• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
শিক্ষাচিন্তা

ভিনদেশের শিক্ষার হাল


মাছুম বিল্লাহ মে ৩, ২০২১, ০২:০৬ পিএম
ভিনদেশের শিক্ষার হাল

ঢাকা : ঘুরে এলাম পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিয়ন। আটলান্টিক মহাসাগরের তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড় পর্বত সমৃদ্ধ দুই ঋতুর দেশ সিয়েরা লিয়ন। দশ বছরব্যাপী গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত দেশটি। নিজেদের ডায়মন্ড ও স্বর্ণের খনি থাকতেও ভোগ করতে পারছে না দেশটির জনগণ। বিদেশি কোম্পানি খনিজসম্পদ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আর এই মূল্যবান খনিজসম্পদের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে নিজেরা নিজেদের মধ্যে দশ বছরব্যাপী ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধে জড়িয়ে ছিল। আমার ভ্রমণের উদ্দেশ্য ছিল সিয়েরা লিয়নের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে জানা এবং সর্বোপরি তাদের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত হওয়া।

সিয়েরা লিয়নের শিক্ষাব্যবস্থা পাঁচ স্তরে বিন্যস্ত। এখানকার প্রাথমিক শিক্ষা দুটি স্তরে বিভক্ত। জুনিয়র প্রাইমারি তিন বছর মেয়াদি এবং শ্রেণিগুলো হচ্ছে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি। এরপর হচ্ছে আপার প্রাইমারি চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ শ্রেণি। আপার প্রাইমারির পরে হচ্ছে জুনিয়র মাধ্যমিক বা নিম্নমাধ্যমিক সপ্তম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত। দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি হচ্ছে আপার সেকেন্ডারি। বর্তমান শিক্ষনীতিতে এটি চার বছর করার কথা বলা হচ্ছে, তবে পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি দিচ্ছে অনেকে। উচ্চশিক্ষা সাধারণত চার বছরের, মেডিকেল ছয় এবং ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে পাঁচ বছরের। দেশটিতে মোট চৌদ্দটি জেলা আছে, তার তিনটি জেলার বেশ কিছু বিদ্যালয় দেখার সুযোগ হয়েছে। কথা হয়েছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গেও। এছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে ২৪টি বিদ্যালয়ের ২৪ জন শিক্ষকের সঙ্গে ওয়ার্কশপ করেছি, যেখান থেকে তাদের শিক্ষাব্যবস্থার অনেক কিছুই বেরিয়ে এসেছে। রাজধানী শহরের নিকটবর্তী জেলাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জেলার স্কুলসমূহ ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ার মতো বিষয়টি হচ্ছে এখানে শিক্ষার্থীর কাছে বই নেই। এখানে বই অত্যন্ত  মূল্যবান, বিদেশি কোম্পানি কর্তৃক অফসেট পেপারে মুদ্রিত বই বলে এর দাম বেশি। যে কোনো বিষয়ের বইয়ের মানও ভালো এবং শিক্ষার্থীবান্ধব। শিক্ষার্থীরা বই কিনতে পারে না বলে শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে বই নেই, শ্রেণিকক্ষে ক্লাসের সময় বই নিয়ে আসা হয় দুই থেকে তিনটি। শিক্ষার্থীদের মাঝে গ্রুপে সেগুলো ভাগ করে দেওয়া হয়। সরকার থেকে সব শিক্ষার্থীর জন্য বই বিতরণ করা সম্ভব হয় না। তবে সিটির আশপাশের স্কুলগুলোতে কিছু বেশিসংখ্যক বই দেওয়া হয়। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গ্রুপে বসিয়ে বই গ্রুপে বিতরণ করেন, ক্লাস শেষে বইগুলো তুলে আবার প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে রাখা হয়। শিক্ষার্থীরা বই বাড়িতে নিতে পারে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষকরা বলেছেন শিক্ষার্থীদের কাছে বই না থাকা অবস্থায় ক্লাস পরিচালনা করা তাদের জন্য বিরাট এক চ্যালেঞ্জ। প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলের শিক্ষকদেরই বই নেই, শিক্ষার্থীদের তো দূরের কথা। আমরা দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার সময় কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি, পরীক্ষার হলে গিয়েছি। সেখানেও অবাক হওয়ার বিষয়। ছাপানো কোনো প্রশ্নপত্র তাদের দেওয়া হচ্ছে না, কারণ স্কুলগুলো প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পরীক্ষা নিতে অর্থনৈতিকভাবে অপারগ, তাই এই ব্যবস্থা। প্রশ্নগুলো বোর্ডে লিখে দেওয়া হচ্ছে। একটি বোর্ডে কয়টিই বা প্রশ্ন লেখা যায়? এভাবে একটি পরীক্ষা দুই ভাগে নেওয়া হয়, কারণ একদিনে সব প্রশ্ন বোর্ডে লিখে দেওয়া সম্ভব হয় না তাই।

আমাদের দেশের অনেক শিক্ষাবিদ কিংবা শিক্ষা প্রশাসকদের উন্নত বিশ্বে পাঠানো হয়। অথচ উন্নত বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষার মান, শ্রেণিকক্ষের অবস্থা, আর্থ-সামাজিক অবস্থা কোনোটির সঙ্গেই আমাদের কোনো মিল নেই। সেখান থেকে এসে কী অনুসরণ বা চালু করার আছে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে? অথচ এসব দরিদ্র দেশে দু-একবার গেলে দেখা যায় এখানকার শিক্ষকরা কীভাবে বৈরী পরিবেশে শিক্ষাদান করছেন। কীভাবে পাঠ্যপুস্তক ছাড়া ক্লাস নিচ্ছেন, কীভাবে বিনা বেতনে কিংবা সামান্য বেতনে শিক্ষকতার চাকরি করছেন। শিক্ষকদের অনেক কষ্ট করে লার্নিং ম্যাটেরিয়ালস তৈরি করতে হয়— ক্লাস পরিচালনা করার জন্য, শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ধরে রাখার জন্য।

এখানকার শিক্ষার্থীরা বই বাসায় নিয়ে যায় না। বাসায় বই না নিয়ে যাওয়ার ভালো-মন্দ উভয় দিকই রয়েছে। প্রথমত, কোমলমতি ছেলেমেয়েরা প্রায় প্রতিটি উন্নয়নশীল দেশেই বইয়ের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ধরনের বই, হোমওয়ার্ক, ক্লাসওয়ার্ক তাদের জীবনকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছে। পড়াশুনা করা এবং বিদ্যালয়ে যাওয়া এক ধরনের আনন্দ, সেই আনন্দ থেকে তারা বঞ্চিত। এখানে সেটি হওয়ার সুযোগ নেই। দ্বিতীয়ত শিক্ষার্থীদের ক্রিয়েটিভ হওয়ার সুযোগ কম থাকে যখন তাদের কাছে প্রচুর বইয়ের বোঝা থাকে। তারা নিজেদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করার সুযোগ পায় খুব কম। এখানে বাসায় যেহেতু বই নিতে পারে না, প্রজেক্টওয়ার্কগুলো শিক্ষার্থীদের নিজেদেরই করতে হয়, তাই শিক্ষার্থীদের ক্রিয়েটিভ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে বিভিন্ন লেখকের আকর্ষণীয় বই শিক্ষার্থীদের হাতে থাকলে তারা ওইসব লেখকের চিন্তার সঙ্গে একাত্ম হতে পারে, তাদের নিজস্ব চিন্তাধারার সঙ্গে লেখকদের চিন্তা ধারার সংযোগ ঘটাতে পারে। ফলে তাদের চিন্তাও উন্নত হয়। এটি থেকে এখানকার শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত। রাজধানী শহর ফ্রিটাউনে অবশ্য বিদেশি এবং দেশি এলিটদের জন্য ব্যয়বহুল ও উন্নতমানের কিছু বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু সিটির বাইরের বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা করুণ। রাজধানীর কাছেও একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দুঃখ করে বললেন, ‘স্যার এই যে আমার বাচ্চারা ক্লাস করছে, আর এক পিরিয়ড পরেই ওদের লেইজার হবে। কিন্তু অধিকাংশই কিছু খেতে পারবে না, খাবার সামর্থ্য নেই। ক্লাসের পরে বাসায় গিয়েও অনেকে কিছু খেতে পারবে না।’

যেহেতু শিক্ষার্থীদের কাছে বই নেই, তাই শিক্ষকদের প্রচুর খাটাখাটনি করতে হয়। সবকিছু তাদেরকেই করতে হয়। অথচ সব শিক্ষক আবার সরকারি বেতন কিংবা অনুদান পান না। প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখলাম একটি স্কুলে মাত্র অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ সরকারি বেতন পাচ্ছেন, বাকি শিক্ষকরা সরকার থেকে কোনো বেতনভাতা পান না। তারা বিদ্যালয় থেকে লামসাম কিছু একটা পান। সেটি নিতান্তই নগণ্য। তারা স্কুলের সঙ্গে বছরের পর বছর লেগে থাকেন, যদি কোনোদিন সরকারি খাতায় নাম লেখাতে পারেন, সেই আশায়। আবার অনেক শিক্ষক শিক্ষকতার পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা করেন সংসারের চাহিদা মেটানোর জন্য। কেউ হয়তো মাছ ভাজি করে মাথায় নিয়ে বিক্রি করেন। এখানে সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায় প্রচুর।

তবে একটি বিষয় ভালো লেগেছে, সেটি হচ্ছে সরকারি বেতনভুক শিক্ষকদের তিন বছরের প্রশিক্ষণ নিতে হয়, যেটি আমাদের দেশে দশ মাসের। ওয়াটারলু নামক একটি জেলার কয়েকটি স্কুলে গিয়ে আপার প্রাইমারি ক্লাসের ক্লাস দেখলাম। একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে গিয়ে দেখলাম ক্লাসটি পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত। শিক্ষিকা বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করাচ্ছেন, তাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করছেন, কোন গ্রুপ আগে উত্তর দিতে পারে সেজন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করছেন, উত্তর সঠিক কি-না গ্রুপে আবার যাচাই করতে দিয়েছেন, কেন সঠিক বা সঠিক নয় তা ব্যাখ্যা করতে বলছেন, শিক্ষার্থীদের বোর্ডে ডাকছেন। ক্লাস শেষে জিজ্ঞেস করলাম তার কোনো প্রশিক্ষণ আছে কি-না, উত্তরে বললেন তিন বছরের শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ‘টিচার্স কলেজ’ থেকে। আমাদের দেশে যেটিকে আমরা শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় বলে থাকি।

শুধু পাঠ্যপুস্তকই নয়, সব ধরনের শিক্ষা উপকরণের দাম এখানে প্রচুর, যার ফলে শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশের ছাত্রছাত্রীদের মতো প্রচুর লেখার প্র্যাকটিস করতে পারে না, এখানকার অধিকাংশ প্র্যাকটিসই মৌখিকভাবে করা হয়ে থাকে। গণিত, বিজ্ঞান, ইংরেজি কিংবা অন্য যে কোনো বিষয়ের ক্লাস অধিকাংশই মৌখিকভাবেই হয়ে থাকে। তাতে একটি লাভ হয়েছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ইংরেজিতে কথা বলা শিখছে। এখানকার অফিসিয়াল ভাষা যদিও ইংরেজি, সাধারণ মানুষ বিশেষ করে যারা কখনো বিদ্যালয়ে যায়নি তারা ইংরেজি বলতে পারে না। তবে যারা মোটামুটি মাধ্যমিক স্তর পার করে এসেছে, তারা প্রায় ইংরেজিতে কথা বলতে পারে। এখানকার শিক্ষার্থীর অধিকাংশই বাসায় ইংরেজি বলার সুযোগ পায় না, ক্লাসেই বেশিরভাগ সময় শিক্ষকরা ইংরেজি বলার কারণে এবং ক্লাসের অধিকাংশ কার্যাবলি মৌখিক হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থী অনর্গল ইংরেজি বলতে পারে। লেখায় আবার তারা পিছিয়ে আছে। এখানকার লোকাল ভাষা ‘ক্রিয়ো’ এবং ‘তামনি’। ক্রিয়ো ভাষা হচ্ছে ইংরেজি ও আফ্রিকান ভাষার মিশ্রণ। ব্রিটিশদের কলোনি থাকার কারণে সিয়েরা লিয়নীদের ওপর ইংরেজি ভাষার দৌরাত্ম্য থেকেই গেছে। ইংরেজি বলার দক্ষতার পাশাপাশি আরেকটি বিষয় দেখলাম, প্রায় সব শিক্ষার্থীই সংস্কৃতিমনা, নাচ-গান তাদের খুব প্রিয়। এগুলো তারা বিদ্যালয়েই করে থাকে।

সিয়েরা লিয়নে আরেকটি বিষয় খুব ভালো লেগেছে আর সেটি হচ্ছে রাস্তায় পথচারীদের সম্মান করা। কোনো পথচারী যদি রাস্তা পারাপার হওয়ার জন্য উদ্যত হয়, ড্রাইভার গাড়ি আস্তে থামিয়ে পথচারীকে হাত দিয়ে ইশারা করে রাস্তা পার হতে বলেন। এটি ব্রিটিশের নিয়ম। ব্রিটিশরা এখানে রাজত্ব করে গেছে আর রেখে গেছে ভালো-মন্দ অনেক কিছু। দেশটিতে দারিদ্র্যের কারণে দুর্নীতি পথে-ঘাটে। আর তাই, রাস্তায় চলতে গেলে নিরাপত্তা বাহিনী একটু পরপর গাড়ি থামিয়ে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করে। কিন্তু আনন্দের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশিদের গাড়ি দেখলে, বাংলাদেশিদের দেখলে ওরা খুব সম্মান করে। তার দুটি কারণ। একটি হচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সেখানে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। আর তাই তারা বাংলা ভাষাকে তাদের জাতীয় ভাষা হিসেবে মর্যাদা দিয়েছে। তারা কেউ কেউ বাংলা বলতে পারে। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, ব্র্যাক সেখানে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বিধায় বহু লোকের চাকরি হয়েছে। ব্র্যাক এই ছোট দেশটিতে ২৫০টি বিদ্যালয় তৈরি করে দিয়েছে। তাই আমাদের গাড়ি দেখলেই বলতো ‘গো ব্রাদার গো’। বিমানবন্দর থেকে নামার সাথে সাথে দুর্নীতির চিত্র চোখে পড়ে। এয়ারপোর্টের ভেতরে কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিদেশিরা গেলেই অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে বিভিন্নভাবে। এয়ারপোর্ট থেকে বের হলে দালালের দল দাঁড়িয়ে থাকে বিদেশিদের বিভিন্নভাবে ধোঁকা দেওয়ার জন্য। শিক্ষা কর্মকর্তা, পুলিশ সবাই ঘুষ নেওয়ার জন্য তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে থাকে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার অফিসে গিয়ে। এয়ারপোর্ট থেকে নেমে স্পিডবোটে আটলান্টিক মহাসাগরের চ্যানেল পাড়ি দিয়ে রাজধানী ফ্রিটাউনে পৌঁছাতে হয়। রাজধানীতে পৌঁছার আরেকটি সড়ক পথ আছে কিন্তু সেটি অনেক ঘুরে আসতে হয়। বর্তমানে ফ্রিটাউনের কাছেই এয়ারপোর্ট তৈরি হচ্ছে। দেশটিতে দেখলাম মূল রাস্তা একটি মহাসড়ক। সেটি করে দিয়েছে চীন। চীনা টেকনিশিয়ান ও ইঞ্জিনিয়াররা সেখানে উন্নয়নমূলক অনেক কাজ করছেন।

মাটির নিচে প্রচুর খনিজসম্পদ রয়েছে— তেল, ডায়মন্ড, স্বর্ণ অথচ দারিদ্র্যের চরমসীমায় বাস করছে এখানকার অধিকাংশ মানুষ। এখানে মধ্যম শ্রেণি বলতে নেই। উচ্চ শ্রেণি যারা গ্রেট ব্রিটেন, আমেরিকায় চাকরি করে। তারা দেশেও ধনী। বহু অর্থের মালিক, বড় বড় বিল্ডিংয়ের মালিক, আরেকটি শ্রেণি প্রায় নিঃস্ব। এখানকার রাজনীতিকরাও অত্যন্ত দুর্নীতিপরায়ণ। তাদের দেশপ্রেম বলতে কিছু নেই। শুনেছি তারা ব্রিটিশদের কাছে সবকিছু বন্ধক দিয়েছে নিজেদের স্বার্থে, নিজেদের সুবিধার জন্য আর সাধারণ মানুষ রয়ে গেছে বঞ্চিত। এসব দেশ দেখলে মনে হয় বাংলাদেশের হাজারো সমস্যা থাকলেও আমরা অনেক ভালো আছি। তবে আমেরিকা ও কানাডায় গেলে আবার দুঃখ হয়।

লেখক : শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

 

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!