abc constructions
পরিণতির পথে বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা

ঊর্ধ্বগতিতে ছুটছে মৃত্যু


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ৫, ২০২১, ০৯:৫৫ পিএম
ঊর্ধ্বগতিতে ছুটছে মৃত্যু

ঢাকা : দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১ হাজার ৯০২ জনে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু এটি। এর আগে ২৭ জুলাই ২৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এছাড়া একই সময়ে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ১২ হাজার ৭৪৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩ লাখ ২২ হাজার ৬৫৪ জনে। 

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ৭৮৬ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৩ জন।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৬ হাজার ৯৯৫টি। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ১২ শতাংশ। 

মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৮৭ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ৫৬, রাজশাহীতে ১৯, খুলনায় ৩৫, বরিশালে ১৬, সিলেটে ২৩, রংপুরে ১৮ এবং ময়মনসিংহে ১০ জন মারা গেছেন।নিহতদের মধ্যে ১৪০ জন পুরুষ এবং ১২৪ জন নারী। 

এর আগে বুধবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৪১ জনের মৃত্যু হয়।আক্রান্ত হন ১৩ হাজার ৮১৭ জন।

এদিকে, বিশ্বে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১ হাজার ১৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও সাত লাখ ২২ হাজার ২৪ জন। আর সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৬১ হাজার ৪৪ জন।

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে বুধবার (৪ আগস্ট) আরও ১০ হাজার ৩৫ জনের মৃত্যু ও ছয় লাখ ৪৪ হাজার ৪৪৬ জনের শনাক্তের তথ্য জানিয়েছিল ওয়ার্ল্ডোমিটার।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২০ কোটি নয় লাখ ৫৯ হাজার ৩৬৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৪২ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৭ জন। তবে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৮ কোটি নয় লাখ ৬৭ হাজার ৫৫ জন।

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে এখন পর্যন্ত বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন কোটি ৬১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৭১ জনের। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ছয় লাখ ৩১ হাজার ২৯৯ জন। আর সুস্থ হয়েছেন দুই কোটি ৯৭ লাখ ৮৭ হাজার ৩১৬ জন।

তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন কোটি ১৮ লাখ ১০ হাজার ৭৮২ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন চার লাখ ২৬ হাজার ৩২১ জন। আর ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়েছেন তিন কোটি নয় লাখ ৬৭ হাজার ২২৩ জন।

তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। তবে মৃত্যুর দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশটি। সেখানে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৫৯ হাজার ৭১৫ জনে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ২৬ হাজার ৫৩৩ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছে এক কোটি ৮৮ লাখ ৮৮৪ জন।

তালিকার চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া, পঞ্চম ফ্রান্স, ষষ্ঠ যুক্তরাজ্য, সপ্তম তুরস্ক, অষ্টম আর্জেন্টিনা, নবম কলম্বিয়া, দশম স্পেন।

তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন ২৬ নম্বরে। 

ডেল্টায় আক্রান্ত ৯৮ ভাগ রোগী : দেশে জুলাই মাসে কোভিডে আক্রান্ত ৩০০ জনের নমুনা থেকে পাওয়া করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গবেষকরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য এবং এ গবেষণার পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) তাদের এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ৩০০ নমুনার জিন বিন্যাস বিশ্লেষণ করে তারা দেখেছেন, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, যা ভারতে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল। এছাড়া ১ শতাংশ সংক্রমণ হয়েছে সাউথ আফ্রিকায় প্রথম পাওয়া বেটা ভ্যারিয়েন্টের কারণে। যদিও আমাদের গবেষণায় প্রথম ১৫ দিনে এই সংখ্যা ছিল ৩ শতাংশ। একজন রোগীর ক্ষেত্রে আমরা পেয়েছি, মরিসাস ভ্যারিয়েন্ট অথবা নাইজেরিয়ান ভ্যারিয়েন্ট (তদন্তাধীন ভ্যারিয়েন্ট)। চলতি বছরের ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ওপর এই গবেষণা পরিচালিত হয়।

গবেষকরা জানান, তথ্য বিশ্লেষণের জন্য দেশের সবগুলো বিভাগের রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যাম্পলিং করেন তারা। মোট ৩০০ কোভিড পজিটিভ রোগীর ন্যাযোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়।

উপাচার্য বলেন, গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ, যাদের বয়স ৯ মাস থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ছিল। এর মধ্যে ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী রোগীর সংখ্যা ছিল বেশি। যেহেতু কোনো বয়সসীমাই কোভিড-১৯ এর জন্য ইমিউন করছে না, সে হিসেবে শিশুদের মধ্যেও কোভিড সংক্রমণের ‘ঝুঁকি নেই’- এমনটা বলা যাচ্ছে না।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারের মত ‘কো-মরবিডিটি’ রয়েছে, তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি বলে গবেষণায় দেখা গেছে। পাশাপাশি ষাটোর্ধ্ব বয়সী রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে সে ক্ষেত্রে মৃত্যু ঝুঁকি বেশি থাকছে। উপাচার্য বলেন, এ গবেষণায় টিকার কার্যকারিতার বিষয়টিও দেখা হচ্ছে, সে কাজ চলমান রয়েছে। 

গবেষণার তথ্য থেকে তুলে ধরে শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, বাংলাদেশে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে আলফা ভ্যারিয়েন্টের (যুক্তরাজ্যে উদ্ভূত) সংক্রমণ হার বেশি ছিল। পরে ২০২১ সালের মার্চের তথ্যে সাউথ আফ্রিকায় প্রথম পাওয়া বেটা ভ্যারিয়েন্টের দাপট দেখা যায়।

এ গবেষণার নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউর জেনেটিক্স অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাইদুর রহমান, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক অধ্যাপক একেএম মোসারফ হোসেন তার সঙ্গে ছিলেন।

কোভিড-১৯ এর জিনোমের চরিত্র উন্মোচন, মিউটেশনের ধরণ এবং বৈশ্বিক কোভিড-১৯ ভাইরাসের জিনোমের সাথে এর আন্তঃসম্পর্ক বের করা এবং বাংলাদেশে কোভিড-১৯ জিনোম ডাটাবেইজ তৈরি করাই এ গবেষণার লক্ষ্য। অনুষ্ঠানে গবেষণার প্রথম মাসের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পরের মাসগুলোতেও হালনাগাদ ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়।

অন্য অনেক ভাইরাসের মতো নতুন করোনাভাইরাসও ক্রমাগত রূপ বদল করে চলছে। এর মধ্যে গত বছর ভারতে এর যে পরিবর্তিত একটি রূপ শনাক্ত হয়, তা নাম দেয়া হয় ডেল্টা। এই ধরন বা ভ্যারিয়েন্টটি (বি.১.৬১৭.২) অতি সংক্রামক হওয়ায় ইতোমধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে অসুস্থতার মাত্রাও আগের তুলনায় বেশি হচ্ছে, বিশেষ করে যারা টিকা পায়নি, তাদের ক্ষেত্রে।

ঢাকার রাস্তায় যানজট ভোগান্তি : করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লকডাউনে রাজধানীর সড়কগুলোতে যান চলাচল বেড়ে রাস্তার মোড় কিংবা ক্রসিংগুলোতে দীর্ঘ যানজট দেখা যাচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) লকডাউনের চতুর্দশ দিনে মিরপুরের পীরেরবাগ ছাপড়া মসজিদ থেকে মোটরসাইকেলে করে মহাখালীর তিতুমীর কলেজে পৌঁছাতে সময় লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা।

যদিও ঈদের পর থেকে শুরু হওয়া ‘কঠোর লকডাউনের’ শুরুর দিকে ১২ কিলোমিটারের এই আঁকাবাঁকা সড়ক ২০ থেকে ২৫ মিনিটেই পাড়ি দেয়া যেত। লকডাউনের মধ্যেও এখন সময় বেশি লাগার কারণ হল আগারগাঁও, রেডিও স্টেশন, বিজয় স্মরণির দুই প্রান্ত, তেজগাঁও নাবিস্কো এবং মহাখালী ক্রসিংয়ের দীর্ঘ জট।

রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা মিলছে কিছু অটোরিকশাও। ব্যস্ত সড়কের মোড়ে মোড়ে যানজটের পাশাপাশি ফুটপাথেও বেড়েছে মানুষের চলাচল। মালিবাগ, কাকরাইল, রামপুরা, ফকিরেরপুল ঘুরে দেখা গেল সব সড়কেই ব্যস্ততা। এসব এলাকায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে প্রচণ্ড গরমে ছাতা হাতে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

কাকরাইলের কাছে প্রাইভেট কার চালক শামীম বলেন, গুলশান থেকে এসেছি, যাব মতিঝিল। পাঁচটা মোড় পার হয়ে কাকরাইল মোড়। সব জায়গায় যানজট দেখলাম। রাস্তায় নামলে লকডাউন নেই বলেই মনে হয়। লকডাউনে শুরুর দিকে মানুষ বাইরে কম বের হলেও এখন বিভিন্ন প্রয়োজনে রাস্তায় নামছেন। তল্লাশি চৌকিগুলোতে পুলিশের তৎপরতাও প্রায় থেমে গেছে। রাজধানীর আগারগাঁও এবং মিরপুরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা ষাট ফুট সড়কে লকডাউন একটি তল্লাশি চৌকি দেখা গেছে। যেখানে ১০-১২ জন পুলিশ সদস্য সড়কের পাশে ফুটপাথে অবস্থান করছিলেন।

একজন পুলিশ সদস্য তল্লাশি চৌকির ব্যারিকেডের আড়ালে দাঁড়িয়ে সবাইকে মাস্ক পরার অনুরোধ করছিলেন। দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা উপপরিদর্শক রিয়াজুলের কাছে প্রশ্ন ছিল- তল্লাশি কী থেমে গেছে? তিনি বলেন, রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে জনে জনে ধরে তল্লাশি করা বা বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া কঠিন। তবে সবাইকে মাস্ক পরার জন্য সতর্ক করছি। রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগর সড়কে যানবাহনের চাপ আগের মতই দেখা গেছে। তবে প্রাইভেট কারের সংখ্যা বাড়ছে।

এসব এলাকার সড়কে পুলিশের চেকপোস্টগুলো থাকলেও তেমন কড়াকড়ি দেখা যায়নি। কাকরাইল চেকপোস্টের সামনে পুলিশের দেয়া নির্দেশিত পথে প্রাইভেট কার, পণ্যবাহী গাড়ি বাঁধাহীনভাবে চলাচল করেছে। খোকন নামে এক রিকশা চালক বললেন, পুলিশের চেকপোস্টে আগের মত প্রাইভেট কারকে থামাইয়া রাখে না। লকডাউন শেষের দিকে বইলা কড়াকাড়ি থাইমা গেছে।

লকডাউনে রাজধানীর সড়কে রিকশা, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ির পরিচয়ে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকার চলাচল করছে, ভাড়া নিয়েও চলছে নৈরাজ্য। সকালে আগারগাঁও রেডিও কার্যালয়ের সামনে কালো গ্লাসের একটি সৌখিন এসইউভি ঘিরে ৪-৫ জন মানুষের জটলা দেখা যায়। জনপ্রতি ২০০ টাকা ভাড়া গুণে ওই গাড়িতে করে উত্তরা যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তারা।

যাত্রীদের মধ্যে ভাগাভাগি করে এ ধরনের গাড়ি কিংবা প্রাইভেট কারে যাওয়া চেষ্টাই বেশি দেখা গেল। কারণ এই লকডাউনের মধ্যে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে চড়ে উত্তরা যেতে গুনতে হবে কমপক্ষে তিনশ টাকা। সড়ক আর অলিগলিতে মানুষের ব্যস্ততার সঙ্গে বাজারেও বাড়ছে ভিড়। 

শান্তিনগর বাজার, ফকিরেরপুলে বাজারে লোকজনের উপস্থিতি গত কয়েকদিনের তুলনায় বেড়েছে। কাঁচাবাজারগুলো এখন পুরোপুরি খুলতে শুরু করেছে। এর আগে সংক্রমণ ঠেকাতে বাজারের সামনে খোলা রাস্তায় তরিতরকারি বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় ভাসমান বাজারের কারণে যানজটের ভোগান্তি হওয়ায় আবারও বাজারের ভেতরে ভিড় বাড়ছে।

রাজারবাগের বাসিন্দা ফরিদা ইয়াসমীন বলেন, যেভাবে গাড়ি-ঘোড়া রাস্তায় দেখা যাচ্ছে তাতে তো রাস্তার পাশে বাজার করা একটু রিস্কি। সেজন্য ভেতরেই বাজার করছি। গত তিনদিন আগেও রাস্তার পাশে বাজার করেছিলাম।

লকডাউনে এখনও শপিংমল আর মার্কেটগুলো পুরো বন্ধ আছে। রামপুরার বাসিন্দা নেছার উদ্দিন বলেন, কর্ণফুলী শপিংমলে আমার একটা দোকান আছে। ৪ জন স্টাফ। আজকে ১৫ দিন বন্ধ। মাসের অর্ধেক চলে গেছে। আরও ৫ দিন পর দোকান খোলা যাবে। কীভাবে ব্যবসা চালাব বুঝতে পারছি না। লকডাউন আমাদের মতো ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের গলা টিপে ধরেছে। সরকারের উচিত এভাবে লকডাউনের বিকল্প কিছু চিন্তা করা।

কর্ণফুলী শপিং মলের মতো টুইনটাওয়ার, মৌচাকসহ এই এলাকার বড় বড় শপিংমলগুলোতে অনেক  ছোট ছোট দোকানদার রয়েছেন যারা দুশ্চিন্তায়ে রয়েছেন। মৌচাকের কাছে পান বিক্রেতা সোহরাব বলেন, মৌচাকের ভেতরে ছোট ছোট দোকানদাররা প্রতিদিনই এখানে এসে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়। তারা খুব কষ্টে আছেন স্যার।

প্রজ্ঞাপন জারি : এদিকে, চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ আগামী ১০ আগস্ট মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শিল্প, কলকারখানা বিধিনিষেধের আওতা বহির্ভূত থাকবে; স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল করবে। 

গত মঙ্গলবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সচিবালয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের জানান, বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও পাঁচ দিন অর্থাৎ ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ১১ আগস্ট থেকে খুলবে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি অফিস, দোকানপাট, শপিংমল; চলবে গণপরিবহন।

তিনি বলেন, ১১ আগস্ট থেকে এই কঠোর বিধিনিষেধ আর থাকবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু ধীরে ধীরে খুলে দেয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, ১১ আগস্ট থেকে দোকানপাট খুলে দেয়া হবে। ওইদিন থেকে সড়কে পুনরায় গণপরিবহন চলাচল করবে। ১০ তারিখ পর্যন্ত বিধিনিষেধের সময়ের মতো চলবে, ১১ তারিখ থেকে খুলবে অফিস।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Haque Milk Chocolate Digestive Biscuit
Dutch Bangla Bank Agent Banking
Wordbridge School