• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
মাসে আয় ৮-১০ হাজার টাকা

বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদনে চমকে দিলেন জেসমিন


মো. আবু জাফর সিদ্দিকী নভেম্বর ৯, ২০২১, ০৫:০৮ পিএম
বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদনে চমকে দিলেন জেসমিন

নিজ খামারে উদ্যোক্তা জেসমিন আক্তার

নাটোর : ছোটবেলা থেকেই জেসমিন আক্তারের স্বপ্ন ছিল উদ্যোক্তা হওয়ার। একটা কিছু করে সবাইকে চমক লাগিয়ে দিবেন। কিন্তু কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এরই মধ্যে বিয়ে হয় ওসমান গণি নামের এক স্কুল শিক্ষকের সাথে। শুরু হয় সংসার জীবনের ব্যস্ততা। দুই মেয়ে, স্বামী ও সংসার জীবনের ব্যস্ততায় কেটে যায় ২৫ বছর। আবারও ভাবতে শুরু করে উদ্যোক্তা হওয়ার। কলেজ পড়–য়া বড় মেয়ে ফারজানার সাথে দেখতে থাকেন ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের ভিডিও। ইউটিউব দেখেই ঠিক করেন কেঁচো সার উৎপাদনের উদ্যোক্তা হবেন তিনি। গ্রামের মানুষ কে কি বলবেন এসব না ভেবে স্বামী ওছমান গণির সাথে পরার্মশ করে শুরু করেন কেঁচো খামার। ঝিনাইদহ থেকে ৪ কেজি কেঁচো সংগ্রহ করে ৮ থেকে ১০টি মাটির চাড়িতে গোবর মিশ্রিত করে ছেড়ে দেন কেঁচোগুলো।

জেসমিনের কথা জানতে পেরে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা আসেন তাঁর বাড়িতে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ৮ স্ল্যাব বিশিষ্ট আরও একটি কেঁচো খামার করে দেন তাঁরা। মাত্র এক বছরের মাথায় সফল উদ্যোক্তা হিসেবে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন জেসমিন। স্থানীয় কৃষকরা কেঁচো বা ভার্মি কম্পোষ্ট সার কিনতে আসেন তাঁর বাড়িতে। ছোট খামার থেকেই তিনি এখন প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করছেন। খামারটি বড় হলে আয় অনেক বাড়বে এমনটাই স্বপ্ন জেসমিনের।

কেঁচো খামারী এই জেসমিনের বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার চামারী ইউনিয়নের মহিষমারীর চক বলরামপুরের সোনার মোড় গ্রামে। জেসমিনের দেখে ওই গ্রামের আফরোজা, সালমা, আরিফাসহ আরও ৪ নারী শুরু করেছেন কেঁচো খামার। তারা সবাই জেসমিনের পরামর্শ নিয়ে কেঁচো খামারে কাজ করছেন। জেসমিনের মত নতুন ওই চার নারী উদ্যোক্তাদের চোখেও সফলতার স্বপ্ন।

নিজ খামারে উদ্যোক্তা জেসমিন আক্তার

কেঁচো খামারী জেসমিন আক্তার সোনালীনিউজকে জানান, আমার খামার থেকে কৃষকরা ভার্মি কম্পোষ্ট সার কিনছেন ২০ টাকা কেজি দরে। খামার ছোট হওয়ায় কৃষকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। সরকারী বা বেসরকারীভাবে সহজ কিস্তিতে ঋণ পেলে খামারটি বড় করার স্বপ্ন তার।

জেসমিনের ভার্মি কম্পোষ্ট সারে সুফল পাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। তাঁরা জানান, বাজারের রাসায়নিক সারের চেয়ে এই সারের দাম একদিকে যেমন কম অন্যদিকে বেশি সুফল পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া ভার্মি কম্পোষ্ট সার ব্যবহারে অনেক রোগ বালাইও কমে যাচ্ছে। এসব কারণেই দিন দিন ভার্মি কম্পোষ্ট সারে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সেলিম রেজা সোনালীনিউজকে বলেন, কেঁচো বা ভার্মি কম্পোষ্ট সারের উদ্যোক্তা জেসমিনের কথা জানতে পেরে আমরা তাঁর বাড়িতে যাই এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় একটি খামার স্থাপন করে দেই। দেশের অনেক জায়গাতেই বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো বা ভার্মি কম্পোষ্ট সার উৎপাদন শুরু হয়েছে তবে বাণিজ্যিকভাবে সিংড়াতে জেসমিন আক্তারই প্রথম উদ্যোক্তা। যে কেউ এই উদ্যোগ নিলে আমাদের সঠিক পরার্মশ এবং সহযোগিতা থাকবে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!