• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
চার সহযোগী সংগঠনের নতুন কমিটি

বিতর্কিতদের নিয়ে আ.লীগে অস্বস্তি


আবু ইউসুফ অক্টোবর ২৮, ২০২০, ১০:২৪ পিএম
বিতর্কিতদের নিয়ে আ.লীগে অস্বস্তি

ঢাকা : আওয়ামীলীগের কমিটি নিয়ে বির্তক যেন থামছেই না। স্বাপ্রতিক সময়ে আওয়ামীলীগের চারটি অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই কমিটি ঘোষণা করার পর নতুন করে বির্তক সৃষ্টি হয়েছে।

আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা বলছেন; প্রধানমন্ত্রীর বার বার সর্তকবাণী সত্ত্বেও এই কমিটিতে বির্তকিত ও অনুপ্রবেশকারীদের নাম আছে। এই নিয়ে আওয়ামীলীগের মধ্যে অস্বস্তি এবং বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

এই প্রেক্ষিতে আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশ দিয়েছেন যে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের অভিযোগ সম্পর্কে সুনিদিষ্ট লিখিত চিঠি দিতে।

লিখিত চিঠির প্রেক্ষিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কয়েকজনকে দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটি ওই অভিযোগের সত্যতা যাচাই বাছাই করবে। প্রয়োজনে সরজমিনে এলাকায় গিয়ে অভিযোগ সম্পর্কে খতিয়ে দেখবে। এবং শেষ পর্যন্ত যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তবে কমিটি থেকে তাকে বাদ দেয়া হবে।

আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন; যে পূর্নাঙ্গ কমিটিগুলো গঠন করা হয়েছে সে কমিটিতে যাদের নাম আছে তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে সে অভিযোগ তদন্ত করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে তাদের নাম কমিটি থেকে বাদ যাবে।  সেখানে নতুন ব্যাক্তি অর্ন্তভুক্ত করা হবে। কাজেই কমিটিতে নাম আছে বলেই তিনি নিশ্চিত এবং পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত তিনি কমিটির সদস্য থাকবেন এমন কোন গ্যারান্টি নেই।

আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা বলেছেন যে; কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নানারকম সর্তকতার পরেও কিছু কিছু ব্যাক্তির নাম এসেছে যারা বির্তকিত। আবার অনেকে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে কাউকে বির্তর্কিত করার চেষ্টা করছে। এজন্যই এটি যাচাই বাছাই করা প্রয়োজন। আওয়ামীগের যে চারটি কমিটি গঠন করা হয়েছে সে চারটি কমিটিতে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে নানারকম অভিযোগ উঠেছে।

এই অভিযোগগুলো মোটা দাগে চার প্রকার-

১. যারা বির্তকিত কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যেমন ক্যাসিনো বানিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি,

২. যারা অনুপ্রবেশকারী বিশেষ করে জামাত শিবিরের ঘরানার রাজনীতি থেকে আওয়ামীলীগে এসেছেন,

৩.  যারা বিভিন্ন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিরোধীতা করেছে এবং

৪.  যারা ওয়ান ইলেভেনসহ বিভিন্ন সময়ে আওয়ামীলীগের মূল ধারার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে। এই চারটি অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে পাওয়া যাবে তারা কমিটিতে থাকবেন না বলেই জানা গেছে।

এখন যে কমিটিগুলো ঘোষণা করা হয়েছে সে কমিটিতে এই চার বৈশিষ্টের লোকজন আছে বলে আওয়ামীলীগের অনেকে অভিযোগ করছেন। তবে আওয়ামীলীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন কিছু কিছু অভিযোগের সত্যতা অবশ্যই আছে। কয়েকজন যে বিতর্কিত আছেন তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।

অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ী ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা বেশিরভাগেই আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের শিকার। এবং ধরনের গুজব বা অপপ্রচারের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

আওয়ামীলীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন যে স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজনের নামে ক্যাসিনো বানিজ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এবং তাকে সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতির ক্যাশিয়ার বলা হয়েছে।

আওয়ামীলীগের নিজস্ব তদন্তে পাওয়া গেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি আসলে ক্যাসিনো কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তার আগোচরে এই ঘটনা ঘটেছে। গোয়েন্দা অনুসন্ধানেও দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের আগের সভাপতির সম্পত্তির পরিমাণ খুবই কম। তিনি একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন।

একইভাবে কৃষক লীগের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে তিনি জামাত শিবিরের রাজনীতির সম্পৃক্ত ছিলেন বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এ ধরনের কোন ঘটনা নেই। আর এ কারণেই বিষয়টি আওয়ামীগ সভাপতি পর্যন্ত গড়িয়েছে। আওয়ামীলীগ সভাপতি এ ব্যাপারে নির্মোহ এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আওয়ামীলীগ সভাপতি এ সমস্ত কমিটিতে যদি কোন বির্তকিত নাম থাকে তাহলে তা যাচাই বাছাই করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অভিযোগ উঠলেই কাউকে বাদ দেয়ার যে প্রবণতা সেটি যেন অনুসরণ করা না হয়। তাহলে সংগঠনের কার্যক্রমে বিঘ্ন হবে। এবং এক ধরনের অভিযোগ দেয়ার প্রতিযোগীতা তৈরি হবে মনে করছেন আওয়ামীলীগ সভাপতি।

এ কারণেই সবগুলো অভিযোগ লিখিত দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং এটি যাচাই বাছাই করা হবে। তবে লিখিত অভিযোগ দেয়ার নির্দেশনা দেয়ার পর এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে খুবই কম।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!