পুরষ্কার হাতে নিয়ে যা বললেন ক্রীড়াবিদরা

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০১৮, ১০:২২ পিএম
পুরষ্কার হাতে নিয়ে যা বললেন ক্রীড়াবিদরা

ঢাকা: বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ)। দেশের ক্রীড়া সাংবাদিক ও লেখকদের সবচেয়ে পুরনো এই সংগঠনটি বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি নামে সর্বাধিক পরিচিত। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠার মাত্র দুই বছরের মাথায় ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের জন্য পুরষ্কার প্রবর্তন করে।

তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে প্রদান করা হলো ২০১৭ সালের বিএসপিএ বর্ষসেরা ক্রীড়া পুরষ্কার। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।

২০১৭ সালের বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদের পুরস্কার পেয়েছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। পাশাপাশি বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরষ্কারও জিতে নেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। সাকিবের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কিংবদন্তী ক্রিকেটার রকিবুল হাসান।

এ সময় এক প্রতিক্রিয়ায় সাকিব বলেন, ‘যে কোন পুরষ্কারই আনন্দদায়ক। কিন্তু ক্রীড়া লেখক সমিতির পুরষ্কার আমার কাছে বিশেষ মনে হয়। এই পুরস্কার প্রাপ্তি আমাকে আগামীতে আরও ভাল খেলতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।’

বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরষ্কার জিতে নেন জাফর ইকবাল। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাফুফের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন। পুরষ্কার হাতে নিয়ে জাফর তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘এখানে আমার মা-বাব উপস্থিত আছেন। তাঁদের জন্যই এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি।’

বর্ষসেরা টেবিল টেনিস খেলোয়াড়ের পুরষ্কার জিতে নেন সোনম সুলতানা সোমা। সোনমের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু। সোনম বলেন, ‘সবকিছুই কঠিন। সহজে কোন কিছু করা যায় না। ২২ বছরের ক্যারিয়ারে যত পুরস্কার পেয়েছি, এই পুরস্কারটাই সবচেয়ে সেরা।’

বর্ষসেরা দাবাড়ুর পুরষ্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব। রাজীবের হাতে পুরস্কার তুলে দেন দেশের প্রথম মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার রানী হামিদ ও উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ। পুরষ্কার হাতে রাজীব বলেন, ‘দাবার দুই কিংবদন্তির হাত থেকে এই পুরস্কারটি পেয়ে খুবই ভাল লাগছে। নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে।’

বর্ষসেরা শ্যুটারের পুরষ্কার জয় করেছেন শ্যুটার অর্ণব সারার লাদিফ। অর্ণবের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ১৯৯০ কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণপদক জেতা আতিকুর রহমান। এ সশয় অর্ণব বলেন, ‘দোয়া চাই, যেন দেশের জন্য আরও সাফল্য আনতে পারি। আমার লক্ষ্য ২০২৪ অলিম্পিকে পদক জেতা।’

বর্ষসেরা সাঁতারুর পুরষ্কার জিতেছেন লন্ডন প্রবাসী জোনায়না আহমেদ। তার অনুপস্থিতে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন জোনায়নার চাচা। পুরস্কার তুলে দেন ক্রীড়া সংগঠক কামরুন নাহার ডানা। এক ভিডিও বার্তায় জোনায়না জানান, ‘খুব খুশি। সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ। আগামীতে আরও ভাল খেলতে চেষ্টা করব।’

উদীয়মান অ্যাথলেট নির্বাচিত হন জহির রায়হান। জহিরের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সবচেয়ে বেশি বার জাতীয় পর্যায়ে সাত বার দ্রুততম মানবের খেতাব জেতা মোশাররফ হোসেন শামীম এবং প্রখ্যাত এ্যাথলেট সাইদ-উর-রব। এ সময় জহির বলেন, ‘বাঙালি হলেও আমরা পারি, পারবো। এজন্য কঠোর অনুশীলনের বিকল্প নেই।’

বর্ষসেরা কোচ এর পুরষ্কার জেতেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব জালাল আহমেদ চৌধুরী এবং ক্রীড়া সংগঠক রাইস উদ্দিন আহমেদ। সালাউদ্দিন বলেন, ‘খেলা চলাকারে একজন কোচের ওপর চাপ অনেক বেশি থাকে। এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং জায়গা।’

দেশের নারী ফুটবল আজ ঈর্ষণীয় অবস্থানে। জাতীয় দলসহ বিভিন্ন বয়সভিত্তিক যত জাতীয় দল আছে, সেগুলোর বেশিরভাগ ফুটবলারই এসেছে ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার কলসিন্দুর থেকে। আর ফুটবলারদের যিনি তৈরি করে দিয়েছিলেন, সেই মফিজ উদ্দিন পেয়েছেন তৃণমূলের সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের পুরস্কার। তিনি বলেন, ‘ধন্যবাদ বিএসপিএকে। ক্রিকেটের এত সাফল্যের পরও এদেশে আজও ফুটবলই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। ফুটবলকে এগিয়ে নিতে, এর সুদিন ফেরাতে সবার একযোগে কাজ করা উচিত।’

বর্ষসেরা সংগঠকের পুরষ্কার জেতেন বাফুফে মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন সাফের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল এবং হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক। কিরণ বলেন, ‘আমার এই অর্জন সোনার মেয়েদের জন্য। এই পুরস্কার পাওয়ার জন্য অবদান আছে বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিনের। পুরস্কারটি আমি উৎসর্গ করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।’

বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়েছে বাফুফে সিনিয়র সহ সভাপতি সালাম মুর্শেদী ও বাদল রায়কে। সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘জীবনে খেলোয়াড় এবং ব্যবসায়ী হিসেবে যত পুরস্কার জিতেছি, সবগুলোর চেয়ে সেরা পুরস্কারটি পেলাম আজ।’   

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Link copied!