• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দু’দলেই তৃণমূলে অসন্তোষ


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ৩০, ২০২১, ০৯:২৪ পিএম
দু’দলেই তৃণমূলে অসন্তোষ

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক কাঠামো ঢেলে সাজানো শুরু করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কিন্তু বড় দুই দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে কমিটিতে পদ পাওয়া নিয়ে বাড়ছে অসন্তোষ। অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকায় স্বার্থের দ্বন্দ্বে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে নানা গ্রুপ ও উপদল হয়েছে। এতে কোথাও কোথাও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। 

আরও পড়ুন: নতুন দলে কৌতুহলী মানুষ, সময় বলবে কে কেমন

অন্যদিকে যারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় থাকেন না, তাদের দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকায় বিএনপির তৃণমূলেও রয়েছে অসন্তোষ।

বিএনপির থানা এবং জেলা পর্যায়ের অনেক নেতাই এখন আর এলাকায় যান না। তাদের কথা, মামলার ভয়ে তারা এলাকায় যেতে পারেন না। সংগঠন করবেন কীভাবে। ফলে ঢাকা অথবা বড় শহরে থাকেন। এ অবস্থায় নানা হামলা ও মামলার ভয় উপেক্ষা করে যারা এতদিন এলাকায় কোনোরকম দলের কার্যক্রম টিকিয়ে রেখেছেন, নতুন কমিটির জন্য তাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। এলাকায় না থেকেও তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাচ্ছেন অনেকে।

আরও পড়ুন: যতটুকুতে হুমকি নেই ততটুকু আন্দোলন...
 
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কেরামত আলী খান। তিনি ১৫ বছর ধরে সাধারণ সম্পাদক। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে স্থায়ীভাবে ঢাকায় থাকছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখন বিএনপি করে মামলা খাওয়া ছাড়া আর কোনো আশা নেই। এলাকায়ও দলের নেতা-কর্মীরা নিষ্ক্রিয়। অনেকেই মামলার আসামি। আর মিছিল মিটিং করলেই গায়েবি মামলা। বিএনপি করা এখন কঠিন। আমি তো অবসর নিতে চাই। তারপরও দল সাধারণ সম্পাদক পদে নাম রেখেছে। আমি কী করব। তার কথা, এই পরিস্থিতি সারা দেশেই। তৃণমূলে বিএনপির কোনো কার্যক্রম বলতে কিছু নেই তারপরও দলীয় পদ নিয়ে অসন্তোষ হলে করার কিছুই নেই। 

আরও পড়ুন: আন্দোলনের রূপরেখা সাজিয়ে ফেলেছে বিএনপি

মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য আখতার হামিদ ডাবলু সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হলেও এর পরিসর বর্তমানে ছোট হতে হতে ঘরকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এভাবে একটি রাজনৈতিক দল চলতে পারে না।

আরও পড়ুন: হাকডাক দিচ্ছে বিএনপি, পাত্তা দিচ্ছে না আ.লীগ 

বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কাজী খায়রুজ্জামান শিপন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি, তদন্ত করা হয়েছে। এমনকি কমিটির কার্যকারিতাও নেই তারপরেও অথর্ব কমিটি অদৃশ্য কারণে টিকে আছে।

আরও পড়ুন: আন্দোলনের নতুন টিম বানাচ্ছে বিএনপি

আর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার জানান, যারা জনপ্রতিনিধি বা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে চান তারা নিজ বলয়ে কমিটি করতে চান। তবে, নেতা হতে হলে জনসম্পৃক্ততা এবং কর্মীদের সমর্থন থাকতে হয়।

দাবি আদায়ের সক্ষমতা অর্জনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে অনিয়ম, অসন্তোষ দূর করার চেষ্টা চলছে বলে জানান আরেক নেতা। 

আরও পড়ুন: জোটগত রাজনীতিতে নতুনত্ব নিয়ে আসছে বিএনপি 

বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু জানান, নানা কারণে গেল ১০ থেকে ১৫ বছরে কাউন্সিল করা যায়নি। তবে, কেন্দ্রীয় নেতারা চেষ্টা করছেন সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য।

অন্যদিকে নানা কারণে আওয়মী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ বিরোধ। উপজেলা পর্যায়ে মূলত নানা প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি, নানা উন্নয়নমূলক কাজকে কেন্দ্র করেই আওয়ামী লীগে বিভক্তি। স্থানীয় পর্যায়ে অধিপত্য ধরে রাখতেও জেলা এবং কেন্দ্রীয় নেতারা এই গ্রুপিং-এ জড়িয়ে পড়ছেন। অনেকে আবার বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নেতার লোক পরিচয়ে প্রভাব সৃষ্টি করছে। বাইরে থেকেও দলে লোক ঢুকেছে। তারাও আলাদা গ্রুপ। তবে সুযোগ সন্ধানী নয় বরং আদর্শ কর্মী তৈরির ওপর জোর দেওয়ার কথা বলছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পরীক্ষিত কর্মী এবং মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী পরিবারের বাইরে কাউকে তৃণমূলে দলীয় পদ দেওয়া হবে না-এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে দলটি।

আরও পড়ুন: সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তারেক রহমানের হাতে
 
এ সব বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলকে চাঙা করতে মাঠে নেমেছে দলের শীর্ষ নেতারা। যদিও নানা কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব ও ভুল বোঝাবুঝি আছে। এই দ্বন্দ্বের কারণ অনুসন্ধানে প্রত্যেক বিভাগে কমিটি কাজ করছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষিত কর্মী ও আদর্শ কর্মীরাই দলীয় পদ পাবেন।

আরও পড়ুন: একটি কৌশলে মিল দু’দলে

অন্য দল থেকে আসা বহিরাগতদের নানা অপকর্মে দুর্নাম হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের-এমন মত নেতাদের। বলছেন, আগামীতে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী পরিবারের বাইরে কাউকে দেওয়া হবে না দলীয় পদ। শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসছে। 

আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে কাজ শুরু করেছে আ.লীগ

দলটির সভাপতিমণ্ডলীর  সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান জানান, তরুণ প্রজন্মের যারা রাজনীতিতে আসতে চায় তাদের জন্য সুযোগ থাকবে। তবে, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে দলের ক্ষতি করছে।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!