abc constructions

ঈদকে ঘিরে সক্রিয় জাল নোটের সিন্ডিকেট


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ১৫, ২০২১, ০৬:১৫ পিএম
ঈদকে ঘিরে সক্রিয় জাল নোটের সিন্ডিকেট

ঢাকা : প্রতি বছরের মতো এবারো কোরবানির পশুর হাটকে ঘিরে গড়ে উঠছে জাল নোটের সিন্ডিকেট।

সম্প্রতি জাল নোট কারবারিদের গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য মিলেছে বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। পাশাপাশি ভুয়া গোয়েন্দা পুলিশ সেজে চেকপোস্ট বসিয়ে পশু ব্যাপারীদের সর্বস্ব লুটে নেওয়ার পরিকল্পনাও করছে কয়েকটি চক্র। এ কারণে পশুর হাটে ব্যাপারীদের জালনোট কারবারিসহ এসব সিন্ডিকেটের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশুর হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের টাকা ভুয়া ডিবি পুলশ সেজে ডাকাতির পরিকল্পনা করা একদল ডাকাতকে গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা পর এসব তথ্য জেনেছে  মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ডিবির জ্যাকেট, ওয়াকিটকি ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। আটকরা হলেন-জাহিদ হাসান ওরফে রেজাউল, মানিক ব্যাপারী ওরফে দারোগা মানিক, ফারুক হোসেন ওরফে নাসির উদ্দিন ও রুবেল সিকদার ওরফে রুস্তম।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার কমিশনার হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, আটকরা সংঘবদ্ধ আন্তঃনগর ডাকাত দলের সদস্য। তারা পশুর হাটে আসা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের নগদ অর্থ ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল। পাশাপাশি ডিবি পুলিশের ছদ্মবেশে রাতে রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার সড়কে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে ডাকাতি করছিল।

এছাড়া তারা বিভিন্ন ব্যাংকের আশপাশে ওত পেতে বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন ও বহনকারী ব্যক্তিকে অনুসরণ করত। পরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে টাকা বহনকারীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ডাকাতি করত। তাই বড় অঙ্কের টাকা পরিবহনে পুলিশের মানি এস্কর্ট সেবা নেয়ার আহ্বানও জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।

জানা যায়, আটকদের নামে ডিএমপিসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে এবং তারা সবাই বিভিন্ন মেয়াদে হাজতবাস ও জেল খেটেছে। তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি এবং অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, ঈদকে ঘিরে গরুর পাইকার, গার্মেন্ট ব্যবসায়ী কিংবা যে-কেউ যদি মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেন তাহলে পুলিশকে জানান। পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে মানিস্কট সেবা নিন। মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনে অলি গলিপথ এড়িয়ে চলুন, যেখানে সিসি ক্যামেরা রযেছে সেখানে বসে লেনদেন করুন।

গরুর গাড়ি, গরু কিংবা পশুর হাটে পাইকার ও ক্রেতার টাকা যেন কেউ ছিনতাই করতে না পারে সেজন্য ডিবি পুলিশসহ ডিএমপির অন্যান্য ইউনিট সক্রিয় রয়েছে।

তিনি বলেন, ডিবি পুলিশ সব সময় বা সব জায়গায় চেকপোস্ট বসায় না। সুতরাং ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কেউ সবকিছু নিতে চাইলেই দিয়ে দেবেন না। ভেরিফাই করুন, আশপাশে পোশাকে অন ডািউটিতে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হন।

এদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৪৩ লাখ টাকার জাল নোট ও জাল নোট তৈরীর বিপুল পরিমান সরঞ্জাম জব্দ করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আরেকটি দল।  জানা যায়, পশুর হাটে বিপুল পরিমান জাল টাকা ছড়িয়ে দেয়ার মিশন নিয়েই রাজধানীর ভাটারায় স্বামী স্ত্রী মিলে এক কারখানা গড়ে তুলেছিলেন।

আটকরা হলেন আবদুর রহিম শেখ ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম, তাদের সহযোগী হেলাল খান, আনোয়ার হোসেন এবং ইসরাফিল আমিন। তারা এক হাজার টাকার ১০০ জাল নোটের বান্ডেল পাইকারিতে ১২-১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।

গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, কারখানা থেকে প্রায় ৪৩ লাখ টাকার জাল নোট ও এসব নোট তৈরির প্রচুর পরিমাণ উপকরণ পাওয়া গেছে। ঘরোয়া ওই কারখাটির মালিক রহিম ও ফাতেমা। তারা মাসে কোটি কোটি টাকার জাল নোট তৈরি করত।

তিনি জানান, ফাতেমা ২০১৯ সালে হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় জাল নোট তৈরির সময় অপর সহযোগীসহ হাতেনাতে আটক হলেও তার স্বামী রহিম পালিয়ে গিয়েছিল। এরা সবাই জাল নোট তৈরি ও মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিল।

মশিউর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জাল নোট খুচরা এবং পাইকারি বিক্রি করার পাশাপাশি গত তিন বছর ধরে ঈদসহ অন্যান্য উৎসবের আগে জাল নোট তৈরি করে বাজারে ছাড়ার কথা তারা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

এর আগে গত ২২ জুন র‌্যাব-১০ এর একটি অভিযানিক দল মেরুল বাড্ডা এলাকা থেকে জাল টাকা চক্রের এক হোতাকে গ্রেপ্তার করেছিল।

নাইমুল হাসান (২১) নামের এই হোতা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। ওই এলাকায় একটি দামি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে সে জাল টাকা তৈরি করতো। ফ্ল্যাটের ভেতরে ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার জালনোট তৈরি করতো। অভিযানের সময় তার বাসা থেকে ৫০ লাখ ২৮ হাজারের জাল টাকা পায় র‌্যাব। ১ লাখ টাকার প্রতি বান্ডিল জাল টাকা হাসান ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। তিন বছর আগে থেকে এই কারবারে জড়িয়ে প্রায় কোটি টাকা আয় করেছে সে। সেই টাকা দিয়ে বিলাসী জীবনযাপন করতো। র্যাবের কাছে সে জানিয়েছিল, পশুর হাটকে টার্গেট করেই এসব নোট তৈরি করেছে।

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান জানান, কোরবানীর পশুর হাটকে কেন্দ্র করে সারাদেশেই র‌্যাবের পৃথক টিম কাজ করবে।

এছাড়াও জাল টাকার কারবারি, মলমপার্টি, অজ্ঞান পার্টি এবং ডাকাত দলের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার থাকে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

 

 

Haque Milk Chocolate Digestive Biscuit
Dutch Bangla Bank Agent Banking
Wordbridge School