সালাউদ্দিনের লক্ষ্য এবার সাফ শিরোপা

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০১৬, ০২:১৬ পিএম
সালাউদ্দিনের লক্ষ্য এবার সাফ শিরোপা

সম্প্রতি বাংলাদেশ দল ভুটানের কাছেও হারে। তাও আবার ৩-১ গোলে। এটিকে সময়ের সবচে বড় লজ্জা বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশের সাবেক ফুটবলাররা। এমন কি এ বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসার নানা পরিকল্পনাও বাতলেদেন তারা। একটি সাংবাদিক সংগঠনের আয়োজিত গোল টেবিলে সেদিন কাজি সালাউদ্দিন ফুটবলকে নতুন করে জাগরণের প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৬ সালের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে তাইতো নতুন করে ফুটবল উন্নয়নের ফিরিস্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। সাংবাদিক সম্মেলন করেই কাজি সালাউদ্দিন শোনালেন সেই প্রত্যাশার বার্তা। 

কিন্তু নতুন করে প্রতিশ্রুতি দেয়ার দিনে বাফুফের পক্ষ থেকে গতআট বছরের ফুটবল উন্নয়নের যে প্রশংসা করা হয়, তা ছিলো সত্যিই অবাক করার মতোই। চক্ষুলজ্জাহীন হলে যা হয়। তাইতো বাফুফে এই পরিকল্পনাকে বলছে, ফুটবল উন্নয়নের ‘তৃতীয় ধাপ’। গত আট বছরের কঠিন পরিশ্রমের ফসলই নাকি এই পরিকল্পনা। কাজী সালাউদ্দিন বাফুফের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে আছেন আট বছরেরও বেশি সময়। ২০০৮ সালের এপ্রিলে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাফুফের দাবি অনুযায়ী তখন থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফুটবল উন্নয়নের ‘প্রথম দুটি ধাপ’ সফলভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে। 

তবে তৃতীয় এই পরিকল্পনায় খুব বৈপ্লবিক কিছু নেই ফুটবল উন্নয়নের ‘তৃতীয় ধাপে’। শিক্ষিত কোচ তৈরি, দেশব্যাপী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভালো প্রতিভাবান খেলোয়াড় তুলে আনার কার্যক্রম, ক্লাবগুলোকে যুব ফুটবল দল তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করা, জেলা পর্যায়ে ফুটবলটা নিয়মিত করা।

ফুটবলের এই মেঘা পরিকল্পনাটি করেছেন বাফুফের টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাটিজিক ডিরেক্টর পল স্মলি। তবে পলের উপস্থাপনায় উঠে আসা এই কর্মপরিকল্পনা বাফুফের আর দশটা ঘোষিত কর্মসূচির রূপ নেবে না বলেই প্রতিশ্রতি দিয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন। এই কর্মসূচির সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে তাঁর মেয়াদকালের বাকি সময়ে তিনি জাতীয় ফুটবল দলকে কমপক্ষে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপার লড়াইয়ে দেখতে চান বলে আশাবাদও প্রকাশ করছেন,‘আমি মনে করি চার বছরে বাংলাদেশ সাফের ফাইনালে খেলার মতো দল হয়ে  উঠবে। বাংলাদেশকে আমি এশিয়ার সম্মানজনক স্থানে দেখতে চাই। আমি যে পরিকল্পনা দিয়েছি, সেটা বাস্তাবায়ন হবেই। এ জন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই।’

ভাগ্যিস স্বপ্ন দেখেন নি বিশ্বকাপে খেলার মতো দুঃস্বপ্ন। গত মেয়াদে তিনি মিডিয়াতে ২০২২ বিশ্বকাপ খেলার মতো স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। অথচ তার সেই স্বপ্ন প্রত্যাশার ধারে কাছেও নেই। অনেকের মতে পাগলের প্রলাপ। হয়েছেও তাই। বিশ্বকাপতো দূরের কথা,দক্ষিণ এশিয়ার সব কয়টি দেশের নীচে বাংলাদেশের ফুটবলের অবস্থান। রুগ্ন হয়ে পড়ে বাংলাদেশের ফুটবল। সালাউদ্দিনের জামানায় ফিফা র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ নেমেছে ১৮৭তম স্থানে। 

তাই ফুটবল উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন বয়স ভিত্তিক লিগ বা টুর্নামেন্ট, জেলা ফুটবল লিগ, স্কুল ফুটবল, মেয়েদের ফুটবল, সর্বপুরি ফুটবলার তৈরীর বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের এ পরিকল্পনাতে আছে অনুর্ধ্ব-১৬,১৭,১৮, ১৯ ও যুব দল নিয়ে নানা টুর্নামেন্ট ও আবাসিক ক্যাম্প।  থাকবে অনুর্ধ্ব-১৪, ১৬ ও জাতীয় মহিলা দল নিয়ে কানা কার্যক্রম। জাতীয় দল নিয়ে যথারীতি পরিকল্পনা তো থাকবেই।

তবে নতুন এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দরকার কাড়ি কাড়ি টাকা। সেই টাকা আসবে কোত্থেকে? এমন প্রশ্নের উত্তরে সালাউদ্দিন বলেন,‘সেটা ম্যানেজ হবে। টাকা ছাড়া কিছুই হয় না। পরিকল্পনা করা সহজ কিন্তু সটা বাস্তবায়ন করতে টাকা দরকার। তবে টাকার ব্যবস্থা হবে। আমি সবকিছু ভেবে চিন্তেই পরিকল্পনা দিয়েছি। টাকা কোথা থেকে আসবে সেটা আপনারা কিছু দিনের মধ্যেই জানতে পারবেন।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Link copied!