• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘রিজভী এমন নোংরা রাজনীতি না করলেও পারতেন’


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৯, ২০২১, ১০:২১ এএম
‘রিজভী এমন নোংরা রাজনীতি না করলেও পারতেন’

ফাইল ছবি

ঢাকা: রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে দলীয় কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। 

ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার (২০ নভেম্বর) সারাদেশে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গণঅনশন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এদিকে বিএনপির এই কর্মসূচি ঘোষণা নিয়ে দলটির শীর্ষপর্যায়ের দুই নেতার মধ্যকার ‘বিভেদ’ প্রকাশ্যে এসেছে। ওই দুই নেতা হলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

গুলশানে মির্জা ফখরুলের সংবাদ সম্মেলনের সময়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন রুহুল কবির রিজভী। ঘোষণা দেন একই কর্মসূচি। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘জ্বালানি তেল, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ও গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে শনিবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিতব্য মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তার পরিবর্তে গণতন্ত্রের মা, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে ওইদিন (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গণঅনশন কর্মসূচি পালিত হবে।

বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতারা বলছেন, ওই দুই নেতার মধ্যকার বিভেদ অনেক দিন ধরে চলে আসছে। ম্যাডামের মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে দলীয় কর্মসূচি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তাদের দুজনের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব আবারও সামনে এসেছে। এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু তাদের এ দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাদের মধ্যেও একটা বিভেদ তৈরি হয়ে আছে অনেক দিন ধরে। এ বিভেদকে পুঁজি করে দলের মধ্যে অপেক্ষাকৃত তরুণ কিছু নেতা রুহুল কবির রিজভীকে ঘিরে একটা বলয় তৈরির চেষ্টা করছেন।

রিজভীর এমন আচরণে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিব্রতবোধ করলেও প্রাকাশ্যে কিছু বলেন না।ওই দুই নেতার দ্বন্দ্ব প্রকৃতপক্ষে রিজভীর ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি। এখানে মির্জা ফখরুলের খুব বেশি ভূমিকা নেই। 

এদিকে, রিজভীর এমন সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি ভালোভাবে নেননি দলটির সিনিয়র অনেক নেতা। গুলশানে মির্জা ফখরুলের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত একাধিক নেতা সাংবাদিকদের বলেন, রুহুল কবির রিজভী এমন কাজ না করলেও পারতেন। যখন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন, সেখানে একই সময় এককভাবে রিজভী সংবাদ সম্মেলন করে কী বোঝাতে চেয়েছেন? তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, তার আর মহসচিবের ক্ষমতা সমান বা তার কাছে দলের সিনিয়র নেতাদের কোনো দাম নেই?

দলটির শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ মনে করেন, দুই নেতার দ্বন্দ্বের পেছনে পরোক্ষভাবে তারেক রহমানের ভূমিকা রয়েছে।তাদের মতে, এখন দলের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীর অবস্থান সমান-সমান। দুজনকে পৃথকভাবে নির্দেশনা দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।এটাই দ্বন্দ্বের পেছনে আসল কারণ।

স্থায়ী কমিটির এক নেতা সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপিতে এখন এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে যে স্থায়ী কমিটির নেতা হয়েও আমাকে মির্জা ফখরুল না হয় রিজভী সাহেবকে ‘মেইনটেইন’ করে রাজনীতি করতে হয়। এর চাইতে বড় দুঃখ আর কী হতে পারে!

বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করে বলেন, খালেদা জিয়া যেখানে অসুস্থ হয়ে সিসিইউতে আছেন, সেই সময়ে রিজভী সাহেবের মতো একজন সিনিয়র নেতা এমন নোংরা রাজনীতি না করলেও পারতেন। ওনার যদি জরুরি সংবাদ সম্মেলন করার এতই দরকার হয় সেটা সকালে কিংবা সন্ধ্যায়ও করতে পারতেন। একই সময়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বোঝালেন যে তার কাছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছাড়া অন্য কোনো নেতার মূল্য নেই।

সোনালীনিউজ/আইএ 

Wordbridge School
Link copied!