• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আল্লাহর ৯৯ নাম : অসীম জ্ঞানের উৎস


মুফতি এনায়েতুল্লাহ জুন ৫, ২০১৬, ০৪:৩১ পিএম
আল্লাহর ৯৯ নাম : অসীম জ্ঞানের উৎস

আসমাউল হুসনা হলো তাওহিদ বিষয়ক যাবতীয় জ্ঞানের মূল উৎস। আসমাউল হুসনা সম্পর্কে জানার মাধ্যমেই আল্লাহতায়ালার মহান সত্তার যথাযথ পরিচয় লাভ করা সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর অনেক সুন্দর নাম রয়েছে। তোমরা এসব নামেই তাকে ডাকো। আর যারা তাঁর নামে বিকৃতি ঘটায়, তাদের পরিত্যাগ করো।

আল্লাহ তায়ালার ব্যাপ্তি সম্পর্কে জানা, বোঝা ও উপলব্ধি করা কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু আল্লাহর অসীম ব্যাপ্তি সম্পর্কে সামান্য ধারণা পাওয়া সম্ভব তার মহান গুণাবলি থেকে। আল্লাহতায়ালার একেকটা গুণ তাঁর একেকটা নাম। আল্লাহতায়ালার নামের সংখ্যাও অনেক, কিন্তু মানুষকে জানানো হয়েছে মাত্র ৯৯টি।

আল্লাহতায়ালার এ গুণবাচক নামগুলোকে ‘আল-আসমাউল হুসনা’ বলা হয়। ‘আল-আসমা’ অর্থ নামগুলো, ‘আল-হুসনা’ অর্থ সুন্দরতম; এগুলোকে আল্লাহর সিফাতি বা গুণবাচক নামও বলা হয়। কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালার অনেকগুলো গুণবাচক নাম উল্লেখ রয়েছে।

এই নামগুলোর প্রত্যেকটির আগে আরবি ‘আল’ সংযুক্ত হলে অর্থের ব্যাপ্তি বেড়ে অনির্দিষ্ট বা তুলনাহীন হয়ে যায়। যেমন- আল্লাহতায়ালার নাম ‘রহমান’ (দয়ালু)-এর আগে ‘আল’ সংযুক্তির কারণে এর অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহ অসীম দয়ালু, যে দয়ার ভা-ার কখনও শেষ হওয়া সম্ভব নেই এবং যার থেকে বেশি দয়ালু হওয়া কারও পক্ষে সম্ভব নয়।

আসমাউল হুসনা হলো তাওহিদ বিষয়ক যাবতীয় জ্ঞানের মূল উৎস। আসমাউল হুসনা সম্পর্কে জানার মাধ্যমেই আল্লাহতায়ালার মহান সত্তার যথাযথ পরিচয় লাভ করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর অনেক সুন্দর নাম রয়েছে। তোমরা এসব নামেই তাকে ডাকো। আর যারা তাঁর নামে বিকৃতি ঘটায়, তাদের পরিত্যাগ করো। (সূরা আরাফ : ১৮০) আল্লাহতায়ালা নিজ সত্তার জন্য কোরআনে কারিমে যেসব গুণবাচক নামের ঘোষণা দিয়েছেন এবং হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহতায়ালার জন্য যেসব সুন্দর নামের কথা উল্লেখ করেছেন, সেগুলোই ‘আসমাউল হুসনা’ হিসেবে মুসলিম সমাজে পরিচিত।

আসমাউল হুসনা পাঠের ফজিলত অনেক। তিরমিজি শরিফের এক হাদিসে আল্লাহতায়ালার ৯৯টি গুণবাচক নাম একত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালার ৯৯টি নাম আছে। যে ব্যক্তি তা গণনা (পাঠ) করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

আমরা জানি, হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.) যখন জান্নাতে বিশেষ পরীক্ষার সম্মুখীন হলেন, তখন তাঁরা মুক্তিলাভের নিমিত্তে ‘আসমাউল হুসনা’র অন্যতম নাম ‘আত-তাউয়্যাবুর রাহিম’ বেশি বেশি করে পাঠ করেছেন। এই নামের উছিলায় আল্লাহতায়ালা বান্দার তওবা কবুল করে থাকেন। এভাবে ৯৯টি নামের আলাদা আলাদা ফজিলত বর্ণিত হয়েছে, যা মানুষের পার্থিব ও পরকালীন জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

একটি হাদিস থেকে জানা যায়, কিয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালার ক্রোধ তীব্র থেকে তীব্রতর হলে মানুষজন দ্রুত শাফায়াতকারীর অনুসন্ধান করতে থাকবে। তখন ‘মাকামে মাহমুদে’র অধিকারী হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) শাফায়াত করবেন এবং এ সম্মান তাঁর জন্যই বরাদ্দ। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, শাফায়াত করতে গিয়ে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহতায়ালার চমৎকার স্তুতি ও প্রশংসাগুলো থেকে এমন কিছু বলবেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে হজরত রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলা হবে, হে মোহাম্মদ! তুমি তোমার শরীর উত্তোলন করো। তুমি নিবেদন করো; তোমাকে দেওয়া হবে; তুমি শাফায়াত করো, তোমার শাফায়াত কবুল করা হবে।’ (সহিহ বুখারি)

এই হাদিসে চমৎকার স্তুতি ও প্রশংসা দ্বারা আল্লাহতায়ালার গুণবাচক ওই বিশেষ নামগুলোকেই বোঝানো হয়েছে। সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহতায়ালার এই বিশেষ নামগুলো পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে এবং এসব নামের উছিলা দিয়ে দোয়া করলে সেই দোয়াগুলো আল্লাহতায়ালা কবুল করে থাকেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!