যে সরকারি স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলে দুই!

  • বিচিত্র সংবাদ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০১৮, ০২:৪৯ পিএম
যে সরকারি স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলে দুই!

ঢাকা : পুরো স্কুলে রয়েছে মাত্র একজন শিক্ষক। তিনিই সব বিষয় পড়ান। অথচ তার নিজের বিষয় সমাজ বিজ্ঞান। শিক্ষক না থাকায় ছাত্রীদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় অভিভাবকরা।

গুরুগ্রাম থেকে মাত্র ৬০ কিমি দূরে রেওয়ারি। হরিয়ানার একটি গ্রাম। গ্রামে সরকারি স্কুল থাকলেও কেউ সেখানে পড়তে যায় না।

বাধ্য হয়েই দূরের সরকারি স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে ছাত্রীদের। সেই স্কুলে অবশ্য শিক্ষার্থী নেই বললে ভুল হবে। সেখানে পড়াশুনা করে একজন মাত্র ছাত্রী।

শিক্ষক আর ছাত্রী একজন করে থাকলেও, নেই কোনও অশিক্ষক কর্মী৷ ফলে বিদ্যালয়ের যাবতীয় কাজ একজন শিক্ষককেই করতে হয়৷ আবার ওই একজন ছাত্রীর পড়াশুনার দায়িত্বও তার।

স্কুলটির শিক্ষক দয়া কিষাণ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান, ২০১৩ সাল থেকে এই স্কুলটিতে কর্মরত তিনি৷ সরকার তাকে এখানে কাজ করতে বলেছে, তাই কাজ করতে বাধ্য তিনি৷ অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করা হলে, সেখানে চলে যাবেন৷ তার কোনো সমস্যা নেই।

তিনি আরও জানান, স্কুলের এই দশা আগে ছিল না৷ বেশ কয়েকজন ছাত্রী এখানে পড়াশুনা করত৷ তবে ধীরে ধীরে ছাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকে। গত মাসেও দুজন ছাত্রী ছিল স্কুলে৷ কিন্তু একজনের মৃত্যু হয়েছে৷ তারপর থেকেই একজন ছাত্রী নিয়ে স্কুলটি চলছে টিমটিম করে।

স্কুলের এই দুর্দশার জন্য তিনি শিক্ষকের অপ্রতুলতাকেই দায়ী করেন৷ তিনি বলেন, রাজ্যে শিক্ষকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম৷ তাই এই স্কুলে এমন অবস্থা।

অভিভাবকদের অসহায়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, শুধু শিক্ষক নয়, প্রয়োজনের তুলনায় কম রয়েছে অশিক্ষক কর্মীও৷ আর এই ছবিটা রাজ্যের প্রায় সবকটি সরকারি স্কুলে দেখা যায়।

লুখি গ্রামের প্রধান চন্দ্র হর্ষ যাদব বলেন, স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা বাড়লেই ছাত্রীরা সেখানে ভরতি হবে৷ কিন্তু শিক্ষক না থাকলে পড়াবে কে? ছাত্রীদের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন৷ যাদব আরও বলেন এই সমস্যা নিয়ে বিডিওকে চিঠি দিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি৷

এর আগে, জুন মাসে হরিয়ানার দশম শ্রেণির ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, হিসাবের কাবরেল গ্রামের সরকারি স্কুল রেকর্ড করেছে৷ এই স্কুল থেকে ২৪ জন ছাত্রী দশম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু পাশের জন্য নির্দিষ্ট নম্বর কেউই তুলতে পারেনি।

শিক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, গত মাসে ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায়, ওই স্কুলের সব ছাত্রী অকৃতকার্য হয়েছে। তিনি যোগ করেন, এটিই একমাত্র স্কুল যা এত খারাপ ফল করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্কুলে নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষকের দাবিতে পঞ্চায়েত সদস্যরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। জানা যায়, গত শিক্ষাবর্ষে স্কুলে সংস্কৃত, হিন্দি, বিজ্ঞান, অঙ্কে কোনো শিক্ষক ছিল না।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এইচএআর

Link copied!