• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যেভাবে উদ্ধার হলো কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজারের চুরি যাওয়া মোবাইল-টাকা


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৯, ২০২২, ০৩:৩৮ পিএম
যেভাবে উদ্ধার হলো কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজারের চুরি যাওয়া মোবাইল-টাকা

ঢাকা: কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সংবাদ সম্মেলনের সময় স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ারের চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের গুলশান বিভাগ। এসময় চোরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

তার নাম আজিজ মোহাম্মদ (৪৫)। এসময় মোবাইল চোর চক্রের আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন রনি হাওলাদার (৪০) ও মো. জাকির হোসেন (২৫)।

ডিবি জানায়, স্টেশন ম্যানেজারের মোবাইল চোর আজিজ একজন কোরআনে হাফেজ। তিনি দীর্ঘ ৩৩ বছর সৌদি আরবের বিভিন্ন নাম করা মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইমামতির পাশাপাশি গাড়ি চালাতেন। এরপর সৌদি আরবে গাড়ি চুরি করা শুরু করেন আজিজ। গাড়ি চুরির মামলায় তিন বছর সাজাও হয় তার। সাজা ভোগ করে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে এসে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান নিয়ে একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন, কিছুদিন পর মাদরাসায় মোবাইল চুরি করে ধরা পড়লে তার চাকরি চলে যায়।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুপুরে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে মোবাইল চোর চক্রের সক্রিয় তিন সদস্যকে ১৭টি চোরাই মোবাইলসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের তথ্যমতে কমলাপুর রেলস্টেশন, গুলিস্তান গোলাপশাহ মাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৭টি উন্নতমানের চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

ডিবি গুলশান বিভাগের ডিসি বলেন, গত ২৩ মার্চ সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ারের অফিস কক্ষে ঈদুল ফিতরের অগ্রিম টিকিট বিক্রি সংক্রান্ত প্রেস কনফারেন্সের সময় দুটি মোবাইল ফোন, একটি ওয়ালেটের ভেতর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং নগদ ৪৫ হাজার টাকাসহ টেবিলের ওপর থেকে সুকৌশলে চুরি করে নিয়ে যায় চোর। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ ঘটনাটির ছায়া তদন্ত করতে থাকে।

ঘটনার ২৫ দিন পর তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গত বুধবার (১৮ মে) চোরাই মোবাইলসহ চোর আজিজ মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়। আজিজ মোহাম্মদ জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে সে সুকৌশলে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে স্টেশন ম্যানেজারের ফোন এবং ওয়ালেট চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়।

ডিসি মশিউর রহমান আরও বলেন, গ্রেফতার চোর আজিজ একজন কোরআনে হাফেজ। তিনি দীর্ঘ ৩৩ বছর সৌদি আরবের বিভিন্ন মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সৌদি আরবে ইমামের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন মালিকের গাড়ি চালকের কাজও করতেন তিনি। ড্রাইভিং করতে করতে তার গাড়ি চুরির নেশা হয়। বিএমডব্লিউ, লেক্সাসের মতো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি গাড়িও চুরি করতেন তিনি। ২০১৫ সালে গাড়ি চুরির মামলায় সৌদি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন আজিজ মোহাম্মদ।

গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গাড়ি চুরির মামলায় তিন বছর সাজা হয় তার। সাজা ভোগ করে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে এসে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান নিয়ে একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। কিছুদিন পরে মাদরাসায় মোবাইল চুরি করে ধরা পড়লে চাকরি চলে যায়। এরপর থেকে সে ঢাকা শহরে এসে বিভিন্ন মেসে অবস্থান করে।

তিনি আরও বলেন, ‘আজিজ মোহাম্মদ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, সে দীর্ঘ তিন বছর ধরে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ঢাকা মেডিকেল, টিএসসি চত্বর, নগর ভবন, গুলিস্তান, ধানমন্ডি লেক ও যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি সপ্তাহে ৮ থেকে ১০টি করে মোবাইল চুরি করত। এরপর চোরাই মোবাইলগুলো গ্রেফতার রনি হাওলাদার ও জাকির হোসেনের কাছে বিক্রি করত। আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য।’

সোনালীনিউজ/এন

Wordbridge School
Link copied!