• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ


শব্দনীল অক্টোবর ১৯, ২০২১, ০৬:৫১ পিএম
সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

ছবি : সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ

ঢাকা  : ‘জাগো মানুষ। রুখে দাও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস’ এই শ্লোগান ধারণ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বিকাল পাঁচটায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-সাংবাদিকদের যৌথ উদ্যোগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এই সমাবেশ আয়োজিত হয়। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজামণ্ডপ, বাড়িঘর, দোকানপাটে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা, ভাংচুর, হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার এবং বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী ও সাংবাদিকেরা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘কুমিল্লার এক পূজামণ্ডপে কোরান শরীফ অবমাননা করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে যেভাবে পূজামণ্ডপে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে, তা গভীর ষড়যন্ত্রমূলক। এর রেশ ধরে চাঁদপুর, নোয়াখালী, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী।’

তারা আরও বলেন, ‘সরকারের বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। আমরা দেখেছি অতীতেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর হামলা করা হয়েছে, যার একটিরও সঠিক তদন্ত হয়নি, অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি।

বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। একাত্তরে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকল ধর্মসম্প্রদায়ের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী গত পঞ্চাশ বছরে প্রতিটি সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আপস-আঁতাত করে ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নির্লজ্জ প্রতিযোগিতায়
যেতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিসর্জন দিয়েছে সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ উপড়ে ফেলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে।’

সমাবেশে কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি ৮ (আট) দফা দাবি উত্থাপন করা হয় ।

দাবিগুলো হচ্ছে-

১. এবারের দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি করা।

২. রামু, নাসিরনগর , শাল্লা , কুমিল্লা, হাজীগঞ্জ , নোয়াখালী ও রংপুরে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার প্রকৃত কারণ জনসম্মুখে প্রকাশ করা ও প্রতিটি ঘটনার বিচার করা। এবং অতীতে সাম্প্রদায়িক হামলার হোত্য অভিযুক্ত অনেক ব্যক্তিকে রাজনৈতিক দলগুলতে প্রকাশ্যে কর্মরত দেখা যায়। তাদেরকে চিহ্নিত করে বহিস্কার ও বিচার করা।



৩. ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ধর্মসভা তথা ওয়াজ মাহফিলে সাম্প্রদায়িক ও নারীবিদ্বেষমূলক বক্তব্য বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া ।

৪. এ স্কুল-কলেজের পাঠ্যপুস্তক থেকে সাম্প্রদায়িক পাঠ বিলুপ্ত করে অসাম্প্রদায়িক পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে।

৫. বহু জাতি এবং বহু ধর্মসম্প্রদায়ের এই দেশের সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করা।

৬. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সরকারি উদ্যোগে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা ।

৭. সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সারা দেশের সংস্কৃতিচর্চার (নাটক, গান, নত্যু, যাত্রাপালা, পালাগান, বাউলগান) প্রসার
ঘটোনা। পাশাপাশি স্বাধীন সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে সরকারি পৃষ্টপোষকতায় প্রাণিত করা ও

৮. দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে পাঠাগার ও সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপন করা।

Wordbridge School
Link copied!