• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকারি চাকরিজীবীর ভিন্ন রকম এক উদ্যোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৯, ২০২২, ০৭:৫৯ পিএম
সরকারি চাকরিজীবীর ভিন্ন রকম এক উদ্যোগ

ঢাকা: বেতন বৈষম্য নিরসন, ৫০শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদানসহ বেশকিছু দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন-সংগ্রামের সামনের কাতারের মানুষ তিনি। সাংগঠনিক কর্মকান্ডসহ ব্যক্তিগতভাবেও সরকারি কর্মচারীদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা তার সবসময়।এবার সেই মানুষটি একটি ভিন্ন রকম উদ্যোগ নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছেন। 

বলছি ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত একজন সরকারি চাকরিজীবীর কথা। নাম জিয়াউল হক। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি। 

গত ১৭ জানুয়ারি নিজের ফেসবুকে একটি উদ্যোগের কথা জানিয়ে পোস্ট করেন তিনি। 

সেখানে লিখেছেন- আপনার জমিতে চাষাবাদ আমরা করব।খরচ আপনি দিবেন ফসলও শতভাগ আপনি নিবেন।
জমি যার, ফসল তার, খরচও তার।চাষাবাদ করব আমরা।

আমার নিজ এলাকায় নওপাড়া, গণ্ডখোলা, আখরাইল, নগরচরা, হরিরামপুর, মাগুরজোড়া ও চাউলাদ গ্রামে ভিন্ন ভিন্ন খণ্ডে ২ হাজার একর কৃষি জমি প্রয়োজন।

উক্ত জমিতে ধান ও গম চাষ করা হবে। জমির মালিক ধান ও গম চাষের খরচ বহন করবেন। শতভাগ ফসল জমির মালিক পাবেন। আমরা উক্ত জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করব। এ জন্য অতিরিক্ত কোন খরচ নেব না।

বোঝাই যাচ্ছে ব্যক্তি পর্যায়ে বেশ বড় কোনো উদ্যোগ।তবে স্পষ্ট নয়।কথা হলো জিয়াউল হকের সঙ্গে। শোনালেন এক বিশাল স্বপ্নের কথা। যে স্বপ্নটা মূলত এদেশের সকল কৃষকই দেখেন। সেটাকে একটু পরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে-গুছিয়ে বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে চান তিনি। 

জিয়াউল হক একজন সরকারি চাকরিজীবী এবং কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি হলেও এই উদ্যোগটি একান্তই তার ব্যক্তিগত এবং সেবামূলক। 

তিনি বলেন, চুক্তির মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে জমিগুলো নেওয়া হবে এবং সেখানে সম্পূর্ণ আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করা হবে। এর ফলে একদিকে কৃষিকাজের খরচ কমবে অন্যদিকে উৎপাদন বাড়বে। একইসঙ্গে যাদের কাছ থেকে জমিগুলো নেওয়া হবে তারা শুধু চাষাবাদের খরচ দিবেন, কোনো শ্রম দিতে হবে না।বিনিময়ে ফসলের সবটুকুই তারা পাবেন। 

জমির মালিক যদি চাষাবাদের খরচ দেন তাহলে আপনাকে কেন জমি দেবে, এমন প্রশ্নে জিয়াউল হক বলেন, একজন  কৃষক যদি নিজের জমিতে চাষাবাদ করেন, সেখানে চাষাবাদের সব খরচ তো তারই বহন করতে হয়, সেইসঙ্গে তাকে শ্রমও দিতে হয়। কিন্তু সেই জমিতে চাষাবাদের দায়িত্ব যদি আমাকে দেন, তাহলে কেবল চাষাবাদের খরচ দিলেই হবে। বাড়তি কোনো শ্রম তাকে দিতে হবে না। সেই সময়টা তিনি অন্যকাজে লাগিয়ে সেখান থেকে বাড়তি আয় করতে পারবেন।  

সব ফসল জমির মালিক পেলে আপনার লাভ কী, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে লাভের বিষয়টি মূখ্য নয়।কাজটা সেবামূলক।এর ফলে একদিকে যেমন দেশের কৃষি ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত হবে অন্যদিকে শ্রম বিহীন উৎপাদনে লাভবান হবেন কৃষকরা।তবে বিশাল এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে লোকসান হবে না বলেও জানালেন তিনি। 

বলেন, বিশাল পরিমান জমিতে ফসল বোনা থেকে শুরু করে ঘরে তোলো পর্যন্ত সকল খরচের বিষয়টি একটা অবস্থান থেকে ব্যয় হবে। যেমন ধরুন-একজন কৃষক তার এক বিঘা জমিতে হাল চাষের জন্য ট্রাক্টর ভাড়া করলেন ২০০ টাকায়। ট্রাক্টর মালিক সেখান থেকে ৫০ টাকা লাভ করলো।অথবা ধরুন একজন কৃষক ১০ কেজি সার কিনলেন জমিতে প্রয়োগের জন্য।সেখান থেকে সার ব্যবসায়ী ৫০ টাকা লাভ করবে। 

এখানে জমি যার, ফসল তার, খরচও তার কার্যক্রমের লাভটা হবে ওই ট্রাক্টর মালিক এবং সার দোকানির মতো। পাশাপাশি এখানে কৃষি শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।লাভের অংশটা পারিশ্রমিক হিসেবে তাদের মধ্যে বন্টন হবে।  

আপনাকে জমি দিলে ফসল উৎপাদন ভালো হবে এর নিশ্চিয়তা কী? জিয়াউল বললেন, এজন্য জামির মালিকগণ চাইলে প্রয়োজনীয় তদারকি করতে পারবেন।বিশেষ করে অভিজ্ঞ কৃষকদের পরামর্শ নেওয়া হবে। এছাড়া বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি বিশেষজ্ঞদের এ কাজে সম্পৃক্ত করা হবে। 
  
সর্বপরি শিগগিরই বিশাল এই স্বপ্নপূরণের কার্যক্রম শুরু করবেন জানিয়ে সকলের সহযোগীতা এবং দোয়া চাইলেন জিয়াউল হক। 

জিয়াউল হকের ফেসবুক পোস্ট।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!