচনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দ্রুত তদন্তে নেমেছে। বোর্ড ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যারা ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন ও সুপারিশ জমা দেবে।
বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এ বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। জানা গেছে, তার নির্দেশনায় কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে—
১. বিসিবির সিইওকে স্পষ্ট করতে হবে, তিনি ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পেয়েছিলেন কি না, এবং পেয়ে থাকলে কেন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।
২. অভিযুক্তরা যদি এখনও বিসিবিতে কর্মরত থাকেন, তাহলে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৩.সিইওকে আইন বিভাগ ও লিগ্যাল টিমের সহযোগিতায় দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে অগ্রগতি প্রতিবেদন বোর্ডে জমা দিতে বলা হয়েছে।
৪. পাশাপাশি নারী খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলো পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে বিসিবি জানায়, একজন সাবেক জাতীয় নারী ক্রিকেটার গণমাধ্যমে কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন, তা বিসিবি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে। বোর্ড তার খেলোয়াড় ও কর্মীদের জন্য নিরাপদ, সম্মানজনক ও পেশাদার পরিবেশ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুমাননির্ভর মন্তব্য বা প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে, যাতে তদন্তের স্বচ্ছতা ক্ষুণ্ন না হয়।
জাহানারা সম্প্রতি একটি ইউটিউব সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, মঞ্জুরুল নারী ক্রিকেটারদের প্রতি অনুপযুক্ত আচরণ করতেন, এমনকি ‘মন্দ স্পর্শ’ করতেন এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য–সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাইতেন।
জাহানারা অভিযোগ করেন, মঞ্জুরুল উৎসাহ দেওয়ার নামে খেলোয়াড়দের আলিঙ্গন করতেন বা অনুপযুক্তভাবে স্পর্শ করতেন।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করা জাহানারা আলমের এই অভিযোগ নারী ক্রিকেটে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ক্রিকেট বিশ্লেষকরা বলছেন, তদন্তের ফলাফলের ওপরই নির্ভর করছে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে ভবিষ্যতে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতের পথনকশা।
এম
আপনার মতামত লিখুন :