• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাপিয়া অপবাদ দেওয়ার পরও আমিই ভিলেন


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৯, ২০২১, ০৭:৪২ পিএম
পাপিয়া অপবাদ দেওয়ার পরও আমিই ভিলেন

ফাইল ছবি

ঢাকা: লকডাউনের মধ্যে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ঘটনায় একে অপরকে দায়ী করেছে পুলিশ এবং চিকিৎসকগণ।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সাঈদা শওকত জেনিকেই দায়ী করে পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন বলছে, ‘মন্ত্রণালয়ের বৈধ আদেশ লঙ্ঘন এবং কর্তব্যরত বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিকট উক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন জোর দাবি জানাচ্ছে।’

অপরদিকে লকডাউনে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় একের পর হেনস্থার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে চিকিৎসকরা। অন্তত পাঁচ জন চিকিৎসকের পরিচয় পাওয়ার পরও পুলিশ তাদের সঙ্গে অন্যায্য আচরণ আর জরিমানার ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে সরকারকে চিঠিও দেয়া হয়েছে।চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন যোগাযোগ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গেও। নেতারা বলছেন, মহামারির এই সময়ে তারা কর্মবিরতির মতো কঠোর কর্মসূচিতে যেতে চান না। তবে এভাবে চলতে থাকলে প্রতীকী বিরতির কথাও ভাবা হচ্ছে।

এদিকে সেদিনের ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডাক্তার জেনি।

তিনি বলেন, ‘ভিডিওটি যেখানে শুরু হয়েছে ঘটনার শুরু তারও আগে। ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে উত্তেজিত করেছেন। আমাকে পাপিয়া, পাপিয়া বলে অপবাদ দিয়েছেন। অথচ এখন আমিই ভিলেন। সবখানে আমার সমালোচনা হচ্ছে।’

‘ম্যাজিস্ট্রেট তখন আমার গাড়ির সামনে এসে গাড়ি সাইডে নিতে বলেন। তর্কের একপর্যায়ে আমি শুনলাম পাপিয়া পাপিয়া বলা হলো। তখন আমি আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ি। তাদের প্রত্যেকের আচরণ প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল। অথচ যে আংশিক ভিডিও ছাড়া হলো তাতে আমার ভূমিকাগুলোই দেখানো হলো।’

ডা. জেনি বলেন, ‘আমি বিএসএমএমইউতে সকাল ৮টা থেকে ডিউটি শুরু করি। দুপুরে অফিস শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম। পুরোটা সময় পিপিই পরা ছিল। বাসায় ফেরার সময় মানসিকতাটা কেমন থাকবে, আপনিই বলেন। ওই অবস্থায় গাড়ি আটকানো হলো। আমার কাছে মুভমেন্ট পাস চাওয়া হলো। তাদের বলি, আমি ডাক্তার এবং ডিউটি করে এসেছি।’

‘তখন তারা আইডি কার্ড দেখতে চাইলে বলি, আমি আইডি কার্ড আনতে ভুলে গেছি। তখন তারা বলেন, আইডি কার্ড দেখাতেই হবে। তখন আমি গাড়ি থেকে নেমে এলাম। শরীরে অ্যাপ্রন ছিল। অ্যাপ্রনে বিএসএমএমইউর লোগো ছিল। গাড়ি থেকে নেমে আমি আমার গাড়িতে লাগানো স্টিকার দেখাই। স্টিকারে সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র ছিল। সেটাতে আমার ছবিও ছিল। আমি বারবার দেখানোর পর ম্যাজিস্ট্রেট বললেন, আমরা এগুলো দেখতে রাজি নই। আইডি কার্ড দেখান।’

ডা. জেনি বলেন, ‘অনেক প্রমাণ দেওয়ার পরও তিনি রাজি হচ্ছিলেন না। তখন আমি উত্তেজিত হই এবং গাড়িতে গিয়ে বসি। ম্যাজিস্ট্রেট তখন আমার গাড়ির সামনে এসে গাড়ি সাইডে নিতে বলেন। তর্কের একপর্যায়ে আমি শুনলাম পাপিয়া পাপিয়া বলা হলো। তখন আমি আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ি। তাদের প্রত্যেকের আচরণ প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল। অথচ যে আংশিক ভিডিও ছাড়া হলো তাতে আমার ভূমিকাগুলোই দেখানো হলো।’

‘নারী ও মাদককারবারির সঙ্গে জড়িত কুখ্যাত পাপিয়ার সঙ্গে আমাকে তুলনা করা হয়েছে। এটা কোনো কথা! আমি মেনে নিতে পারছি না। এর ন্যায়বিচার চাই।’

ডা. জেনি বলেন, “ভিডিওটি খেয়াল করলে বুঝবেন, আমি বারবার ‘আমরা, আমরা’ বলেছি। আমি আমার নিজের কথা বলিনি। গোটা ডাক্তার সমাজের ভোগান্তির কথা বলেছি। চলমান করোনাযুদ্ধে মোট ১৩০ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। ১৩০ পরিবার এতিম হয়েছে। অথচ এখন আমরা ভিলেন।”

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!