‘পদ্মার চরে ক্রীড়াপল্লী ও অলিম্পিক কমপ্লেক্স হবে’

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭, ০৭:০২ পিএম
‘পদ্মার চরে ক্রীড়াপল্লী ও অলিম্পিক কমপ্লেক্স হবে’

ঢাকা: দেশের খেলাধুলার মান উন্নয়নে পদ্মার চরে একটি আধুনিক ক্রীড়া পল্লী এবং অলিম্পিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে পল্টনস্থ শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সে চতুর্থ রোল বল বিশ্বকাপের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকল বাধা বিঘ্ন পেরিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি হচ্ছে। সেই পদ্মার চরেই আমরা একটি উন্নতমানের ক্রীড়া পল্লী গড়ে তুলবো যেখানে বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলা আয়োজন এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এমনকি একটি অলিম্পিক কমপ্লেক্সও আমরা ওখানে তৈরি করতে চাচ্ছি।’

বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং ফেডারেশন আন্তর্জাতিক রোল বল ফেডারেশন (আইআরবিএফ) এর সহযোগিতায় ঢাকায় ১৭ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘চতুর্থ রোল বল ওয়ার্ল্ড কাপ- ২০১৭’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বিশ্বকাপের পুরুষ ও মহিলা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন ভারত এবং রানার্স আপ ইরানের হাতে প্রতিযোগিতার ট্রফি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া খেলোয়াড়, আয়োজক কর্মকর্তাদের মাঝে ব্যক্তিগত ট্রফি বিতরণ করেন।

ভারত পুরুষ বিভাগে ইরানকে ৮-৭ গোলে এবং মহিলা বিভাগে ৬-৪ গোলে পরাজিত করে উভয় বিভাগেই শিরোপা জয় করে। প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ১৩ বছরের বয়েসের হৃদয় সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ পুরুষ দল প্রতিযাগিতায় ৪র্থ স্থান অধিকার করে। গতবার বাংলাদেশের অবস্থান ছিল সপ্তম।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মনে করি আমাদের যুব সমাজকে যেকোন ধরনের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বা মাদকাশক্তি থেকে দুরে রাখতে হবে। আর সেটা করতে গেলে খেলাধুলা ও সংস্কৃতির চর্চা একান্তভাবে জরুরি। সেই পদক্ষেপই আমরা নিতে চাচ্ছি।

তিনি বলেন, এর ফলে আমরা মনে করি আমাদের ছেলে-মেয়েরা আরো শারিরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও সবল হবে এবং তাদের মেধা-মনন বিকাশের সুযোগ লাভ করবে।

রোলার স্কেট পায়ে জড়িয়ে গোল করে বিপক্ষকে পরাভূত করার এই গতিময় ও উত্তেজনাপূর্ণ অপেক্ষাকৃত নতুন ধরনের এই খেলা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোল বল খেলাটি বাংলাদেশে খুব পরিচিত খেলা নয়। তবে সময়ের ব্যাপ্তি বিবেচনায় খেলাটির পরিধি অনেক প্রসারিত হয়েছে। আমি আশ করছি আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খেলাটি দেশের আনাচে-কানাচে আরো প্রসার লাভ করবে।

তাঁর সরকার খেলাধুলার উন্নয়নে প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রীড়া ক্ষেত্রে আমরা প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দিচ্ছি। ক্রীড়া শিক্ষা প্রশিক্ষণ, বিশেষায়িত ক্রীড়া শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নয়নের সামগ্রিক পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি এবং ধীরে ধীরে এটার ওপর আরো জোর দেব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকাল খেলা মাঠে গড়ালে তা খেলোয়ারদের মধ্যে কেবল বন্ধুত্ব কিংবা ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। ‘ট্রাক থ্রি ডিপলোমেসী’র এই সময়ে খেলাও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে পারে, আঞ্চলিক সম্পর্ককেও মজবুত করতে পারে।

ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের সাফল্য প্রসংগে শেখ হাসিনা বলেন, খেলাধুলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন একটি অতি পরিচিত নাম। সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৮ ফুটবলে বাংলাদেশের সফলতা এবং নারী ক্রিকেট দলের সাফল্যে আমরা গর্বিত। আর ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ এখন একটি শক্তিশালী দল।

তিনি বলেন, হকি, শ্যুটিং, হ্যান্ডবল, বাস্কেটবল, আরচ্যারি, জিমন্যাস্টিক্স ও বিচ ফুটবলসহ বিভিন্ন ইভেন্টে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ অলিম্পিকেও বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোল বল স্কেটিং’ প্রতিযোগিতায় পুরুষ ক্রীড়াবিদদের পাশাপাশি মহিলা ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণ নারী-পুরুষের সমতা ও সমঅধিকার অর্জনের উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত। আমাদের সরকার নারীবান্ধব নীতি অবলম্বন করে সমাজের সর্বস্তরে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি নারী ক্রীড়াবিদদের উত্তরোত্তর সাফল্য ও কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক এবং ৪র্থ রোল বল বিশ্বকাপের আয়োজন কমিটির প্রধান মো. আবুল কালাম আজাদ বক্তৃতা করেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বিরেন সিকদার, উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. জাহিদ আহসান রাসেল, আন্তর্জাতিক রোল বল ফেডারেশনের সভাপতি পেনিয়া কাবিঙ্গে এবং সাধারণ সম্পাদক রাজু ধাবারে।

৩৯টি দেশের ৬২৫ জন খেলোয়াড় এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এবারই প্রথমবারের মতো এই খেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩৯টি দেশ ও সর্বোচ্চ ৬২৫ জন ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Link copied!