• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

খিলগাঁও মডেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৬, ২০২২, ০৯:৫৮ পিএম
খিলগাঁও মডেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

ঢাকা: চুরি, স্বাক্ষর জাল, যৌন নিপীড়নসহ নানা অভিযোগ খিলগাঁও মডেল কলেজ এন্ড বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিব হাসান ও সাধারণ সম্পাদক সুমন খানের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, কলেজ সংসদে প্রকাশ্যে মদপান করে মেয়েদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা, ইভটিজিংসহ নানা অপকর্ম করছে তারা। সভাপতি রাকিব হাসানের কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব ও নানাভাবে হেনস্তার কারণে সমাজকর্ম বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী কলেজে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।

কলেজ সূত্র আরও জানায়, করোনার সময় গরিব অসহায় শিক্ষার্থীদের বেতন ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে এবং অর্ধেক টাকা কলেজে জমা দেয়। এমনকি ছাত্রলীগের এই দুই নেতা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অধ্যক্ষের স্বাক্ষরও জাল করে। টাকা আদায়ের স্বীকারোক্তিমূলক একটি ভয়েজ রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মিহিররঞ্জন দে বলেন, ‘আমি বিষয়টা শুনেছি। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। আর স্বাক্ষর জালের বিষয়টি আমাদের আগের অধ্যক্ষ বলতে পারবেন। আমি তখন দায়িত্বে ছিলাম না।’

এছাড়া কলেজের লিফটের মালামাল ও রড চুরির মতো ঘটনাও ঘটায় সভাপতি রাকিব হাসান। এ বিষয়ে এসএম নওরোজ নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি রাকিব হাসানকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে। বর্তমানে তারা ওই মামলায় জামিনে রয়েছে। এমনকি কৌশলে বিয়ার ও সিগারেট ক্যামেরার ফ্রেমে রেখে গোপনে ছবি তুলে ছাত্রলীগনেত্রীকে ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠে সাধারণ সম্পাদক সুমন খানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন ছাত্রলীগের এক নেত্রী। সেই মামলাটিও এখনো চলমান রয়েছে।

এ দিকে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও ইভটিজিংয়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। যৌনহয়রানির একাধিক ছবি ও ভিডিও সংরক্ষিত রয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খিলগাঁও মডেল কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও সাবেক সভাপতি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। কয়েকজনের জন্য সুপারিশ করেছি। তবে তা সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ। আমাদের কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষার্থীদের ওপর দায় দিচ্ছে। তাদের বের করে শাস্তির আওতায় আনা উচিত বলে আমি মনে করি।

তিনি আরও বলেন, আমি একাধিকবার বলেছি, ‘তোমরা এসব কেন করছ? এতে ছাত্রলীগের বদনাম হচ্ছে। যে মেয়েরা তোমাদের ভরসা করবে, এখন তারা তোমাদের ভয়ে কলেজে আসতে পারে না, এটা ঠিক না।’

এ বিষয়ে খিলগাঁও মডেল কলেজ এন্ড বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিব হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পারলে আপনি একটা নিউজ করে দেন। আর কোনো বক্তব্য নাই আমার।’

এ বিষয়ে খিলগাঁও মডেল কলেজ এন্ড বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান বলেন, ‘আমাকে আমার মহানগর সভাপতিও এ বিষয়ে বলেছেন। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে এমন কোন অভিযোগ নেই। আর সভাপতির (সুমনের) বিষয়টা তো আমি বলতে পারব না।’

ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ বলেন, ‘আমি এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে কোনো অভিযোগ পেলে, অবশ্যই তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। ’

ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, ‘ছাত্রলীগ কখনই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না, আগামীতেও দিবে না। যদি কেউ ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কোনো অপরাধ করে, সে ছাত্রলীগ করার অধিকার রাখে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!