• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
তিস্তা চুক্তি অনিশ্চিত

নতুন মাত্রা আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ৮, ২০২১, ১১:৪৩ এএম
নতুন মাত্রা আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি

ঢাকা : বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুদিনের সফরে আগামী ২৬ মার্চ ঢাকায় আসছেন। পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন তিনি।

এর আগে বিভিন্ন সময় দু’দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য-বিনিয়োগ ও কানেক্টিভিটির বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হলেও এবারের সফরে নতুন মাত্রা পাবে আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি।

বিশেষ করে, বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ও ভুটানের (বিবিআইএন) মধ্যে যে সমঝোতা রয়েছে, সে বিষয়ে নজর দেওয়া হবে। এছাড়া মোদির সফরে দু’দেশের দ্বিপক্ষীয় কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা ও সমঝোতা স্মারক সই হবে।

সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরের আলোচ্যসূচির নির্ধারণ করতে এসে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও কানেক্টিভিটির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।

তিনি জানান, সম্পর্কোন্নয়নে আমরা কানেক্টিভিটিকে বড় লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা উদ্ধৃত করে বলেন, কানেক্টিভিটি হচ্ছে উৎপাদনশীলতা। যদি আমরা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কানেক্টিভিটি ঠিক রাখতে পারি, তবে এই অঞ্চলের সামগ্রিক ভূ-অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসবে। এক্ষেত্রে বঙ্গোপসাগর খুব কার্যকর।

তিনি বলেন, যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন ৫০ বছর পার হয়ে গেছে এবং পরের ২০ বছর কী করা যেতে পারে। আমি বলবো কনেক্টিভিটি।

এছাড়া দু’দেশের মানুষে-মানুষে যোগাযোগও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দিন শেষে দুই দেশের সম্পর্ক মানেই আমাদের জনগণের সম্পর্ক। আমাদের উচিত মানুষকেন্দ্রিক সম্পর্ক গড়ে তোলা। আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজনীতিকেও প্রাধান্য দিই এবং এটিও সম্পর্ককে নতুন মাত্রা ও গতি দেয়।

এদিকে নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে দু’দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে ব্যাপক তৎপরতা চলছে। তবে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে কোনো চুক্তির সম্ভাবনা না থাকলেও এ নিয়ে আগামী ১৬ মার্চ আলোচনায় বসবে দু’দেশ।

দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) এই বৈঠকে দু’দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবরা নিজ নিজ দেশের নেতৃত্বে দেবেন। সেখানে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে বৈঠক হবে। এতে তিস্তা নিয়ে অগ্রগতির কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও অন্যান্য নদীর পানিবণ্টন ও বেসিন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আলোচনা হবে, যা মোদির সফরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আলোচনার টেবিলে উঠবে।

মোদির ঢাকা সফর সম্পর্কে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় আসছেন। তবে তার এই সফরে কানেকটিভিটি, বাণিজ্য, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও কোভিড-পরবর্তী সময়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে।

এছাড়া ভারত থেকে আমাদের প্রচুর কাঁচামাল আসে। এজন্য আমদানি রপ্তানি বাধা দূর করার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফর নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মোদির এই সফর নির্ধারিত হলেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ ধরনের সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে।

বিশেষ করে, বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ও ভুটানের (বিবিআইএন) মধ্যে কানেক্টিভিটির বিষয়ে নজর দেওয়া হবে। যদিও নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে কানেক্টিভিটির বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে আসার লক্ষণ দেখি না। ভারতের উচিত শুধু দ্বিপাক্ষিক নয়, আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির ওপর সহযোগিতা করা।

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরে আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে ঢাকা-শিলিগুড়ি ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত ও নেপালের মধ্যে যাত্রীবাহী ও মালবাহী পরিবহন চলাচলের বিষয়েও আলোচনা হবে। কেননা এই ত্রিদেশীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার বিষয়ে সবাই সম্মত হয়েছে। যাত্রীবাহী বাস চালানোর বিষয়ে সমীক্ষার কাজও হয়েছে। এখন এই তিন দেশ মিলে এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই হবে শিগগির।

সূত্র জানায়, ভারত যেমন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে তাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রানজিট চায়, তেমনি বাংলাদেশও ভারতের ওপর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহনে ট্রানজিট চায়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!