• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আমরা সবাই রাজা


মহিউদ্দিন খান মোহন অক্টোবর ২৪, ২০২০, ০৩:৪৭ পিএম
আমরা সবাই রাজা

ঢাকা : কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অত্যন্ত শ্রোতাপ্রিয় কালজয়ী একটি গান— ‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে/নইলে মোরা রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে?/ আমরা যা খুশি তাই করি/তবু তার খুশিতেই চরি/ আমরা নই বাধা নই দাসের রাজার ত্রাসের রাজত্বে....’। শতাধিক বছর আগে লেখা কবিগুরুর গানের প্রতিফলন আজ আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রকটভাবেই প্রতিফলিত হতে দেখে অবাক না হয়ে পারা যায় না। কী তীক্ষ দূরদৃষ্টি ছিল কবিগুরুর! এক শতাব্দী আগে তিনি বাঙালি মানসের যে রূপটি কল্পনা করেছিলেন, আজ এই বাংলা মুলুকে তা বাস্তব হয়ে ধরা দিচ্ছে প্রতিনিয়ত, প্রতিক্ষণে। আমরা, মানে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের বাসিন্দারা নিজেকে রাজা ভাবতে বেশ পছন্দ করি। সময় যদি অনুকূলে থাকে, সুযোগ যদি থাকে হাতের কাছে, আমাদের মধ্যে অনেকেই অলিখিত রাজা বনে যেতে কসুর করেন না। এসব স্বঘোষিত বা স্বকল্পিত রাজা-বাদশাহ্র প্রবল দাপটে জনজীবনে যেমন ত্রাহি মধুসূদন দশা সৃষ্টি হয়, তেমনি দেশের আইনশৃঙ্খলা, সামাজিক পরিবেশ, আইনের শাসনের ক্ষেত্রেও দেখা দেয় হ-য-ব-র-ল অবস্থা। দৃষ্টিকে একটু প্রসারিত বা তীক্ষ করলেই বিষয়টি অনুধাবন করা যাবে সহজেই। উল্লিখিত রাজারা দেশের প্রচলিত আইনকে থোড়াই কেয়ার করে তাদের ক্রিয়াকর্ম চালিয়ে যায় নির্বিকার চিত্তে।

অতিসম্প্রতি মূল্যবৃদ্ধির উল্লম্ফনে যুক্ত হয়েছে আলু। গ্রামবাংলায় এ সবজিটিকে বলা হয় গোলআলু। সে গোলআলু এবার বাধিয়ে দিল গোল। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই এক লাফে তার দাম বেড়ে গেল দ্বিগুণেরও বেশি! ২৫ টাকা থেকে উঠে গেল ৬০ টাকা কেজিতে। কল্পনা করা যায়! কী কারণে বাড়ল আলুর দাম? কোনো ব্যাখ্যা নেই। আলু আমাদের নিজস্ব পণ্য। দেশের চাহিদা মিটিয়ে তা বিদেশে রপ্তানিও করা হয়। বীজ আলু ছাড়া খাওয়ার জন্য আলু আমদানির রেকর্ড নেই। তাহলে কেন এই সংকট তৈরি হলো? বন্যার কারণে? কিন্তু এখন তো আলু উৎপাদনের মৌসুম নয় যে বন্যায় আলুগাছ তলিয়ে গেছে। তাছাড়া দেশের কোল্ড স্টোরেজগুলোকেও ডুবিয়ে দেয়নি। তাহলে রহস্যটা কী? আসলে এটা একটা প্রবণতা। অতিমুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা পণ্য গুদামজাত করে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়েছে। সরকার অবশ্য এ নৈরাজ্য প্রতিহত করতে লোক-লস্কর মাঠে নামিয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের কাছে তা পাত্তা পেয়েছে বলে মনে হয় না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও ব্যবসায়ীরা তা কানে তুলেছে, এমন আভাস মেলেনি। পত্রিকার খবরেই বলা হয়েছে, বাজারে প্রশাসনের লোক এলে আলুর দাম কমে, তারা চলে যাবার পর ‘যথা পূর্বং তথা পরং’। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে পুলিশ-র্যাব, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা মাঠে-বাজারে গলদঘর্ম হচ্ছে। জরিমানা করা হচ্ছে হাতের কাছে পাওয়া ব্যবসায়ীদের। কিন্তু ফলাফল শূন্য। অবশেষে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিসিবির মাধ্যমে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করবে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত যে ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে পরিশ্রান্ত হয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় মুখরক্ষার চেষ্টা সেটা না বললেও চলে।

গত বছর পেঁয়াজ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেছে দেশে তাতে সবাই ভেবেছিলেন, এবার হয়তো সরকার আগেভাগেই ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু সে ভাবনা অলীক কল্পনা প্রমাণিত হয়েছে শেষ পর্যন্ত। এবারো পেঁয়াজের দাম প্রায় তিনগুণে এসে ঠেকেছে। বলা হচ্ছে আমদানি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। কিন্তু তার কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, প্রায় তিন লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র দেওয়া হলেও এলসি খোলা হয়েছে মাত্র ছয় হাজার টনের। ফলে আর ক’দিন পরে পেঁয়াজের দাম যদি গত বছরের মতো তিনশ টাকা কেজিতে পৌঁছে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

প্রশ্ন হলো, বাজারে পণ্য থাকতে কেন সেগুলোর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবে? বাজার মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যারা আইনের প্রয়োগ ঘটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষমতাপ্রাপ্ত। তাহলে কেন লাগাম টেনে ধরা যায় না পেঁয়াজ কিংবা আলুর দামের? অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির ক্ষমতা ও সাহস ওই ব্যবসায়ীরা পায় কোথা থেকে? এখানেই কবিগুরুর কবিতা প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। ব্যবসায়ীরা নিজেদেরকে রাজাধিরাজ মনে করে। তাই তারা যা খুশি করে। কোনো তোয়াক্কা নেই দেশের প্রচলিত আইন কিংবা নিয়মনীতির প্রতি। কারণ ওরা জানে কেউ ওদের কিছু করতে পারবে না। দাম বৃদ্ধির বিষয় নিয়ে কয়েকদিন পত্র-পত্রিকায় খবর হবে, সম্পাদকীয় উপ-সম্পাদকীয় লেখা হবে, কেউ কেউ সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে মুখর হবে, টিভি টকশোতে বিদগ্ধজনেরা আলোচনা করবেন, তারপর সব সুনসান হয়ে যাবে। ততদিনে বেড়ে যাওয়া দাম হয়ে যাবে সাধারণ মানুষের গা সওয়া।

ব্যবসাক্ষেত্র থেকে এবার অন্যদিকে যাওয়া যাক। ইতোমধ্যে সরকারি প্রশাসনযন্ত্রের অভ্যন্তরে কিছু মানুষের পরিচয় গণমাধ্যমের কল্যাণে আমরা পেয়েছি, যাদের মধ্যে ‘আমরা সবাই রাজা’ প্রবণতা প্রকটভাবে দৃশ্যমান। এরা যে যে সেক্টরে কাজ করে, তারা নিজেদের সে সেক্টর বা দপ্তরের রাজা বলেই মনে করে। আর তাই যা খুশি করে বেড়ায়, লুটে নেয় রাষ্ট্রীয় সম্পদ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেরানি আবজাল, ড্রাইভার মালেক এরা তো ওইসব অফিসে নিজেদের রাজত্বই কায়েম করে বসেছিল। সেখানে এরা ছিল স্বঘোষিত রাজা! এরা কাউকে তোয়াক্কা করেনি, কারো কাছে তাদের জবাবদিহিও করতে হয়নি। একেবারে ফ্রি স্টাইলে দুর্নীতি-অনিয়মের ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে এরা। কখনো দুদকের অনুসন্ধানে, কখনো সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এদের অপকর্মের খবর চাউর হওয়ার আগে তাদের কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারে এমন সাধ্যি কারো ছিল না।

করোনার দুর্যোগের সময় পুলিশের তৎপরতা সবার প্রশংসা অর্জন করেছিল। নানা ঘটনায় আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে পুলিশ সম্পর্কে একটা নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। তবে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণকে সচেতন করা, বাইরে বেরোতে নিরুৎসাহিত করা, স্বাস্থ্যবিধি মানতে উৎসাহিত করা ইত্যাদি কাজে তারা বেশ নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছে। এমনকি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বেশকিছু পুলিশ সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন। কিন্ত অতিসম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় জনমনে পুলিশ সম্পর্কে আগের নেতিবাচক ধারণা আবার পোক্ত হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে কক্সবাজারের টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ড ও সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে যুবক রায়হানের হত্যার পর পুলিশ নিয়ে কথা উঠেছে। দুটি ঘটনায়ই দুই পুলিশ কর্মকর্তার আপন ভুবনে সর্বেসর্বা হয়ে ওঠার বিষয়টি স্পষ্ট। এরাও নিজেদের ‘স্বাধীন রাজা’ ভাবতে শুরু করেছিল বোধহয়। টেকনাফের ওসি প্রদীপ এতটাই বেপরোয়া ছিল যে, মানুষকে ধরে এনে টাকা আদায় করাই যেন ছিল তার পেশা। ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় ছিল যেন তার রুটিন ওয়ার্ক। ক্ষমতার দম্ভ তাকে এতটাই বেপরোয়া করে তুলেছিল যে, একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তার বুকে গুলি চালাতে সে দুবার ভাবেনি। একই রকম ঘটনা ঘটেছে সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে। ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশের এসআই আকবর রায়হান আহমেদ নামে এলাকার যুবককে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে। এই ঘটনার পর তাকে বরখাস্ত করা হলেও সে এখন পর্যন্ত ধরা পড়েনি। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, সে গোপনে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই এসআই আকবরও কিন্তু ওই এলাকার রাজা সেজে বসেছিল। রায়হান হত্যাকাণ্ডের পর এসআই আকবরের নানা কীর্তিকলাপের খবর মিডিয়ায় উঠে এসেছে। নিরীহ মানুষদের ফাঁড়িতে ধরে এনে জোরপূর্বক টাকা আদায়, না দিলে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন ছিল তার প্রাত্যহিক কাজ। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সে নিয়মিত চাঁদা আদায় করত। ২০১৪ সালে চাকরিতে ঢুকে এরই মধ্যে সে আলীশান বাড়ি ও বিস্তর জমিজমাসহ বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনের দিকে চোখ ফেরালেও একই দৃশ্য দেখা যাবে। কিছু কিছু রাজনৈতিক কর্মী নিজেদেরকে তাদের এলাকার রাজা মনে করে। তারা ভাবে তারা যা খুশি তা করতে পারে, কেউ তাদের কিছু বলতে পারবে না।  অবশ্য মাথার ওপর বটগাছের ছায়া থাকার কারণেই তারা অতটা বেপরোয় হয়ে উঠতে পারে। প্রশাসন থাকে তাদের কবজায়, তারা থাকে ‘বড়ভাই’য়ের বগলের নিচে। সাধারণ মানুষ তাদেরকে সালাম দিতে বাধ্য হয়, তাদের দিকে চোখ তুলে তাকাতেও সাহস পায় না। ফলে নিজেকে রাজা ভাবতে সমস্যা কোথায়? বলা নিষ্প্রয়োজন, রাজনৈতিক মদত এদেরকে রাজা বানায়। কেননা এরা উপমহাদেশের প্রখ্যাত কৌতুক অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায় ‘নেতার হাতা’! এরা নেতার কাছে অত্যন্ত দরকারি হাতিয়ার। নেতা এদেরকে নানা কাজে-অকাজে ব্যবহার করেন। আর সেজন্যই নেতা এদেরকে একেক এলাকার অলিখিত রাজত্ব দান করেন। এরা রাজত্ব করে। কখনো-সখনো ঝড়-ঝাপটা এলে নেতাই সামাল দেন। মা মুরগি যেমন বাজপাখির থাবা থেকে রক্ষার জন্য নিজের ডানার নিচে ছানাদের লুকিয়ে রাখে। এভাবেই সমাজ অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। কেউ যদি মনে করেন, এটা শুধুই বর্তমানের চিত্র, তাহলে ভুল করবেন। বহুকাল ধরেই এমন রাজাদের রাজত্ব চলে আসছে। আর তার ফলেই স্বাধীনতা অব্যবহিত পরে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে যেমন আবুলাল, শামসু, কাঞ্চনরা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল, তেমনি পরবর্তীকালে গাজীপুরে কালিগঞ্জে ইমদু হয়ে উঠেছিল পরাক্রমশালী অঘোষিত রাজা। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এমন রাজা সৃষ্টির ধারাবাহিকতা কখনো ব্যাহত হয়নি। বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এমন শক্তিমান রাজাদের বিকট মূর্তি সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীকে দেখতে হয়েছে। এরা এখন গডফাদার নামেই সমধিক পরিচিত। গডফাদার বিশেষণটি শুনলেই কাউকে বলে দিতে হয় না তিনি কে, কী তার কাজ।

ক্ষমতামদতে মত্ত হয়ে যারা নিজেদেরকে রাজাধিরাজ মনে করে, তাদের সে রাজত্ব কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হয় না। আইনের সঠিক প্রয়োগ হলেই ওইসব স্বঘোষিত রাজার রাজত্ব তাসের ঘরের মতোই চুরমার হয়ে যায়। ক্ষমতাসীন দলের নেতা পরিচয়ে কী বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল ইসমাঈল হোসেন সম্রাট! কাউকে সে গণ্য করত না, ধর্তব্যের মধ্যে আনত না। তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা দূরে থাক, সামনে গেলে অনেকের হাঁটু কাঁপতে শুরু করত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী হলো? রাষ্ট্র যখন আইনের প্রয়োগ শক্ত হাতে করল, অমনি তার সম্রাটগিরির সূর্য অস্তাচলে চলে গেল। ক্যাসিনো সম্রাট খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, সেলিম প্রধান, টেন্ডার মোগল জি কে শামীম, রিজেন্ট সাহেদ, শামীমা নূর পাপিয়াসহ যারা সম্প্রতি আইনের জালে বন্দি হয়েছে, তারা একেকজন তো স্বঘোষিত রাজা বা রানীই ছিল। তারা অপরাধের সাম্রাজ্য স্থাপন করেছিল। সরকারি প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের কেউ কেউ তাদের সহযোগী হয়েছেন। কখনো লোভে পড়ে, আবার অনেক সময় বেকায়দায় পড়েও। কেননা এসব রাজা-রানীর ক্ষমতার হাত এতটাই লম্বা ও পেশিবহুল ছিল যে, তাদের কথার বাইরে গেলে ওই হাতের থাবা থেকে নিজেকে রক্ষা করা দুঃসাধ্য।

তবে এসব রাজার রাজত্বেরও অবসান ঘটে। মাথার ওপর থেকে প্রশ্রয়ের ছাতা সরে গেলে আইনের কড়া রোদে এরা বেশিক্ষণ তিষ্ঠাতে পারে না। অতীত এবং নিকট অতীতে এর প্রমাণ রয়েছে ভূরি ভূরি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই কৃত্রিম রাজারা পরিণতির কথা ভুলে গিয়েই অপকর্মে প্রবৃত্ত হয়। তারা এটা ভুলে যায়, সবকিছুরই শেষ আছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি গানের প্রথম দুটি কলি হলো— ‘চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়/আজ যে আছে রাজাধিরাজ, কাল সে ভিক্ষা চায়...’। বাস্তবতা হলো, যারা নিজেদেরকে রাজা ভেবে যা খুশি তা-ই করে, তারা হয়তো জাতীয় কবির এ গানটি শোনেনি, অথবা শুনলেও হূদয়ঙ্গম করতে পারেনি।

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

 

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!