‘বোলারদের দোষ নয়, ক্রেডিট দেওয়া উচিৎ’

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮, ১২:১৪ পিএম
‘বোলারদের দোষ নয়, ক্রেডিট দেওয়া উচিৎ’

ঢাকা: একটা করে ফাইনাল যায়, আবার ফাইনাল আসে। কিন্তু বাংলাদেশের ফাইনাল জেতা হয় না। বিধাতা বোধহয় বাংলাদেশের ট্রফি জয়ের পরীক্ষা নিচ্ছে। প্রতিবারই ফাইনালে আহা, উহ, একটুর জন্য হলো না, এসব শব্দ আমাদের মুখ থেকে অজান্তেই বেড়িয়ে পড়ছে।

শুক্রবার এশিয়া কাপের ফাইনালে সেই আহা, একটুর জন্য হলো না, এগুলো বারবার মনে হওয়ার কথা। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে অবিশ্বাস্যরকমের ভালো খেললেন লিটন দাস আর এই প্রথম ওপেনিং করতে যাওয়া মেহেদি হাসান মিরাজ। ২০ বছরের তরুণ মিরাজের সাহসের তারিফ করতেই হয়। ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরে তাঁর ব্যাট থেকেই এসেছিল সর্বোচ্চ ৪২ রান।

এটা দেখেই হয়তো টিম ম্যানেজম্যান্ট মিরাজকে ওপেনিংয়ে নামিয়ে জুয়া খেলেছিল। যেখানে লেটার মার্ক নিয়ে পাশ করেছেন মিরাজ। অবশ্য মাশরাফি আগেও বলেছিলেন, মিরাজের ব্যাটিংটা তিনি ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারছেন না। জসপ্রীত বুমরাহ-ভুবনেশ্বর কুমারদের সামনে যেভাবে বুক চিতিয়ে লিটনকে সঙ্গ দিয়ে গেলেন মিরাজ তাতে তাঁর অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার ব্যাপারটি কেউ ঠেকাতে পারবেন না।

আর লিটনকে নিয়ে বরাবরই বাংলাদেশ টিম ম্যানেজম্যান্টের ছিল অনেক প্রত্যাশা। তিনি যে ধরণের ব্যাট করে থাকেন তা দেখা যাচ্ছিল না এশিয়া কাপে। যদিও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দেখিয়েছেন তাঁর দিনে তিনি কী করতে পারেন। এদিন ভারতীয় বোলাররা দেখলেন তাঁর ব্যাট চালানোর ক্ষমতা। ৩৩ বলে ফিফটির পর ৮৭ বলে সেঞ্চুরি করে প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছেন লিটন। শেষ অবধি ১২১ রান করে বিতর্কিত এক আউটে তাঁকে থামতে হয়েছে। তারপরও বাংলাদেশের স্কোর ২৫০ হলো না সেটি অবিশ্বাস্য।

বাংলাদেশের মিডল অর্ডার এদিন যেন মনে করল টপ অর্ডার ভালো করেছে তাই তাদের দায়িত্ব কমে গেছে।

মুশফিক-মিঠুন-মাহমুদউল্লাহ-ইমরুল কেউই দুই অঙ্কের ঘরও স্পর্শ করতে পারলেন না। আগের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে যে রান করেছিল বাংলাদেশ সেই রান করলেও তো ভারতকে আরও টুটি চেপে ধরা যেত।

শুক্রবার আরও একবার ফাইনালে হারের হতাশায় পুড়তে হলো। গত মার্চে এই ভারতের বিপক্ষেই নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে হেরেছিল বাংলাদেশ। দুর্দান্ত বোলিং করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন। তারপরও তাদের শেষ ওভারে আনা যায়নি কারণ দু’জনের কোটা আগেই শেষ হয়েছিল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওভারে ৭ রান ডিফেন্ড করে বাংলাদেশকে ৩ রানে জিতিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর।

এদিন ভারতের জিততে দরকার ছিল ৬ রান। মোস্তাফিজুর শেষ ওভারটা করলে হয়তো ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারত। কিন্তু অধিনায়ক মাশরাফির পক্ষে সেটা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, ‘স্পিনাররা আজকে যেভাবে বোলিং করছিল, প্রত্যেক ওভারে ৬, ৭, ৮ করে হচ্ছিল।

উইকেটও পাঁচটা গিয়েছে। তখন তো খেলা শেষ ওভারে নিয়ে হয়তো দেখা যেত ৩ রান লাগছে। তখন যে–ই বোলিং করুক, সেটা আটকানো সম্ভব নয়। অবশ্যই ভালো হতো মোস্তাফিজ বা রুবেলের একটা ওভার যদি রাখা যেত। কিন্তু ওই পরিস্থিতি ছিল না। কারণ, ৩০ বলে ২৫। এমনকি একপর্যায়ে যদি দেখেন ১৭ বলে ১১ ছিল। এখান থেকে কিন্তু ওরাই টেনে নিয়েছে।’

২২২ রান করে ভারতের মতো দলের বিপক্ষে জয় পাওয়া খুবই কঠিন। কারণ তাদের ব্যাটিং লাইনআপ বিশ্বসেরা। সেটা মনে করিয়ে দিয়ে মাশরাফি বলছেন,‘ প্রথম ইনিংসে স্পিন হচ্ছিল উইকেটে। পুরো টুর্নামেন্টে মিরাজ সেরা বোলার, মাহমুদউল্লাহ সর্বশেষ ম্যাচে সেরা বল করেছে। আমাদের শুধু দরকার ছিল ১০টা ওভার বের করা ওইখানে। যেটা আমরা করতে পারছিলাম না ওইসময়।

আমার মনে হয় নাজমুল আরেকটু ভালো বল করতে পারত। যে কোনও স্পিনার যদি সমর্থন দিত আজকে ম্যাচটা হয়তো কঠিন হতো না। তবু ২২২ রান করে বোলারদের দোষ দিতে পারেন না। বোলারদের ক্রেডিট দেওয়া উচিত ওই পর্যায়ে পর্যন্ত গেছে।’


সোনালীনিউজ/আরআইবি/আকন

Link copied!