ঢাকা: পাসপোর্ট এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসব সব হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন গ্রিসে থাকা প্রায় তিন শতাধিক বাংলাদেশি প্রবাসী। ভয়াবহ আগুনে তাদের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
বাংলাদেশ সময় বুধবার (৩০ জুন) সকালে এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে সবাই সবকিছু ফেলে প্রাণ বাঁচাতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তবে বাংলাদেশিদের সবাই নিরাপদে আছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, অগ্নিকাণ্ডটি ঘটে রাজধানী এথেন্স থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম গ্রিসের মানোলাদা এলাকায়, যা কৃষি খামারের জন্য বিখ্যাত। সেখানে প্রায় সাত হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি দীর্ঘদিন ধরে কৃষি কাজ করছে।
অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলাদেশিরা সেখানে স্ট্রবেরি খামারসহ বিভিন্ন খামারে কাজ করেন। টিনশেডের বিভিন্ন অস্থায়ী ডরমেটিরিতে (ডেরা) তারা থাকেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, একটি ডরমিটরিতে গত রোববার আগুন লাগে, যেখানে ৩৮টি ঘর ছিল। ওই ঘরগুলো ফারাঙ্গা নামে পরিচিত। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ফারাঙ্গাগুলোতে তিন শতাধিক বাংলাদেশি ছিলেন। সেখানে তাদের পোশাক ও খাদ্যসমগ্রী, বিছানাপত্র, টাকা-পয়সাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব পুড়ে গেছে। তবে তারা প্রাণ রক্ষা করতে পেরেছেন।
স্থানীয় মিউনিসিপ্যালটি এবং ভুক্তভোগী প্রবাসীদের বরাতে দূতাবাস জানায়, রোববার বিকাল ৪টার দিকে সুনামগঞ্জের শিশু মিয়ার আওতাধীন ফারাঙ্গায় রান্নার সময় চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরদিন এথেন্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ এবং দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
দূতাবাস বলেছে, স্থানীয় মিউনিপ্যালটির সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকের খাবার এবং অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা আপাতত সেখানে ভালো আছেন। পরিদর্শনকালে ক্ষতিগ্রস্তরা রাষ্ট্রদূতকে বিনা ফিতে পুনরায় পাসপোর্ট দেয়াসহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রদূত তাদের সমবেদনা জানিয়ে পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তা, টেকসই আবাসস্থল নিশ্চিত করা এবং বৈধতার জন্য আইনি সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূত স্থানীয় ভারদা অঞ্চলের মেয়র লেজাস ইয়ানিসের সঙ্গে দুর্ঘটনা ও এর থেকে স্থায়ীভাবে উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
দূতাবাস বলেছে, মেয়রের সঙ্গে বৈঠকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরাসহ সার্বিকভাবে কৃষি খাতে নিয়োজিত কর্মীদের জন্য মানোলাদা ও এর আশেপাশের গ্রামগুলোতে টেকসই আবাসস্থল তৈরির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন রাষ্ট্রদূত। প্রবাসীদের যেকোনো প্রয়োজনে মেয়র আন্তরিকভাবে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন মেয়র।
সোনালীনিউজ/আইএ