• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের ক্ষতি এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর ৭ পরামর্শ


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ৪, ২০২১, ০৭:২৭ পিএম
অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের ক্ষতি এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর ৭ পরামর্শ

ফাইল ফটো

ঢাকা: অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের ক্ষতির বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করে এ সংক্রান্ত সাতটি পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৪ মে) ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (জিএলজি-এএমআর) এ ধারণ করা এক বক্তব্যে এ পরামর্শ দেন সরকার প্রধান।

প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সাত পরামর্শ হলো:

০১. এআরসি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় লক্ষ্য নির্ধারণ এবং ব্যাপক পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি বিবরণী ব্যবস্থাপনা।

০২. অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতে বিভিন্ন স্তরে গাইডলাইন ও নীতিমালা তৈরি করা।

০৩. কার্যকর ও ব্যাপক এএমআর নজরদারি এবং সামর্থ্য বৃদ্ধি নিশ্চিতে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং কারিগরি সহযোগিতা ভাগাভাগি।

০৪. প্রযুক্তি স্থানান্তর ও মালিকানা ভাগাভাগির মাধ্যমে সাশ্রয়ী ও কার্যকর এন্টিবায়োটিক এবং অন্যান্য মেডিক্যাল সুযোগ-সুবিধার ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা।

০৫. এএমআর স্পেসিফিক এবং এএমআর সেনসিটিভ কাজে পর্যাপ্ত ও টেকশই অর্থায়ন বিশেষ করে স্বল্প ও মধ্য আয়ের রাষ্ট্রের দিকে বিশেষ নজর দেয়া।

০৬. এএমআর নিয়ন্ত্রণে সরকারি বেসরকারি অংশিদারত্বের মাধ্যমে বিনিয়োগ

০৭. ব্যাপক, সাশ্রয়ী এবং টেকশই সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা পরিধি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের সময়ের জনস্বাস্থ্য সংকটের সীমা নির্ধারণ করেছে, যা এরই মধ্যে ৩০ লাখেরও বেশি প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের রূপে আসন্ন মহামারি বিশ্ব স্বাস্থ্যখাতে এর চেয়েও বেশি ক্ষতি করতে পারে।

‘এটা শুধু মানুষ, প্রাণী ও উদ্ভিদ স্বাস্থ্যকেই বিপন্ন করছে না বরং খাদ্য নিরাপত্তা এবং এসডিজি অর্জনের উন্নয়নকে ঝুঁকিতে ফেলবে।’

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বলতে মূলত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সকে বোঝানো হয়। মাত্রাতিরিক্ত বা নিয়ম না মেনে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের ফলে, শরীরে জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। ফলে পরে শরীরে ওই অ্যান্টিবায়োটিক আর কার্যকর হয় না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে (এএমআর) বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভয়াবহ হুমকি হিসেবে এরই মধ্যে চিহ্নিত করেছে। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, বৈশ্বিক শীর্ষ ১০ জনস্বাস্থ্যঝুঁকির একটি হলো এএমআর।

দেশে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের বিষয়ে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা গৃহস্থালি পর্যায়ে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা ছয় বছরের ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ও ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স কনটেইনমেন্ট- এআরসি গ্রহণ করেছি।

‘এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হলো মানব স্বাস্থ্য, প্রাণীসম্পদ, মৎসসম্পদ এবং কৃষিখাতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের যৌক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা। আমরা ২০১৯ সাল থেকে ডব্লিউএইচও জিএলএএসএস প্ল্যাটফর্মের কাছে এএমআর ডাটা দিয়ে আসছি। এর বাহিরেও আমরা সাধারণ মানুষকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বিষয়ে সচেতন করতে গণমাধ্যমকেও এ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স ভৌগলিক অবস্থান এবং আর্থ সামাজিক অবস্থার ঊর্ধ্বে যে কাউকে আক্রমণ করতে পারে। এএমআর নিয়ন্ত্রণে সংক্রমণ রোধ ও কন্ট্রোল আইপিসি ব্যবস্থা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

‘এটা সম্ভব হবে ২০১৫ সালের গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান অন এএমআর এবং ২০১৬ সালের ইউএন পলিটিক্যাল ডিক্ল্যারেশন অন এএমআর এর প্রয়োগ নিশ্চিতের মাধ্যমে।’

এরআগে গত ২৯ এপ্রিল এএমআর বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের ডায়ালগে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করে চারটি পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

এগুলো হলো আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে কম ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বহুপক্ষীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ; উত্তম উৎপাদন, পরীক্ষাগার অনুশীলন এবং নজরদারি কাঠামো; প্রয়োজন অনুসারে প্রযুক্তি স্থানান্তর ও মালিকানা ভাগাভাগির মাধ্যমে সাশ্রয়ী ও কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত; অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে টেকসই অর্থায়ন; রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং সদস্য দেশগুলোর অংশীদারত্বের মাধ্যমে এএমআর মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি।

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!