• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-খুলনা-কলকাতা ট্রেন চলাচল শুরু রোববার


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৮, ২০২২, ০৬:২৯ পিএম
ঢাকা-খুলনা-কলকাতা ট্রেন চলাচল শুরু রোববার

ঢাকা : প্রায় ২৭ মাস পর ফের চালু হচ্ছে ঢাকা-কলকাতা ও ঢাকা-জলপাইগুড়ি আন্তর্জাতিক রেলপথ। 

রোববার (২৯ মে)  ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস, একইদিন খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু করবে। 

আর আগামী ১ জুন ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি লাইনে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন হবে। দু’দেশের রেলপথমন্ত্রী এ ট্রেন দুটি উদ্বোধন করবেন।

এ উপলক্ষে গত ২৩ মে সোমবার থেকে কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তর্জাতিক ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। 

ছাড়া রেলপথের ভিসাও দেয়া হচ্ছে। করোনার মহামারির কারণে বাংলাদেশ-ভারত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয় ২০২০ সালের ২৪ মার্চ থেকে। এ সময়ে দু’দেশের মধ্যে সড়ক ও আকাশপথে যাত্রী ভ্রমণ থাকলেও রেলপথে ছিল না। এতে চরম বিপাকে পড়ে উভয় দেশের সাধারণ মানুষ, যাদের অধিকাংশই ট্রেনে ভ্রমণ করতেন।
 
এ বিষয়ে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, আন্তর্জাতিক ট্রেন চলাচলের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি করোনার মধ্যেই গত ২৭ মার্চ উদ্বোধন হয়েছিল। কিন্তু যাত্রী চলাচল শুরু হয়নি। আগামী ১ জুন বুধবার ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি রুটে নতুন মাত্রায় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটির উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি জানান।

সরদার সাহাদাত আলী জানান, ২৭ মাস বন্ধ থাকার পর আগামীকাল ২৯ মে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং একইদিন খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি চালানো হবে। ইতোমধ্যে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন। ২৯ মে ও ১ জুন ট্রেন তিনটি চালাতে তারা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। গত ১৮ মে বুধবার ভারত চিঠি দিয়ে ট্রেন তিনটি চালুর করার বিষয় জানিয়েছে।
 
তিনি আরো জানান, ট্রেন তিনটি চালানোর আগে উভয় দেশে টিকিট বিক্রির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে গত ২৩ মে আনুষ্ঠানিক টিকিট বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রথম দিন কলকাতা থেকে ঢাকার পথে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি ট্রেন (রেক) দিয়ে এর যাত্রা শুরু হচ্ছে। 

অপরদিকে কলকাতা থেকে খুলনার পথে বন্ধন এক্সপ্রেস আসবে ভারতীয় রেলের একটি ট্রেন নিয়ে। মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছেড়ে ঢাকার পথে আসবে ভারতের ট্রেন নিয়ে। 

অর্থাৎ মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস ভারত ও বাংলাদেশের রেক সমন্বয়ে চলাচল করবে। আর মিতালী এক্সপ্রেস চলবে শুধু ভারতের রেক দিয়ে। মিতালী ভারতের ট্রেন দিয়েই দুই প্রান্তে চলাচল করবে।

এদিকে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন সূত্রে জানা যায়, উল্লিখিত সময়ে ট্রেনগুলো চালাতে ভারত পুরোপুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রেলপথে ভিসা প্রদান বিষয়টি নিয়েও কাজ শুরু করেছে হাইকমিশন। 

এদিকে ভারতে ভ্রমণকারী বাংলাদেশি যাত্রীদের প্রথম পছন্দ ট্রেন ভ্রমণ। দু’দেশের মধ্যে ট্রেন চালু হচ্ছে- এমন খবরে ট্রেনে ভ্রমণ ইচ্ছুক যাত্রীদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।
 
ঢাকা-কলকাতার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু হয় ২০০৮ সাল থেকে। বন্ধ হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার বাদে সপ্তাহের সব দিনই এই ট্রেন চলাচল করত। আগামীকাল ২৯ মে থেকে আগের মতোই চলাচল করবে। খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হয় ২০১৭ সালে। 

বাংলাদেশ থেকে বৃহস্পতিবার ও রোববার দুদিন এই ট্রেন ছেড়ে যাবে। ভারত থেকে আসবে দুদিন। রেলপথ মন্ত্রণালয় বলছে, করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর ২০২০ সালের ২৪ মার্চ থেকে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিকে গত ২৮ এপ্রিল ঢাকা সফরে এসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও জানিয়েছিলেন, শিগগির দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রেনের যাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ১৮ মে বুধবার ভারতীয় রেলওয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়েকে চিঠি দিয়ে তিনটি ট্রেন চালুর তারিখ জানানো হয়।

রেলওয়ে অপারেশন দপ্তর জানায়, মিতালী এক্সপ্রেসে ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত এসি বার্থের ভাড়া হবে ৪ হাজার ৯০৫ টাকা। এসি সিটের ভাড়া ৩ হাজার ৮০৫ টাকা। আর এসি চেয়ারের ভাড়া ২ হাজার ৭০৫ টাকা।

২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিলে উভয় দেশে চলাচল শুরু করে মৈত্রী এক্সপ্রেস। এর মাধ্যমে ৪৩ বছর পর দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর। খুলনা-কলকাতা রেলপথের দূরত্ব ১৭২ কিলোমিটার। এ রুটের যাত্রীপ্রতি ট্রেন ভাড়া ট্রাভেল ট্যাক্সসহ (৫০০ টাকা) এসি সিট দুই হাজার পাঁচ টাকা ও এসি চেয়ার এক হাজার ৫০৫ টাকা।

ঢাকা-কলকাতার দূরত্ব ৩৭৫ কিলোমিটার। এ রুটের যাত্রীপ্রতি ট্রেন ভাড়া ট্রাভেল ট্যাক্সসহ (৫০০ টাকা) এসি সিট তিন হাজার ৫০৫ টাকা ও এসি চেয়ার দুই হাজার ৫০৫ টাকা। উভয় দেশে যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকলেও করোনাকালে বাংলাদেশ-ভারতে রেলপথে পণ্য পরিবহন করা হয়। 

২০২০-২১ অর্থবছরে ভারত থেকে রেলপথে পণ্য আমদানি হয় ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন। এর আগের (২০১৯-২০) অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৩৪ হাজার মেট্রিক টন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!