• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মানবদেহে নতুন পেশির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা


নিউজ ডেস্ক ডিসেম্বর ২৯, ২০২১, ০৩:৩৭ পিএম
মানবদেহে নতুন পেশির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

কানের ঠিক সামনের দিকে (লাল অংশ) নতুন পেশির অবস্থান চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মানবদেহে নতুন এক পেশি খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যার অস্তিত্ব এতদিন ছিল অজানা। চোয়ালের পেছনের দিকে এই পেশির অবস্থান। ম্যাসিটার পেশির অন্তর্গত এ পেশিটি নিচের চোয়ালকে নড়াতে ও খাবার চিবুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

নতুন এ পেশির নাম দেয়া হয়েছে ‘মাসকুলাস ম্যাসিটার পারস করোনিডি’, এর অর্থ দাঁড়ায়- ম্যাসিটারের করোনয়েড অংশ।

আধুনিক শারীরবিদ্যার বইগুলোতে বলা আছে, ম্যাসিটার পেশির দুটি স্তর আছে। একটি গভীর এবং আরেকটি অগভীর। তবে কিছু প্রাচীন বইয়ে পেশির তৃতীয় আরেকটি স্তরের কথা বলা হয়েছে, যেটি এর অবস্থানের সঙ্গে একেবারেই বেমানান।

আর সেই ‘তৃতীয় স্তরটি’ নতুন করে যাচাই করেছেন সুইজারল্যান্ডের একদল বিজ্ঞানী। তাদের গবেষণার ফল গত ২ ডিসেম্বর অ্যানালস অফ অ্যানাটমি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় ফরমালডিহাইডে সংরক্ষিত ১২টি মৃতদেহের মাথায় বিস্তর কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ১৬টি নতুন মৃতদেহের সিটি স্ক্যান ও একটি জীবন্ত দেহের এমআরআই করেছেন বিজ্ঞানীরা।

আর এসব পরীক্ষার মাধ্যমে ম্যাসিটার পেশির অন্তর্গত, তবে ‘শারীরবৃত্তিকভাবে আলাদা’ একটি তৃতীয় স্তরকে চিহ্নিত করা গেছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, চোয়ালের হাড়ের মতো দেখতে জায়গা যেটাকে ‘চিক বোন’ বলা হয়, সেই জাইগোম্যাটিক অস্থি থেকে শুরু হয় পেশির এই অতি-গভীর স্তরটি। কানের ঠিক সামনের দিকেই এর অবস্থান। এরপর এটি চলে গেছে নিচের চোয়ালের ত্রিভুজাকৃতির করোনয়েড প্রসেসের দিকে।

ইউনিভার্সিটি অফ বাসেলের বায়োমেডিসিন বিভাগের শিক্ষক সিলভিয়া মেজুই এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ম্যাসিটার পেশির এই গভীর অংশটি বৈশিষ্ট্য ও কার্যপ্রণালির দিক থেকে অন্য দুটি স্তর থেকে স্পষ্টতই আলাদা।’

গবেষক দল তাদের নিবন্ধে লিখেছেন, পেশির আঁশের বিন্যাস দেখে বোঝা যায়, এই পেশিটি করোনয়েড প্রসেসের ‘প্রসারণ ও সংকোচনের’ মাধ্যমে নিচের চোয়ালকে স্থিতিশীলতা দেয়।

মেজুইয়ের মতে, চোয়ালের হাড়কে পেছনের দিকে টেনে রাখা ম্যাসিটার পেশির অংশেই নতুন এই পেশিস্তরের অবস্থান।

বাসেল ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর ডেন্টাল মেডিসিনের অধ্যাপক ও চিকিৎসক ইয়েনস ক্রিস্টফ টুর্প বলেন, ‘গত ১০০ বছরের শারীরবিদ্যার গবেষণায় নতুন আর কিছু উন্মোচনের বাকি নেই বলে মনে করা হয়ে থাকে। তবে আমাদের এ আবিষ্কারটি নতুন প্রজাতির মেরুদণ্ডী কোনো প্রাণী আবিষ্কারের চেয়ে কোনো অংশে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।’

গবেষকদের দাবি, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এ আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নতুন এ পেশিস্তর সম্বন্ধে চিকিৎসকেরা অবগত থাকলে চোয়ালের ওই অংশে অস্ত্রোপচার আরও নিখুঁত হবে। এ ছাড়া চোয়ালের হাড়কে খুলির সঙ্গে সংযোগকারী জয়েন্টের চিকিৎসা আরও ভালোভাবে করা যাবে।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!