• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি নজরদারি!


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১, ১২:৩৬ পিএম
সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি নজরদারি!

ঢাকা : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই সরকার এবার সামাজিক মাধ্যমগুলোকে আইনের আওতায় আনার কথা বলছে। যদিও মন্ত্রীরা বলছেন, আমরা একে নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। কিন্তু আইনের আওতায় থাকা দরকার। অবাধ তথ্যপ্রবাহের কারণে জাতীয়ভাবে সমাজ বিভ্রান্তিতে পড়ে। মানবতাবিরোধী, সমাজবিরোধী বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ হওয়া জরুরি।

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা বিটিআরসিকে অনুরোধ করেছি, বাংলাদেশে এসব মাধ্যমের অফিস খুলতে হবে, যেন একটা হেড অফিস থাকে। দেশে এটা না থাকার কারণে যার যেভাবে খুশি, যা খুশি প্রচার করছে, বলছে।


সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর অফিস আমাদের নাগালের মধ্যে থাকলে আমরা তাদের সঙ্গে কমিউনিকেট করে বলতে পারব এই জিনিস আসা উচিত না।

এটি কি সামাজিক মাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা-এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই না নিয়ন্ত্রণ করতে। কিন্তু আইনের আওতায় আসতে হবে।

অনেক সামাজিক মাধ্যম বাংলাদেশে অফিস খুলতে রাজি নয়-বিষয়টি মন্ত্রীর নজরে আনা হলে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। না হলে পরে দেখা যাবে। অন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে।

অবাধে বিভিন্ন তথ্যপ্রবাহের কারণে জাতি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে সবার লক্ষ রাখা উচিত বলেও মনে করেন মন্ত্রী। বলেন, মানবতাবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী, সমাজবিরোধী যেকোনো কিছু বা আমাদের সমাজ, সন্তান-সন্ততি বিভ্রান্ত হতে পারে এ সমস্ত অপপ্রচার, যেগুলো অপসংস্কৃতি সেগুলো যাতে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সেটা আমাদের দেখা উচিত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা এসব করছে তাদের নাম-পরিচয় নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা আমাদের দেশ থেকে চলে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো এনবিআরকে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি আমরা। বলেছি, ওই সমস্ত মিডিয়ায় যাদের রেজিস্ট্রেশন নাই, পরিচয় নাই তাদের বিজ্ঞাপন দেয় কেন? কোন কোম্পানি দেয়? কীভাবে দেয়? কীভাবে টাকা যায় তাদের কাছে-এসব বিষয় যেন তদন্ত করে দেখে।

উল্লেখ্য, সারা বিশ্বে গত দুই দশকে ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইমো, লাইকি, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, টিকটক, স্ন্যাপচ্যাটসহ সামাজিক যোগাযোগের নানা মাধ্যম জনপ্রিয় হয়েছে।

এর মধ্যে বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয় মাধ্যমগুলো হলো ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইউটিউব, টিকটক, ইমো। জনপ্রিয়তা বাড়ছে ইনস্টাগ্রাম, লাইকির। এর মধ্যে মতপ্রকাশের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয় ফেসবুক ও ইউটিউব। যদিও এসব মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন গোষ্ঠী তাদের অপতৎপরতা চালানোর অভিযোগ আছে।

বিশেষ করে ঘৃণা, বর্ণবিদ্বেষ, উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর ক্ষেত্রে এসব মাধ্যমকেও ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।

সরকার অবশ্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে সামাজিক মাধ্যমে সমাজবিরোধী বক্তব্য সীমিত করার চেষ্টা করেছে। তবে এই আইনের অপব্যবহারের অভিযোগ করছেন গণমাধ্যমকর্মী, সমাজকর্মী, মানবাধিকার কর্মীরা।

তাদের অভিযোগ, সরকারবিরোধী বক্তব্য যেন প্রচার করা না যায়, সে জন্যই এই আইনটির অপব্যবহার হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলা হয়েছে, মতপ্রকাশে কোনো বাধা নেই। কেবল ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা রোধের চেষ্টা চলছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!