তিন ভাগে বিভক্ত নতুন ফাটলরেখার সন্ধান গবেষকদের, ৬ মাত্রায় ভূমিকম্পের শঙ্কা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৫, ১২:৩২ পিএম
তিন ভাগে বিভক্ত নতুন ফাটলরেখার সন্ধান গবেষকদের, ৬ মাত্রায় ভূমিকম্পের শঙ্কা

ভূমিকম্প গবেষকরা বাংলাদেশের জামালপুর ও ময়মনসিংহ থেকে ভারতের কলকাতা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি নতুন সক্রিয় ফাটলরেখা শনাক্ত করেছেন। প্রাথমিক বিশ্লেষণে ফাটলটি তিন ভাগে বিভক্ত- এক ভাগে স্বল্প মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকি, দ্বিতীয় ভাগে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকি এবং তৃতীয় ভাগে ভূমিকম্পের ঝুঁকি নেই।

গবেষণায় ধারণা করা হয়েছে, ফাটলরেখাটি সর্বোচ্চ ৬ মাত্রার ভূমিকম্প উৎপন্ন করতে সক্ষম।

বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আক্তারুল আহসান নেতৃত্বে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষকদল ছিলেন বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও তুরস্কের বিশেষজ্ঞরা।

আক্তারুল আহসান জানান, তারা ২০২৪ সালের মার্চে ‘টেকটোনিক জিওমরফোলজি’ পদ্ধতিতে গবেষণা শুরু করেছিলেন, এবং সম্প্রতি নতুন ফাটলরেখার অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়েছে।

২১-২২ নভেম্বর ২০২৫: বাংলাদেশে দুই দিনে চার দফা ভূমিকম্প, সর্বাধিক মাত্রা ৫.৭, যার ফলে ১০ জনের মৃত্যু।

নতুন ফাটলের সঙ্গে বড় মাত্রার পূর্ববর্তী ভূমিকম্প এবং ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ পরিবর্তনের সংযোগ পাওয়া গেছে।

ইতিহাস অনুযায়ী, ১৮৮৫ সালের মানিকগঞ্জ ভূমিকম্প (৭.০ মাত্রা) এবং ১৯২৩ সালের ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ ভূমিকম্প (৬.৯ মাত্রা) এই ফাটলের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নতুন ফাটলরেখার জন্ম ৫ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে (ইউসিন যুগে)। প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ বছর নিষ্ক্রিয় থাকলেও পরে ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান প্লেটের চাপের কারণে পুনরায় সক্রিয় হয়।

ইন্ডিয়ান প্লেট প্রতি বছর প্রায় ৪.৬ সেন্টিমিটার করে ইউরেশিয়ান প্লেটের নিচে প্রবেশ করছে।

আক্তারুল আহসান জানান, নতুন গবেষণার বিস্তারিত ফলাফল ডিসেম্বরের লুইজিয়ানার আন্তর্জাতিক জিওফিজিক্যাল সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে এবং নিবন্ধটি বিশ্বখ্যাত জার্নালে প্রকাশিত হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, এই অঞ্চলে আরও ফাটলরেখা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ফাটলরেখা থাকা মানেই সর্বদা উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প হবে, তা বলা যায় না ।

এম

Link copied!