• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঘটনাগুলো স্বস্তিকর নয়


মহিউদ্দিন খান মোহন অক্টোবর ২৪, ২০২১, ০৫:২৭ পিএম
ঘটনাগুলো স্বস্তিকর নয়

ঢাকা : কুমিল্লায় দুর্গাপূজার মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা দেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিষয়টি এতটাই স্পর্শকাতর যে, জনমনে ভীষণ উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কে বা কারা কোন উদ্দেশ্যে এ অপকর্মটি করেছে, সে রহস্য এখনও উদঘাটিত না হলেও এটা পরিষ্কার যে, কোনো একটি মহল দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যেই এটা করে থাকবে। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং পুজামণ্ডপ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে রংপুর জেলার পীরগঞ্জে। সেখানকার জেলেপল্লী হিসেবে পরিচিত মাঝিপাড়ায় গত ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় একদল দুষ্কৃতিকারী আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৮টি ঘর ও দুটি মন্দির। এসব ঘটনা সচেতন ব্যক্তিদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে সঙ্গত কারণেই।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী একটি পত্রিকায় লেখা নিবন্ধে মন্তব্য করেছেন, ‘ধর্মকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে যারা উগ্রবাদ ও সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে, তারা আদৌ কোনো ধর্মের কাজ করছে না। ধার্মিক কোনো হিন্দু তার মন্দিরে কোরআন শরিফ নিয়ে যাবেন না। একই ভাবে ধর্মভীরু কোনো মুসলমানও এ কাজ করতে পারেন না। এসব ন্যক্কারজনক কাজ যারা করেছে, তারা কেউই ধার্মিক নয়, সবাই দুর্বৃত্ত। এসব দুর্বৃত্তকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া এই মুহূর্তে খুব জরুরি। তিনি লিখেছেন, ধর্মীয় এমন সহিংস ঘটনার পর সরকার বলছে, এ কাজ বিএনপি ও সরকারবিরোধীরা করেছে। সরকারবিরোধীরা বলছে, এ ঘটনায় সরকার জড়িত। একে অপরের দোষ দেওয়ার এই পাল্টাপাল্টিতে আসল দোষী পার পেয়ে যাবে।’ (সমকাল, ১৯ অক্টোবর ২০২১)। অপরদিকে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন মন্তব্য করেছেন, ‘বর্তমান সরকার তাদের ঘোষণা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার। যদি তা-ই হয়, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল অসাম্প্রদায়িক মানুষের রাষ্ট্র তৈরি করা। তবু এই সরকার ক্ষমতাসীন থাকার পর এত সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটছে। কোনোটির বিচারও হয়নি। তদন্তও হয়নি। কাজেই সেই ঘটনা সংঘটনকারী যারা অপরাধী তারা বারবার এই অপরাধটি করার সুযোগ পেয়ে যায়। সেই বিচারে আমি বর্তমান সরকারকে দায়ী করব। কেন ঘটছে, কারা ঘটাচ্ছে, সে তথ্য আমাদের কাছে নেই। তথ্যটি বেরিয়ে আসবে যদি বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়। কিন্তু দুঃখের কথা যে, তথ্য না থাকা সত্ত্বেও দুটি রাজনৈতিক বড় দল যার মধ্যে একটি ক্ষমতাসীন, অন্যটি বিবৃৃতি ছাড়া যেটার অস্তিত্ব নেই, তারা পরস্পরের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ি করছে। (মানবজমিন, ১৯ অক্টোবর, ২০২১)। এই দুই শিক্ষাবিদের মন্তব্য থেকে এটা পরিষ্কার যে, ঘটনা নিয়ে দুই বড় দল যা করছে, তার পুরোটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জনস্বার্থ বা শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করার জন্য যে ধরনের ইতিবাচক ভূমিকা তাদের নেওয়া উচিত ছিল, তা নিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। বস্তুত, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জাতীয় স্বার্থের চেয়ে দলীয় স্বার্থ যখন বড় হয়ে দাঁড়ায়, তখনই তাদের চিন্তা-ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি এহেন সংকীর্ণতায় আচ্ছন্ন হয়।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৯ অক্টোবর মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীতে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই কঠোর নির্দেশ সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করবে নিঃসন্দেহে। কেননা, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যখন কোনো বিষয়ে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করা হয়, তখন জনগণ এই ভেবে আশান্বিত হয় যে, ঘটনার জন্য দায়ী এবং পর্দার অন্তরালে থাকা দুর্বৃত্ত-কুশীলবদের শনাক্ত করা সহজ হবে। এতে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি যেমন নিশ্চিত হবে, তেমনি  একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। কিন্ত্র স ঘটনাকে কেন্দ্র করে যদি রাজনৈতিক ব্লেমগেম শুরু হয়ে যায় তাহলে কাঙ্ক্ষিত সত্য উদঘাটন আর সম্ভব না-ও হতে পারে।

সাম্প্রতিক এই ইস্যুটিকে নিয়েও সে আশঙ্কা ক্রমেই প্রবল হয়ে উঠছে। কেননা, কোনো রকম তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল বিষয়টি নিয়ে পরস্পরের দিকে বাক্যগোলা নিক্ষেপের এক অপরিণামদর্শী খেলায় মেতে উঠেছে। রাজনীতির ফায়দা লোটার অভিপ্রায়ে তাদের এই দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা সচেতন ব্যক্তিদের  বেদনাহত করেছে। সরকারদলীয় নেতারা ইতোমধ্যেই বলেছেন যে, দেশের অগ্রগতি ব্যাহত করা এবং সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামায়াতচক্র এ ঘৃণ্য কাজটি করেছে। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে সরকারই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য সরকারকেই দায়ী করছে।

আবহমান কাল থেকে এই দেশে সব ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালন করে আসছে। সেখানে কারা সে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশকে বিঘ্নিত করার উদ্দেশ্যে এমন একটি ঘটনা ঘটালো, তা খুঁজে বের করার দাবি দেশবাসী সবার। বিশিষ্টজনেরা ইতোমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে, এই ঘটনাকে আর বাড়তে দেওয়া যাবে না। ঘটনার পেছনে যারাই থাকুক, তাদেরকে খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। না হলে দেশে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাবে। কিন্তু তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই সরকারদলীয় নেতা-মন্ত্রীরা যেভাবে বিরোধী দলকে দায়ী করে বক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে বিষয়টি গুরুত্ব হারাতে পারে। ঠিক একইভাবে বিরোধীদল কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ ব্যতিরেকেই সরকারকে দায়ী করে যেসব কথাবার্তা বলছে, তাও কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই যদি কানো প্রভাবশালী মহল থেকে ঘটনার জন্য কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে দায়ী করে বক্তব্য রাখা হয়, তাহলে তদন্ত বিঘ্নিত হতে পারে। তারা মনে করেন, সঠিক তদন্ত এবং প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার স্বার্থে তাই এ ধরনের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজনৈতিক ব্লেমগেম পরিহার করাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু  দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের দেশে যে কোনো ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থে একে অপরের দিকে অভিযোগের তীর নিক্ষেপে পিছপা হয় না। এর ফলে বেশিরভাগ ঘটনার সঠিক তদন্ত ও  নেপথ্য কাহিনী অনুদঘাটিতই থেকে যায়।

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ রাখা যেমন গর্হিত কাজ, তেমনি ওই ঘটনাকে পুঁজি করে একটি মহলের সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর এবং পূজামণ্ডপে হামলাও ন্যক্কারজনক কাজ। এই দুই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তারা কখনোই দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার পক্ষের নয়। এদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। যাতে ভবিষতে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে না পারে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, এসব দুষ্কৃতিকারীকে এমন শাস্তি দেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপকর্ম করতে সাহস না পায়। তবে সেজন্য দরকার সবার সহযোগিতা। সব পক্ষের সহযোগিতা ছাড়া একা সরকারের পক্ষে কোনো কাজই সফলভাবে করা সম্ভব নয়।

এদিকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান উদ্ভূত পরিস্থিতির আগুনে ঢেলে দিয়েছেন এক বালতি ঘি। তিনি রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে এমন কথা বলেছেন, যা দেশে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। দেশকে বাহাত্তরের সংবিধানে ফেরত নেওয়ার কথিত প্রত্যয়ে তিনি সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন। এ সংক্রান্ত তার বক্তব্য এখন সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল। সর্বত্র উঠেছে নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড়। এমনকি খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন প্রতিমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘ইসলাম ত্যাগ করে দেখেন, দুই দিন মন্ত্রী থাকতে পারেন কি না’। (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১৮ অক্টোবর ২০২১)। এ থেকে বোঝা যায়, রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তার নিজ দলের মধ্যেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য যে অপরিণামদর্শী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা, এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং তারা ধর্মভীরুও বটে। তবে তারা কখনোই ধর্মান্ধ নয়। বাংলাদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্য হলো সব ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। এ দেশে অতীতেও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর অপচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সচেতন জনগণ তা প্রতিহত করেছে ঐক্যবদ্ধভাবেই। এটা ঠিক বাংলাদেশের সংবিধান যখন প্রণয়ন ও গ্রহণ করা হয়, তখন তাতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের উল্লেখ ছিল না। পরবর্তীকালে নানা ঘটনায় আমাদের সংবিধান সংশোধিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকাকালীনই সংবিধান চারবার সংশোধিত হয়েছে। পঞ্চম সংশোধনী গৃহীত হয়েছিল ১৯৭৯ সালের সংসদে, যখন জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সে সময় ধর্মনিপেক্ষতার স্থলে ‘আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা’ কথাগুলো সন্নিবেশিত করা হয়। এরপর এরশাদ আমলে সংবিধান সংশোধন করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা হয়। সংবিধানের ‘২ক’ ধারায় বলা হয়েছে- ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। তবে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন।’ সংবিধানের সর্বশেষ সংশোধনীতেও তা বহাল রাখা হয়েছে।

এখন বিচার্য বিষয় হলো, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকায় এদেশে অন্য সম্প্রদায়ের ধর্মাচার বা অনুষ্ঠানাদি পালনে কোনো বিঘ্ন ঘটছে কি না। মাঝেমধ্যে যে দু-চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে, তার সবই বিশেষ কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থজনিত কূট-চক্রান্ত বৈ কিছু নয়। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নীতি গ্রহণের আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ইদানীং কিছু ব্যক্তির চিল্লাফাল্লা দেখে মনে হওয়াটা স্বাভাবিক, সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমাদের পাশের প্রতিবেশী ভারতের দিকে যদি তাকাই, তাহলে কী দেখি? সেখানে তো ধর্মনিরপেক্ষ নীতি রয়েছে। কিন্তু তাতে কি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা একেবারে নির্মূল হয়েছে? বস্তুত একটি দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নির্ভর করে সেদেশের জনগণের মনোভাব, সহনশীলতা, পারস্পরিক সৌহার্দ্য, রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীলতা এবং সরকারের যথাযথ নজরদারির ওপর।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান যে ভাষায় এবং দেহভঙ্গীতে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন, দেশবাসী তা একেবারেই ভালোভাবে নেয়নি। তারা এটাকে ‘বারোহাত কাঁকুরের তেরো হাত বিচি’ প্রবাদতুল্য মনে করছেন। কারণ তারা মনে করেন, সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নীতি বহাল রেখে বিজ্ঞজনোচিত কাজই করেছেন। যদিও এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ বা সরকারের কোনো ভাষ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে জনমনে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করার জন্য সরকার এবং আওয়ামী লীগের অবস্থান অবিলম্বে পরিষ্কার করা উচিত।

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

 

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!