ভোটারদের মন জয় করে নিলেন মাশরাফি

  • রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ, | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০১৮, ০৮:৪৬ পিএম
ভোটারদের মন জয় করে নিলেন মাশরাফি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব দশকের পর দশক ধরে চলে আসছে। আমরা যেন মানুষের ভালো কাজের প্রশংসা করতেই ভুলে গেছি! আর রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সেটি আরও বেশি। ভালো কাজ বা মন্দ কাজ বিরোধী পক্ষ তার সমালোচনা করবেই।

এই যেমন ধরুন, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপনের পর বিএনপির এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য ছিল এরকম, ‘ওটা আগে আকাশে ঘুরুক। তারপর বলা যাবে।’ তার মানে কী! এই স্যাটেলাইট বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল করেছে-সেটা স্বীকার করা তো দূরের কথা উল্টো এর কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হলো। আবার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বানানো একটি ছবি নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। বিএনপির দাবি, ছবিটাও নাকি নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল!

নড়াইল-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ক্রিকেট থেকে মনটা একটু দূরে সরে গেল কি-এই সিরিজের আগে প্রশ্নগুলো ডালপালা মেলছিল। কিন্তু মাঠের মাশরাফি যে এমপি হওয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে নেই তার প্রমাণ পাওয়া গেল মিরপুরের ২২ গজে। যারা তাঁকে ধরার জন্য বসেছিলেন তাঁদের মুখে চুনকালি পড়ল। আগের চেয়ে এই মাশরাফি যেন আরও বেশি ক্ষুরধার। ১০ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নিলেন ৩ উইকেট।  মাশরাফি শেষ ওভারেই দিয়েছেন ১১ রান। তাহলে বুঝুন কী বোলিং করেছেন মাশরাফি! অধিনায়কের এমন বোলিংয়ের দিনে জয় কিভাবে হাতছাড়া হয়? তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। বাংলাদেশ ৮৯ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে প্রথম ম্যাচটি জিতে নিল।

এই ম্যাচ বিনপির শীর্ষ নেতারা দেখেছেন কি? আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েই মাশরাফি কেন এত ভালো খেললেন?  যদি এই নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যেত, তাহলে অবশ্যই এই প্রশ্ন তুলতেন! ভোটের আগে মাশরাফি এই পারফরম্যান্স করলেন ভোটারদের মন জয় করতে? এই প্রশ্ন  তোলা হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না!

মাশরাফিকে যারা চেনেন তারা কিন্তু জানেন কিভাবে একটা ছেলে হাঁটুতে সাতবার অপারেশন করে খেলে যাচ্ছেন। বোলিং করার সময় বারবার তাঁকে হাঁটুর ব্যান্ডেজ ঠিক করতে হয়! তারপরও দমেন না মাশরাফি! আবার বল হাতে নিয়ে দৌড় শুরু করেন। সেই দৌড়ে থাকে দেশের প্রতি ভালোবাসা আর আবেগ। স্রেফ এই কারণেই নিজের শত প্রতিবন্ধকতা এক ফুৎকারে উড়িয়ে এখনও মাঠের রাজা মাশরাফি। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও ওঠে তাঁর হাতে।

মাশরাফিকে তো এক-দুটো কথায় আপনি আটকাতে পারেন না। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন তোলার পর থেকে এক দল তো গেল গেল বলে মুখ দিয়ে ফেনা তুলে ফেলল! মাশরাফি একি করলেন! কেন তিনি একটি দলের অংশ হয়ে গেলেন?  সর্বজন গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেললেন। আরেক দল তো অপেক্ষায় ছিলেন এই ভেবে যে, রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত মাশরাফিকে ধরার এটাই মোক্ষম সময়! প্রথম ওয়ানডেতে যদি অধিনায়ক অমন দুর্দান্ত বোলিং না করতেন তাহলে কী হতো? এটা নিশ্চিত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম মাশরাফির সমালোচনায় ভরে যেত। দেখ, এমপি হওয়ার ধান্দায় আর খেলায় মন নেই! আরও কত কি! কিন্তু শেষ অবধি অধিনায়ক কি দেখালেন? মাশরাফি মাশরাফিই।

 সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Link copied!