• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরকারি কর্মচারীদের টাইম স্কেল যেভাবে কার্যকর হবে


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০, ১০:০৬ পিএম
সরকারি কর্মচারীদের টাইম স্কেল যেভাবে কার্যকর হবে

ঢাকা: যেসব সরকারি কর্মচারীর চাকরির বয়স ১০ বছর হয়ে গেছে কিন্তু পদোন্নতি বা টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড একবারও পাননি, তাদের ক্ষেত্রে উচ্চতর গ্রেড দিতে কোনো বাধা নেই। তাদেরকে উচ্চতর গ্রেড দেয়ার জন্য হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, যেসব সরকারি কর্মচারী একই পদে ১০ বছর চাকরি করার পর একবারও পদোন্নতি পাননি, তাদের ক্ষেত্রে উচ্চতর গ্রেড দেয়ার ক্ষেত্রে গত ১৬ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের মতামত চেয়ে চিঠি দেয় হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। এর প্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ গত ১৩ সেপ্টেম্বর হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এর অনুচ্ছেদ ৭ (১) এর অধীনে উচ্চতর গ্রেড প্রদানের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণে কোনো বাধা নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়কে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

তবে ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর অর্থ বিভাগের এক পরিপত্রে বলা হয়েছিল, একই পদে কর্মরত কোনো সরকারি কর্মচারী দুই বা তার চেয়ে বেশি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে থাকলে নতুন পে স্কেল অনুযায়ী তিনি উচ্চতর গ্রেড পাবেন না। তবে এরই মধ্যে একটি মাত্র টাইম স্কেল অথবা সিলেকশন গ্রেড পেলে নতুন স্কেলে শুধু একটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন।

ওই পরিপত্রের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিজীবীরা রিট করলে অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ বিষয়টি এখন হাইকোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। তাই সরকারি কর্মচারী দুই বা তার চেয়ে বেশি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে থাকলে নতুন পে স্কেল অনুযায়ী তিনি উচ্চতর গ্রেড কায়টা পাবেন এসব বিষয়ে কোনো মতামত দেয়নি অর্থ বিভাগ। এ বিষয়ে আপিল বিভাগ যতদিন পর্যন্ত কোনো রায় না দিতে পারে, অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।

জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে নিচের স্তরের কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ সীমিত। এসব পদোন্নতি বঞ্চিতদের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বহুল আলোচিত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের পুরনো প্রথা জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এ বাতিল করা হয়। তবে নতুন বেতনস্কেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড প্রথা প্রবর্তন করা হয়। বেতনস্কেলে ২০১৫ এর অনুচ্ছেদ ৭ (১) অনুযায়ী কোনো কর্মচারী একই পদে ১০ বছর চাকরি করার পর পদোন্নতি না পেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন। এর মধ্যে একটি পাবেন চাকরির ১০ বছর পর ১১তম বছরে। অপরটি ১৬ বছর পর ১৭তম বছরে।

মূল পে স্কেলে এ বিধান করা হলেও এ সুবিধা কীভাবে দেয়া হবে সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। এ প্রেক্ষাপটে মূল পে স্কেলে দেয়া উল্লিখিত নিয়ম কার্যকর করতে স্পষ্টীকরণের ব্যাখ্যা দিয়ে ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর অর্থ বিভাগ একটি পরিপত্র জারি করে। কিন্তু ওই পরিপত্রের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিজীবীরা রিট করে। এরপর সরকারি চাকরিজীবীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার বিষয়ে অর্থ বিভাগের দেয়া পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেছেন, উচ্চতর গ্রেডে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের স্পষ্টীকরণ করে দেয়া ব্যাখ্যা মূল পে স্কেলের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ফলে এ সংক্রান্ত পরিপত্রটি অবৈধ। পরে অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে আপিল করলে বিষয়টি বর্তমান আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!