• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নাযাতের দশটি দিন আমরা আল্লাহর দিকে ফিরে যাই


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৬, ২০১৭, ০৩:১২ পিএম
নাযাতের দশটি দিন আমরা আল্লাহর দিকে ফিরে যাই

ঢাকা : ৩৬৫ দিনের মধ্যে মাত্র ৩০ দিন রমাদান। বছরের হিসেবে ১২ ভাগের ১ ভাগ। দেখতে দেখতে আজ ২০ রমাদান। আর ১০ দিন পরে আপনি চাইলেও মহিমান্বিত মাসটিকে এই বছর ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। আচ্ছা এই যে এই মাসটি আপনার জন্য রহমত এবং পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে এল, আপনি কতটা বদলে গেলেন?

রাসুল (স) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সহীত সওয়াবের আশায় রমাদানে সাওম আদায় করে, তার বিগত জীবনের সব গুণাহ মাফ করে দেয়া হবে।’ সমস্যা হল সওয়াব আমরা সবাই চাই কিন্তু ক’জনের ইমান আছে?

রমাদানের প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য মাসগুলো থেকে এ মাসে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করা সহজ। রহমত, বরকত, নাযাত এবং মাগফেরাত রমাদানের চলমান কর্মসূচী। আপনি যেভাবে চাইবেন, সেভাবেই আল্লাহ আপনাকে দেয়ার জন্য অপেক্ষা করে আছেন। আপনার চাওয়া শেষ হবে কিন্তু আল্লাহর রহমতের শেষ হবে না। তাই আপনি নিজের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন, না ব্যাট-বলে দেশের রাজত্বের জন্য হাত তুলবেন, নফল সালাত পড়তে আল্লাহর সামনে দাঁড়াবেন, না টিভির স্ক্রিনে পলকবিহীন তাকিয়ে থাকবেন, নিজের গুণাহ মাফ করতে সচেষ্ট হবেন, না দেশের জয়ে উল্লাসিত হয়ে ঘুমোতে যাবেন সে আপনার ব্যাপার। কেয়ামতে আপনার দেশ বলে কিছু থাকবে না।

আমি শুধু আপনাকে সতর্ক করি এই কারণে, আপনার প্রিয় বন্ধুটি সারারাত পড়ে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার পর আপনি ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী থেকে গেলে আপনার যে আফসোস হয়, কেয়ামতের ময়দানে এই আফসোস এত প্রকট হবে তখন নিজেকে ধিক্কার দেয়া ছাড়া আপনার করার কিছুই থাকবে না।

আল্লাহর রাসুল(স) রমাদানের শেষ দশকে কি করতেন? কোমড়ের কাপড় শক্ত করে নিয়ে ইবাদাত করতেন। সারারাত জাগ্রত থাকতেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতেন। আই রিপিট, কার কথা বললাম? যার কথা বললাম গুণাহ বলতে কোন শব্দ তাঁর আমলনামায় নেই। রাসুল (স)। সুরা আল ইনশিরাহতে আল্লাহ রাসুল(স) কে বলেন, ‘যখন আপনি অবসর পান, তখন আপনি আপনার পালনকর্তার প্রতি মনোনিবেশ করেন।’

আমরা সবাই জানি রাসুল(স) কোন চাকরী করতেন না। তাহলে তার অবসর সময়ের কথা কেন আসল? আসলে, প্রত্যেক মানুষেরই প্রতিদিনের অবসর সময় রয়েছে তা আপনি যা করেন না কেন। সেসময় আপনাকে ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা না করে আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার কথা মনে করিয়ে দেয়া হচ্ছে।

আসুন, অন্তত এই দশটি দিন আমরা আল্লাহর দিকে ফিরে যাই। হুররে বলার চেয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলার অনুশীলন করি। রমাদানকে সাহরী বা ইফতার উৎসব, কেনাকাটার প্রতিযোগিতা, টিভিতে সারাদিন পার করার চেয়ে এই মাস যে গুণাহ মাফ করানোর মাস এটা অন্তত ভাবি। কাজ শেষ হলে দ্রুত বাসায় ফিরি। নিজের কক্ষে সঙ্গোপনে আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান হই। নিজের পাপগুলো মনে করে বার বার মাফ চাই।

যে মানুষগুলো পাহাড় ধসে মারা গেল তারাও ভেবেছিল আগামী রমাদানে অনেক কিছু করবে। যে সেনা কর্মকর্তারা মারা গিয়েছেন তাদের অনেক পরিকল্পনা হয়তো ছিল ঈদ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে। এমন অনেক মানুষই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে যারা ভেবেছিল এই রমাদানে বদলে যাবে।

এই কথাগুলো বলার একটাই কারণ, তা হলো রাসুল(স) ও জীবরীল আমিনের অভিশাপ। রাসুল(স) বলেন, যে ব্যক্তি রমাদান পেয়েও স্বীয় গুণাহ মাফ করাতে পারলো না, সে ধ্বংস হোক।

সোনালীনিউজ/এমটিআিই

Wordbridge School
Link copied!