• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিলাস-বসন এসব দিকে দৃষ্টি ছিল না কামালের


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ৫, ২০২১, ০২:৪৪ পিএম
বিলাস-বসন এসব দিকে দৃষ্টি ছিল না কামালের

ঢাকা: চুয়াত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর একটি চক্রান্ত করে কামালকে গুলি করা হয়েছিল। তাকে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছিল। কিন্তু সে যখন বেঁচে যায় তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হয় বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, শেখ কামাল অত্যন্ত সাদাসিধে জীবন-যাপন করত। অথচ সে রাষ্ট্রপতির ছেলে বা প্রধানমন্ত্রীর ছেলে, জাতির পিতার ছেলে। কখনো বাবা প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি সেজন্য অর্থ সম্পদের দিকে তার কোনো দৃষ্টি ছিল না। ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকে তার কোনো দৃষ্টি ছিল না।

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) ‘শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ এবং ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২১ প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শহীদ শেখ কামাল অডিটোরিয়ামে যুক্ত ছিলেন।

এসময় ছোট ভাই শেখ কামালের ৭২তম জন্মদিনে তাকে স্মরণ করতে গিয়ে বার বার চোখ ভেজালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তুলে ধরলেন নানা স্মৃতি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে গড়ে তোলা, দেশের মানুষের পাশে থাকা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সাংস্কৃতিক অঙ্গন এগুলোই ছিল তার কাছে সবচেয়ে বড়। সে একজন সংস্কৃতি মনা, আবার রাজনীতিবিদ। কখনো বিলাস-বসন এসব দিকে তার দৃষ্টি ছিল না। এটা আমার বাবার শিক্ষা ছিল, মায়ের শিক্ষা ছিল। বাণিজ্য, অর্থ-সম্পদ এসব দিকে তার নজরই ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে জাতির জন্য আমার বাবা এত ত্যাগ স্বীকার করলেন, বছরের পর বছর জেল খাটলেন, সংগ্রাম করে এই দেশকে স্বাধীন করলেন, বাঙালি জাতিকে পতাকা দিলেন- সেখানে এই দেশের কিছু সংখ্যক মানুষই ষড়যন্ত্র করে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করল।

তিনি বলেন, সবচেয়ে ট্রাজেডি কামালের জন্য- যে নূর আর কামাল একসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কর্নেল ওসমানির এডিসি হিসেবে কাজ করেছে। যখন বাসা আক্রমণ করে কামাল নিচের বারান্দায় চলে যায়। ও যখন দেখে যে নূর-হুদা এরা একসঙ্গে ঢুকছে ও তাদেরকে বলেছিল যে আপনারা এসে গেছেন? খুব ভালো হয়েছে। দেখেন বাসা কারা আক্রমণ করেছে। এই কথা শেষ করতে পারেনি, ওই নূরের হাতের অস্ত্রই গর্জে ওঠে। ওরা ওখানেই কামালকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।

শেখ হাসিনা বলেন, এত বড় বিশ্বাস ঘাতকতা এই বাংলাদেশে ঘটে গেছে। ১৫ আগস্ট যদি আজ বাঙালির জীবনে না ঘটতো তাহলে, এই বাঙালি অনেক আগেই বিশ্বে মর্যাদা নিয়ে চলত। এই হত্যার পর বাংলাদেশকে ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেটা টিকে নাই। 

তিনি বলেন, আমার আব্বা যেমন সারাজীবন এই দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, সন্তান হিসেবে আমরাও। একদিকে যেমন পিতৃ স্নেহ বঞ্চিত হয়েছি, কিন্তু আমরা কখনো সেই কষ্টকে কষ্ট মনে করিনি। আমার মা সেটা করতে দেননি। অতিরিক্ত কোনো চাওয়া আমাদের ছিল না। খুব সাধারণভাবে জীবন-যাপন করা, একটি আদর্শ নিয়ে চলা এবং দেশকে ভালোবাসা, দেশের মানুষকে ভালোবাসা। দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করাই আমাদের শিক্ষা। সেই শিক্ষাই কামাল সব সময় অনুসরণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আর রেহানা দুই জনে বিদেশে ছিলাম, তাই বেঁচে গিয়েছি। কিন্তু হারিয়েছি আমাদের সবাইকে। এখন বাংলাদেশের মানুষের জন্য যদি কিছু করে যেতে পারি, সেটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। 

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!