• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
করোনা মহামারী

প্রবাসফেরত পৌনে ৩ লাখ


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৬, ২০২০, ১২:৩১ পিএম
প্রবাসফেরত পৌনে ৩ লাখ

ঢাকা : করোনা মহামারীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী কর্মীদের ফিরে আসা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত আসছেন তারা। চলতি বছরের গত ১ এপ্রিল থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২ লাখ ৭২ হাজার ১৮৫ জনেরও বেশি প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪১ হাজার ১৫২ জন এবং নারী ৩১ হাজার ৩৩ জন। বেশিরভাগই (৫৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ) ফিরেছেন সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।

বৈধ পাসপোর্টে ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪০৪ জন এবং আউটপাসের মাধ্যমে ৩৬ হাজার ৭৮১ জন ফিরেছেন বলে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। ফিরে আসা শ্রমিকদের অধিকাংশই বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন প্রবাসে।

এছাড়া করোনার কারণে কাজ না থাকা, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া, প্রতারিত হওয়া এবং ভিসার মেয়াদ শেষ বা আকামা (কাজের অনুমতি) না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ফেরত আসতে হয়েছে তাদের। অনেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফিরে যেতে পারবেন জানালেও সিংহভাগেরই ফিরে যাওয়া অনিশ্চিত।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে সৌদি ও আমিরাত (ইউএই) থেকে সবচেয়ে বেশি ফিরেছেন প্রবাসী কর্মীরা। এই দুটি দেশ থেকে এসেছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৫ জন (৫৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ)।

প্রতিদিনই এ সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ১ এপ্রিল থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীকর্মীদের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট ২৮টিসহ অন্যান্য দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৭৬ হাজার ৯২২ কর্মী সৌদি থেকে ফিরেছেন (পুরুষ ৬৩ হাজার ৬৫ জন ও নারী ১৩ হাজার ২৭০ জন)। আমিরাত থেকে ৭১ হাজার ৯০৩ জন (পুরুষ ৬৫ হাজার ৬৮৯ জন ও নারী ৬ হাজার ২১৪ জন) ফেরত আসেন। এসব প্রবাসী কর্মী জানায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের পুনরায় ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলে ফেরত পাঠিয়েছে নিয়োগকর্তারা।

চলমান মহামারীতে মালদ্বীপ থেকে ১৩ হাজার ২২৪ জন (পুরুষ ১৩হাজার ১০০ ও নারী ১৪৪ জন) দেশে ফেরত এসেছেন। পর্যটননির্ভর দেশটিতে করোনার কারণে সেখানে কাজ নেই। তাই তাদের ফেরত পাঠিয়েছেন নিয়োগকর্তারা। সিঙ্গাপুর থেকে ফিরেছেন ৫ হাজার ৩১১ জন (পুরুষ ৫ হাজার ২৪৫ ও নারী ৬৬ জন)। চুক্তির মেয়াদ নবায়ন না হওয়ার কারণে তারা ফিরে আসতে বাধ্য হন। ওমান থেকে এসেছেন ১৬ হাজার ৯৫ জন (পুরুষ ১৩ হাজার ৯৪৮ জন ও নারী ২ হাজার ১৪৭ জন)। তারা সবাই বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস নিয়ে দেশে ফিরেছেন। কুয়েত থেকে ফিরেছেন ১১ হাজার ৯৫২ জন (পুরুষ ১১ হাজার ৬৫৫ জন ও নারী ২৯৭ জন)। এদের অনেকেই আকামা বা ভিসার মেয়াদ না থাকা কিংবা অবৈধ হওয়ায় সাধারণ ক্ষমার আওতায় ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। দেশটি থেকে কারাভোগ শেষেও ফিরেছেন অনেকে।

বাহরাইন থেকে এসেছেন ২ হাজার ২৩ জন। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৮৪৮ জন পুরুষ ও ১৭৫ জন নারী। এদের বেশিরভাগই বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে আউটপাস নিয়ে দেশে এসেছেন।

এছাড়া অসুস্থতা কিংবা চাকরিচ্যুতির কারণেও ফিরতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। কাজ না থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরত এসেছেন ৭১ জন। তাদের সবাই পুরুষ। কাতার থেকে এসেছেন ২৯ হাজার ৬৫৫ জন (পুরুষ ২৬ হাজার ৮২২ জন ও নারী দুই হাজার ৮৩৩ জন)। তারাও ফিরেছেন কাজ না থাকার কারণে।

মালয়েশিয়া থেকে এসেছেন ১২ হাজার ৩৬৮ জন (পুরুষ ১১ হাজার ৮৬৯ জন ও নারী ৪৯৯ জন)। তারাও কাজ না থাকার কারণে ফেরত এসেছেন। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ২২০ জন এবং তাদের মধ্যে পুরুষ ২১৭ জন ও নারী ৩ জন। থাইল্যান্ড থেকে এসেছেন ৮৯ জন (পুরুষ ৭৮ জন ও নারী ১১জন)। কাজ না থাকার তারা ফেরত এসেছেন। কাজ না থাকায় মিয়ানমার থেকে এসেছেন ৩৯ জন পুরুষ কর্মী। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় জর্দান থেকে এসেছেন ২ হাজার ২০৪ জন কর্মী (পুরুষ ৪০৮ জন ও নারী ১ হাজার ৭৯৬ জন)। তাদের সবাই পোশাক শ্রমিক। প্রতারিত হয়ে ভিয়েতনাম থেকে এসেছেন ১২১ জন পুরুষ কর্মী। কাজ না থাকায় কম্বোডিয়া থেকে ১০৬ জন পুরুষ কর্মী এসেছেন।

ইতালি থেকে এসেছেন ১৫১ জন ফেরত পুরুষ কর্মী। এছাড়া ৬ জুলাই বাংলাদেশে থেকে যাওয়া ১৫১ জন কর্মীকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। কাজ না থাকায় ইরাক থেকে ফেরত এসেছেন ১০ হাজার ১৬৯ জন (পুরুষ ১০ হাজার ১০৯ জন ও নারী ৬০ জন)। কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শ্রীলঙ্কা থেকে এসেছেন ৫৫৪ জন পুরুষ কর্মী। একই কারণে মরিশাস থেকে এসেছেন ৪৫২ জন (পুরুষ ১৪০ জন ও নারী ৩১২ জন)। রাশিয়া থেকে এসেছেন ১০০ জন পুরুষ কর্মী। তাদের ফিরে আসার কারণ জানা যায়নি।

তুরস্ক থেকে ফিরেছেন ১০ হাজার ৪৫৩ জন। (পুরুষ ৯ হাজার ৭৪০ জন ও নারী ৪১৩ জন)। কাজ না থাকার তারা ফেরত এসেছেন। কাজ হারানো এবং আউটপাস নিয়ে লেবানন থেকে ফিরেছেন ৭ হাজার ১৬৯ জন (পুরুষ ৪ হাজার ৭১৬ জন ও নারী ২ হাজার ৪৫৩ জন)। নেপাল থেকে এসেছেন ৫৫ জন (পুরুষ ৪০ জন ও নারী ১৫ জন)। তাদের ফিরে আসার কারণ জানা যায়নি। হংকং থেকে এসেছেন ১৬ জন (পুরুষ ১২ জন ও নারী ৪ জন)। কারণ জানা যায়নি।

জাপান থেকে এসেছেন ৮ জন পুরুষ কর্মী। তারা তিন বছর মেয়াদে আইএম জাপান প্রকল্পের মাধ্যমে যাওয়া প্রথম ব্যাচের এ কর্মীরা ছুটিতে এসেছেন। ব্রিটেন থেকে এসেছেন ১৩৪ জন। তাদের মধ্যে ১১৩ জন পুরুষ ও ২১ জন নারী। তাদের আসার কারণ জানা যায়নি। লিবিয়া থেকে ফিরেছেন ৪৫৫ জন পুরুষ কর্মী। কারণ জানা যায়নি। এছাড়া অন্যান্য কয়েকটি দেশ থেকে মোট ১৪৬ জন ফেরত আসেন। তাদের সবাই পুরুষ। তাদের ফিরে আসার কারণও জানা যায়নি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!