• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির সঙ্গে নেই ১৯ দল 


বিশেষ প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০, ০৩:৫১ পিএম
বিএনপির সঙ্গে নেই ১৯ দল 

ঢাকা : বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ভেঙে গেছে! এমন শিরোনামে গণমাধ্যমে একাধিকবার নিউজ প্রকাশ করা হলেও বিএনপিও শরীকদলগুলো বরাবরই সেই দাবি নাকচ করেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আসন্ন পাঁচটি উপনির্বাচনের দলটির অংশ করা নিয়ে সেই ভাঙন পরিস্কার হয়েছে। এতোদিন শরীক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রার্থী ঠিক করলেও এবার কোনো প্রকার আলোচনা বা যোগাযোগ ছাড়াই এককভাবে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী দিয়েছে বা দিচ্ছে বিএনপি। 

এরই মধ্যে ঢাকা-৫ আসন ও নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী চূড়ান্ত ঘোষণা করেছে বিএনপি। গেল রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) দলটি দুই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। উপনির্বাচনে ঢাকা-৫ আসনে সালাহউদ্দিন আহমেদ ও নওগাঁ-৬ এ শেখ মোহাম্মদ রেজাউল ইসলামকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, উভয় আসনেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২০ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৭ সেপ্টেম্বর।

এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর চারটি উপনির্বাচনের জন্য বিএনপির মনোনয়ন প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার হয়েছিল। ওই দিন ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী এম কফিল উদ্দিন আহম্মদের সমর্থকদের মারধর করে রক্তাক্ত করেছিলেন এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনের লোকজন। এই নিয়ে মুখোমুখি হয়ে পড়া দু’জনের মধ্যে এখনো বাদানুবাদ চলছে। এবিষয়টি গড়িয়েছে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পর্যন্ত। 

নির্বাচনের মাঠে নামার আগেই দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি আর দ্বন্দ্ব এখন চরমে পৌঁছেছে। যেটা অনেকটা পরিস্কার তাদের দু’পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে। 

এমন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে একজন প্রভাবশালী ২০ দল নেতা বলেন, বিএনপি নেতারা আর মলম পার্টির মধ্যে কোনো প্রার্থক্য নেই। তারা সব সময় কেউ রিজভী, কেউ ফখরুল আর কেউ তারেকের রাজনীতি করেন। আবার কেউ কেউ অতিমাত্রায় খালেদা জিয়ার ভক্ত হয়ে দলের মধ্যে কোণঠাসা হয়ে আছেন।  

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, দীর্ঘদিন বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ হয় না। আসন্ন উপ-নির্বাচনগুলোতে তারা এককভাবে প্রার্থী দিলেও আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। আমরাও আলাদাভাবে প্রার্থী দেওয়ার চিন্তাভাবনা করেছিলাম। কিন্তু যে দেশে কে কত ভোট পাবে এটা নির্বাচন কমিশন ঠিক করে দেয়, ১০৪ ভাগ ভোট কাস্ট হয়, সে দেশে প্রার্থী দিয়ে কোনো লাভ হবে না। তার চেয়ে বড় কথা হলো এসব উপ-নির্বাচন গুরুত্বহীন।

এবিষয়ে বিএনপির আরও দুজন স্থায়ী কমিটির সদস্যের সঙ্গে কথা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে জোট নেতাদের সঙ্গে উপ-নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়নি। তারাতো এসব নির্বাচনে এমনিতেই অংশ নিতে আগ্রহী না। এই নির্বাচন কেমন হবে তাও বোঝা যায়। 

নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, উপ-নির্বাচনে বিএনপি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, এটা তাদের অধিকার আছে। তাতে ঐক্যফ্রন্ট ভেঙে যায়নি।

জোট শরীরিকদের অভিযোগের বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে আমাদের এমন কোনো রাজনৈতিক এগ্রিমেন্ট নেই যে, আমরা এককভাবে প্রার্থী দিতে পারবো না।  তবে কি ২০ দল ভেঙে যাচ্ছে এমন প্রশ্নে, কিছু বলেননি ফখরুল।

এদিকে ২০দলীয় জোটের অন্যতম শরীরিক জামায়াতের ইসলামি একাধিক নেতার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগা মাধ্যমে যোগাযোগ করেও তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দলটির মাঠপর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই উপ-নির্বাচন নিয়ে ঢাকার বাহিরে তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই।

এছাড়া অপরাপর শরীকদের কেউ মুখে বলছেন আবার কেউ কেউ এরই মধ্যে নিজেদেকে গুটিয়ে নিয়েছেন বিএনপির রাজনীতি থেকে। 

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!