abc constructions

বাড়ি বানাতে ৯০ ভাগ ঋণ পাবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ৩, ২০২১, ১১:৩৪ এএম
বাড়ি বানাতে ৯০ ভাগ ঋণ পাবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

ঢাকা : কমপক্ষে পাঁচ বছর চাকরি স্থায়ী হয়েছে এমন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৯ শতাংশ সুদে পাবেন গৃহঋণ। দীর্ঘ ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণের ৫ শতাংশ সুদ পরিশোধ করবেন ঋণগ্রহীতা। বাকি ৪ শতাংশ সরকার মাসিক কিস্তিতে ভর্তুকি দেবে। এজন্য নতুন বাজেটে গৃহনির্মাণ ঋণ খাতে সুদ ভর্তুকি বাবদ ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ ঋণ নিতে পারবেন সরকারি-বেসরকারি ১১টি প্রতিষ্ঠান থেকে। এর আগে এ ঋণ নেওয়া যেত শুধু রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন থেকে।

এ ছাড়া বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক থেকেও গৃহনির্মাণ ঋণ নিতে পারবেন। গত ২৫ মে অর্থ বিভাগের (প্রশাসন ও সমন্বয়) এক নির্দেশনা চিঠিতে বেসরকারি এই পাঁচ ব্যাংককে যুক্ত করার কথা জানানো হয়।

অর্থ বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহঋণ প্রদান নীতিমালা-২০১৮-এর অনুচ্ছেদ ৫(খ) অনুযায়ী সরকার অন্য যে-কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পরিধি বৃদ্ধি এবং ইসলামী আইন অনুযায়ী গৃহনির্মাণ ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে পাঁচ ব্যাংককে সরকারি কর্মচারীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত করা হলো।

প্রসঙ্গত, ফ্ল্যাট ও প্লট কিনতে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহনির্মাণ ঋণের নীতিমালা জারি হয় ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই, যা ওই বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর ধরা হয়। তবে যাদের ইএফটিতে (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) বেতন-ভাতা হচ্ছে, শুধু তারাই এ ঋণের জন্য আবেদন করতে পারছেন।

নীতিমালা অনুযায়ী, জমি বা ফ্ল্যাট কিনতে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন তারা। যে-কোনো সরকারি চাকরিজীবী ৯ শতাংশ সুদে এ ঋণ নিতে পারবেন। ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণের ৫ শতাংশ সুদ ঋণগ্রহীতা পরিশোধ করবেন। বাকি ৪ শতাংশ সরকার মাসিক কিস্তিতে ভর্তুকি দেবে।

নিয়ম অনুযায়ী, যে-কোনো চাকরিজীবী ঋণ পাওয়ার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের যে-কোনো একটিতে আবেদন করবেন। ব্যাংক ওই আবেদন যাচাই-বাছাই করে ইএমআই (সমান মাসিক কিস্তি) শেষে আবেদনকারী কর্মকর্তা যে মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত আছেন, ওই মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। ওই মন্ত্রণালয় থেকে তা অনুমোদন করে অর্থ বিভাগে ‘গৃহনির্মাণ ঋণ কোষ’ শাখায় পাঠানো হবে। তখন এ শাখা থেকে প্রাথমিক জিও জারি করে তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে ব্যাংক ঋণ দেবে।

ঋণ দেওয়ার পর অর্থ বিভাগ চূড়ান্ত জিও জারি করে ওই কর্মকর্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যাতে প্রতি মাসে সুদের ভর্তুকির অর্থ স্থানান্তর হয়, সে ব্যবস্থা করবে। ঋণ নেওয়ার পর ২০ বছর বা ঋণগ্রহীতার পিআরএলের মধ্যে যেটি আগে হবে, ততদিন প্রতি মাসে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভর্তুকির অর্থ পৌঁছে যাবে। নতুন বাজেটে গৃহনির্মাণ ঋণ খাতে সুদ ভর্তুকি বাবদ ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা এই ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন। সর্বোচ্চ ঋণসীমা ৭৫ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন ঋণ ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে। ঋণের বিপরীতে সুদের ওপর সুদ, অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি সুদ নেওয়া হবে না।

এ ছাড়া কোনও ‘প্রসেসিং ফি’ বা আগাম ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কোনও ‘অতিরিক্ত ফি’ দিতে হবে না। ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ২০ বছর। সরকারি চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক, খণ্ডকালীন ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত কেউ এই ঋণ পাবেন না।

কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা থাকলে বা দুর্নীতি মামলার ক্ষেত্রে অভিযোগপত্র দাখিল হলে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি ঋণের অযোগ্য হবেন। তবে ফ্ল্যাট কেনা বা নিজস্ব জমিতে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে নিজেদের অন্তত ১০ শতাংশ টাকা থাকতে হবে। তৈরি ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ঋণের পুরো অর্থ এক কিস্তিতে ছাড় করবে ব্যাংক। তবে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে ঋণের টাকা ছাড় করা হবে চার কিস্তিতে।

জাতীয় বেতন কাঠামোর পঞ্চম থেকে প্রথম ধাপে (গ্রেড) বেতন-ভাতা পাওয়া সরকারি কর্মচারীরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরে বাড়ি তৈরিতে ঋণ পাবেন ৭৫ লাখ টাকা। জেলা সদরে বাড়ি তৈরি বা ফ্ল্যাট কেনায় ঋণের অঙ্ক হবে ৬০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকায় ৫০ লাখ টাকা।

নবম থেকে ষষ্ঠ ধাপে বেতন-ভাতা পাওয়া কর্মচারীরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদর এলাকার জন্য ৬৫ লাখ, জেলা সদরে ৫৫ লাখ ও অন্যান্য এলাকার জন্য ৪৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। দশম থেকে ত্রয়োদশ ধাপের কর্মচারীরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৫৫ লাখ, জেলা সদরে ৪০ লাখ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৩০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।

চতুর্দশ থেকে সপ্তদশ ধাপের কর্মচারীরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৪০ লাখ, জেলা সদরে ৩০ লাখ ও অন্যান্য এলাকার জন্য ২৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। অষ্টাদশ থেকে বিংশতম ধাপের কর্মচারীরা পাবেন ঢাকাসহ সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৩০ লাখ টাকা, জেলা সদরে ২৫ লাখ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ২০ লাখ টাকা ঋণ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Haque Milk Chocolate Digestive Biscuit
Dutch Bangla Bank Agent Banking
Wordbridge School