একটি স্মার্ট গরু রচনা!

  • বিচিত্র-সংবাদ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০১৭, ১২:১৮ পিএম
একটি স্মার্ট গরু রচনা!

ফাইল ছবি

ঢাকা: ছোট বেলায় বাংলা বিষয়ে পরীক্ষার খাতায় ‌‍‘গরু’ রচনা লিখতে হতো। যার লেখার মান যত ভালো হতো শিক্ষক তাকে তত বেশি নম্বর দিতেন। তখন আমরা শুরুই করতাম ‘গরু একটি গৃহপালিত পশু’। কিন্তু বদলে গিয়েছে গরুর রচনা। আগের মতো লিখলে আর পরীক্ষায় নম্বর পাওয়া যাবে না।

ভারতে ‘গরু’ কে নিয়ে এখন বেশ হুলুস্থুল ব্যাপার শুরু হয়েছে। আইন করা হয়েছে গরু এখন মানুষের মত মর্যাদা পাবে। তাকে কেউ জবাই করলে মৃত্যুদণ্ডও দেয়া হবে বলে হুমকি এসেছে। তাইতো এখন গরুর রচনা পাল্টে গেছে। পড়ুন গরু নিয়ে নতুন রচনা.........

গরু একটি মুখ্যমন্ত্রীপালিত প্রাণী। গরুর চারটি পা, দু’টি শিং, একটি লেজ এবং একটি অদৃশ্য লম্বা হাত আছে। সেই হাতটি লখনৌয়ের কালিদাস মার্গ থেকে দিল্লির অশোক রোড পর্যন্ত প্রসারিত। গরু সাদা, কালো, বাদামি এবং গেরুয়া রংয়ের হয়। 

গরু আমাদের দুধ দেয়। গরুর দুধ খুবই পুষ্টিদায়ক। কিন্তু এক লিটার গরুর দুধে যতটা পুষ্টি থাকে, তার তুলনায় একটি গরু রক্ষা করলে অনেক বেশি পুণ্য অর্জন হয়। গরুর চামড়া দিয়ে জুতো তৈরি হয়। কিন্তু গরুর চামড়া দিয়ে জুতো তৈরি করলে জুতোপেটা করা হয়। মানুষ এবং গরুর জীবনের মূল্য এখন সমান। মানুষের মতো গরু মারলেও এখন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

দেশের প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য কোনও ভিআইপি-দের মতো গরুদেরও এখন ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী থাকে। তাঁদের গোরক্ষক বলা হয়। আগে যাঁরা গরুর দেখাশোনা করতেন, তাঁদের রাখাল বালক বলা হতো। এখন ‘গোরক্ষক’ বা ‘গোসেবক’-রা রয়েছেন। গরু খুবই নিরীহ প্রাণী। সে ঘাস খায়। কিন্তু গরুকে খাওয়ার আগে এখন বাঘ-সিংহকেও দু’বার ভাবতে হয়। গরু অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের প্রাণী। কিন্তু সেই গরুকে নিয়েই দেশের সংসদও এখন অশান্ত হয়ে উঠছে।

গরু শ্রীকৃষ্ণের সহচর। কিন্তু এতদিন কেউ তাকে সেভাবে পাত্তা দিত না। ইদানিং মানুষ তাকে বেশ সমীহ করে। কারণ গরুর গায়ে সামান্য হাত পড়লেও তার ফল প্রাণঘাতী হতে পারে। টিভি চ্যানেল, খবরের কাগজের হেডলাইনে এখন রোজ গরু জায়গা করে নিচ্ছে। এখন তাই ‘গরু’ বলে গালাগাল দিলেও কেউ রেগে যায় না।

গরুর কিন্তু এতটুকু অহংকার নেই। কারণ ইদানিং গুরুত্ব বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও গরুর চাউনি কিন্তু আগের মতোই নিরীহ রয়েছে। তাকে নিয়ে এই মাতামাতিতে সে খুশি হয়েছে না দুঃখ পেয়েছে, গরুর চোখের দিকে তাকিয়ে তা বোঝারও উপায় নেই। 

গরুর মাংসের অভাবে দেশের বেশ কিছু চিড়িয়াখানায় খাদ্যসংকট দেখা গিয়েছে। মাংস সংকটেও ভুগছে কোনও কোনও অঞ্চল। গোরক্ষকদের তৎপরতায় যেভাবে দেশে গরুর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে ঘাস এবং বিচালির সংকটও দেখা দিতে পারে। ঘাসের অভাবে অন্যান্য তৃণভোজীদের অস্তিত্বসংকটও দেখা দিতে পারে। কিন্তু তারা সেকথা আপাতত বুঝছে না। সূত্র: এবেলা।

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই

Link copied!