পড়াশোনার অদম্য আগ্রহ দৃষ্টিহীন তিন বোনের

  • লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১, ০১:২৩ পিএম
পড়াশোনার অদম্য আগ্রহ দৃষ্টিহীন তিন বোনের

চট্টগ্রাম : উপজেলার চুনতি সোলতান মাওলানা পাড়ার দৃষ্টিহীন তিন বোনের জীবন সামনে হাজারো বাধায় আটকা পড়েছে। ১১ বছর ধরে বাবা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেজ নুরুল আমিন নিখোঁজ। মা ফরিদা বেগমের টিউমার। অর্থাভাবে কারো অপারেশন করা যাচ্ছে না। ছোট্ট একখানি ঘর। ঘরের ছাউনির টিন ফুটো। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের ভেতরে পানি গড়িয়ে পড়ে।

মোরশেদা, তাসমিন ও আসমা তিন বোন। মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান। তিন বোনসহ তারা একই পরিবারের চার সদস্য দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। এমন প্রতিকূল অবস্থায়ও তিন বোন পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। দৃষ্টিহীন চোখ পড়াশোনার আগ্রহ থেকে একটুও দমাতে পারেনি তাদেরকে। ব্রেইল পদ্ধতিতে (দৃষ্টিহীনদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা) পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে এ তিন শিক্ষার্থী। প্রবল ইচ্ছাশক্তির জোরেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেছে তারা।

মোরশেদা সরকারি সিটি কলেজে স্নাতক (বিএ) ২য় বর্ষে, তাসমিন ও আসমা হাজেরা তাজু ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। নিদারুণ কষ্টে তাদের যাপিত জীবন। তাদের সীমাহীন কষ্ঠের জীবন সইতেও পারছে না, বইতেও পারছে না।

তাদের ঘরে চাল আছে বাজার নেই, বাজার আছে লাকড়ি নেই, লাকড়ি আছে রান্না করার ক্ষমতা নেই, জীবন যেন আর চলে না। তারপরও তারা শিক্ষার জন্যে জীবনযুদ্ধে এক লড়াকু সৈনিক। সীমাহীন দুর্ভোগের মাঝে একটু নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘর দাবি করেন তারা।

মোরশেদা বলেন, আমরা তিন বোন চট্টগ্রাম শহরে থেকে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছি। পড়াশুনা চালিয়ে যেতে সমাজের বিত্তবানসহ সরকারি সহযোগিতা আমাদের খুবেই প্রয়োজন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম জানান, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তিন বোন প্রতিকূল অবস্থায়ও পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের সমাজের জন্য বিরল দৃষ্টান্ত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবীব জিতু বলেন, মেধাবী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তিন বোনের কথা জেনেছি। তাদের পড়াশুনা চালিয়ে নিতে উপজেলা প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Link copied!