• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সার্বজনীন পেনশন আইনের খসড়া অনুমোদন


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২০, ২০২২, ০৪:২০ পিএম
সার্বজনীন পেনশন আইনের খসড়া অনুমোদন

ঢাকা: সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বেকারত্ব ও রোগাক্রান্তসহ কয়েকটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে এ আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেয়া হয়। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (২০ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সবাই এ আইনের আওতায় থাকবেন।

বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন নাগরিকরা। পেনশনাররা আজীবন পেনশন পাবেন। তবে বিশেষ বিবেচনায় বয়স্ক লোকদের জন্য ৫০ বছরের অধিক কেউ থাকলে বিবেচনায় নেওয়া হবে। পেনশন পেতে কমপক্ষে ১০ বছর নিয়মিত চাঁদ দিতে হবে।

একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে চারজন সদস্য নিয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এছাড়াও, ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে।

উল্লেখ্য, দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনতে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা’ প্রবর্তন করতে যাচ্ছে সরকার। বলা হচ্ছে, এটা জাতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসের মধ্যে এটি কার্যকর করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। চলতি বাজেট অধিবেশনে এটি পাসের পর পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করে দ্রুত কাজ শুরু করতে চায় সরকার। তবে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে এর আওতাভুক্ত করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চলতি বাজেট অধিবেশনে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২২’ পাস করতে চায় সরকার। এটি পাসের পর অথরিটি গঠন করা হবে, এরপর নিয়োগ করা হবে জনবল। পরে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়াসহ সব কার্যক্রম শেষে আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে এটি শুরু করা হবে। তবে প্রথমদিকে এটি পরীক্ষামূলকভাবে সুনির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে চালু হবে, বিস্তৃত করা হবে পরে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সর্বজনীন পেনশনের একটি সিস্টেম তৈরি করতে হবে। এখানে লোক নিয়োগের বিষয় রয়েছে। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। এরপর বৃহৎ আকারে শুরু হবে। আমাদের টার্গেট আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে করা। এটি যে ধরনের কাজ তাতে এমনিতেই দুই বছর লাগে। আগামী বছরের জুনের আগে এটি শুরু হবে। 

কারা সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্ত হবেন
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিক এ পেনশন হিসাব খুলতে পারবেন। সময়কাল ও মাসিক চাঁদার অনুপাত অনুযায়ী পেনশনধারীরা অবসরকালে মাসিক পেনশন সুবিধা পাবেন।

কে কত জমা করতে পারবেন, পেনশন কত পাবেন
কেউ যদি ১৮ বছর বয়সে পেনশন হিসাবে এক হাজার টাকা করে চাঁদা জমা শুরু করেন এবং ৬০ বছর পর্যন্ত নিয়মিত চাঁদা জমা দেন তাহলে অবসরের পর ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি প্রতি মাসে ৬৪ হাজার ৭৭৬ টাকা হারে পেনশনের টাকা পাবেন।

আবার কেউ যদি ৩০ বছর বয়সে পেনশন হিসাবে টাকা জমা দিতে শুরু করেন এবং ৬০ বছর পর্যন্ত নিয়মিত চাঁদা জমা করেন, তাহলে অবসরের পর ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত পেনশন পাবেন। সেক্ষেত্রে মাসে ১৮ হাজার ৯০৮ টাকা করে পাবেন পেনশনধারীরা। তবে চাঁদার পরিমাণ এক হাজার টাকার বেশি হলে আনুপাতিক হারে পেনশনের পরিমাণও বেশি হবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে একজন মানুষ তার সক্ষমতা অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০০, ১০০০, ১৫০০, ২০০০, ২৫০০, ৩০০০, ৩৫০০ ও ৪০০০ টাকা অ্যাকাউন্টে জমা করতে পারবেন।

পেনশনে থাকা অবস্থায় মারা গেলে কী হবে?
‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২২’ এর খসড়ায় বলা হয়েছে, কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগেই নিবন্ধিত চাঁদাপ্রদানকারী মারা গেলে জমা অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়সের আগে মারা গেলে তার নমিনি বাকি সময়ের মাসিক পেনশনের টাকা পাবেন। পেনশন স্কিমে জমা করা অর্থ কোনোভাবেই কোনো পর্যায়ে এককালীন উত্তোলনের সুযোগ থাকবে না। তবে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমা অর্থের ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তোলা যাবে, যা সুদসহ পরিশোধ করতে হবে।

এছাড়া সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হওয়া সাপেক্ষে নিম্নআয়ের নাগরিক অথবা দুস্থ চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ অনুদান হিসেবে দিতে পারবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!