abc constructions

যেকারণে গৃহ ঋণ নিতে আগ্রহী নয় নিম্ন গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীরা


নিজস্ব প্রতিনিধি জুলাই ১৩, ২০২১, ০৩:৪৯ পিএম
যেকারণে গৃহ ঋণ নিতে আগ্রহী নয় নিম্ন গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীরা

ফাইল ছবি

ঢাকা : দেশে বর্তমানে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গৃহ ঋণের সিলিং ৭৫ লাখ টাকা। এই সিলিং বাড়ালে তারা বড় আকারের ফ্ল্যাট কিনতে বা বাড়ি বানাতে পারবেন। অন্যদিকে, নিম্ন আয়ের চাকরিজীবীদের মাসিক কিস্তির হার কমানো হলে তারাও গৃহ নির্মাণ ঋণ নিতে উদ্বুদ্ধ হবেন। এতে সরকারি চাকরিজীবীদের বিদ্যমান আবাসন সমস্যা অনেকটা কমবে। পাশাপাশি তাদের নিজস্ব একটি স্থায়ী ঠিকানা হবে।

কিন্তু সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গৃহ নির্মাণ ঋণের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দেওয়া হলেও এ বিষয়ে স্বল্প বেতনের চাকরিজীবীদের আগ্রহ নেই। এর অন্যতম প্রধান কারণ—উচ্চ হারে মাসিক কিস্তি। অনেকের পক্ষেই প্রতি মাসে এত টাকা কিস্তি পরিশোধ করা সম্ভব হবে না।

অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিজীবীরা গৃহ নির্মাণ ঋণ নিলে দেশের আবাসন খাতের উন্নয়ন হবে। তবে, মাসিক কিস্তির পরিমাণ বেশি। কিস্তি পরিশোধের নীতিমালা সহজ করা প্রয়োজন।

সূত্র জানায়, প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী আছেন, যাদের নিজস্ব বাড়ি প্রয়োজন। মাত্র ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিলেও গৃহ ঋণ নেওয়ার বিষয়ে তাদের আগ্রহ তেমন দেখা যায়নি।

২০১৮ সালে প্রথম ১০ শতাংশ সুদে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গৃহ ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে ২০২০ সালে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থ বিভাগ থেকে ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ করা হয়। এই সুদের ৫ শতাংশ সরকার ব্যাংকগুলোকে দেবে। বাকি ৪ শতাংশ ঋণগ্রহিতাকে পরিশোধ করতে হবে। পর্যায়ক্রমে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী এবং সর্বশেষ উচ্চ আদালতের বিচারপতিদেরও এ ঋণ সুবিধা আওতায় আনা হয়।

গৃহ নির্মাণ ঋণের ঘোষণা দেওয়ার পর এ পর্যন্ত মাত্র ৪২৭ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এ ঋণ নিয়েছেন। এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনীর চারজন কর্মকর্তা এবং বিমান বাহিনীর একজন কর্মকর্তা এ ঋণ নিয়েছেন।

সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় গত তিন বছরে মোট ২৬০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা গৃহ ঋণ দেওয়া হয়েছে। 

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত তিন বছরে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত নিম্ন পদের পাঁচজন কর্মকর্তা এ ঋণ সুবিধা নিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ বিভাগের এক নিম্ন পদের চাকরিজীবী বলেছেন, ‘সরকার ঘোষিত গৃহ নির্মাণ ঋণ সুবিধা অবশ্যই একটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু এ সুযোগ আমাদের মতো নিম্ন আয়ের চাকরিজীবীদের জন্য নয়। আমার মতো মানুষদের এ ঋণ সুবিধা নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, ঋণের সুদের হার যাই হোক, কিস্তি অনেক বেশি। আমরা যে বেতন পাই, তা দিয়ে সংসারের খরচ মিটিয়ে ঋণের কিস্তি পারিশোধ করা সম্ভব নয়।’   
 
তিনি বলেন, ‘২০ হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধের পর একজন কর্মচারীর মাসিক খরচের জন্য তার হাতে আরও ১৫ হাজার টাকা থাকতে হবে। তাছাড়া, ব্যাংকগুলো সাধারণত কম বেতনের চেয়ে বেশি বেতনের কর্মচারীদের ঋণ দিতে বেশি পছন্দ করে। স্বামী-স্ত্রী দুজনই চাকরিজীবী হলেও ব্যাংকগুলো তাদের বিষয়ে আগ্রহ বেশি দেখায়।’ 

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্তমানে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের গৃহ ঋণের সিলিং ৭৫ লাখ টাকা। এই সিলিং বাড়ালে তারা বড় আকারের ফ্ল্যাট কিনতে বা বাড়ি বানাতে পারবেন। অন্যদিকে, নিম্ন আয়ের চাকরিজীবীদের মাসিক কিস্তির হার কমানো হলে তারাও গৃহ নির্মাণ ঋণ নিতে উদ্বুদ্ধ হবেন। এতে সরকারি চাকরিজীবীদের বিদ্যমান আবাসন সমস্যা অনেকটা কমবে। পাশাপাশি তাদের নিজস্ব একটি স্থায়ী ঠিকানা হবে।’

অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৪ লাখ ৭৭ হাজার প্রথম শ্রেণির, ১ লাখ ৩১ হাজার দ্বিতীয় শ্রেণির, ১২ লাখ ২৮ হাজার তৃতীয় শ্রেণির এবং ২ লাখ ৬৭ হাজার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আছেন।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Haque Milk Chocolate Digestive Biscuit
Dutch Bangla Bank Agent Banking
Wordbridge School